ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার, উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যাগ ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি জানিয়েছেন ঢাবি শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। এই দাবিতে তাঁরা ঢাবি উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে ‘অবস্থান কর্মসূচি’ পালন করেছেন।

আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বর থেকে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তাঁরা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। বেলা আড়াইটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কর্মসূচি চলছিল।

শাহরিয়ার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। আজকের কর্মসূচিতে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন।

কর্মসূচিতে গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ১৩ দিন হয়ে গেল, শাহরিয়ার হত্যার ঘটনার কোনো সুরাহা হলো না। গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা ছিলেন শাহরিয়ার। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত ঢাবির এই প্রশাসন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এ প্রশাসনের নয় মাসে ক্যাম্পাসে তোফাজ্জল হত্যা, ফ্যাসিস্টের মোটিফ পোড়ানো, গাছে লাশ ঝোলাসহ অনেক ঘটনা দেখেছেন তাঁরা। কিন্তু অপরাধীদের ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে পারেনি প্রশাসন। তাঁরা এই প্রশাসনের পদত্যাগের পাশাপাশি যাঁরা শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ড নিয়ে ভিন্ন ন্যারেটিভ দাঁড় করাচ্ছেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।

আরও পড়ুনশাহরিয়ার হত্যার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা৩ ঘণ্টা আগে

উপাচার্য ও প্রক্টরের অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করেন ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন। তিনি বলেন, শাহরিয়ার হত্যার বিচার না হওয়া শুধু একজন ছাত্রনেতার প্রতি অবিচার নয়, বরং পুরো ছাত্রসমাজের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। প্রতিনিয়ত ছিনতাই, ছুরিকাঘাত ও হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটছে। কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার। তাঁরা নিরাপদ ক্যাম্পাস চান।

১৩ মে দিবাগত রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন শাহরিয়ার। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ছিলেন।

আরও পড়ুনঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের বিক্ষোভ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা–উপাচার্য–প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি১৪ মে ২০২৫আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হত্যায় তিনজন গ্রেপ্তার: পুলিশ১৪ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র উপ চ র য পদত য গ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ