পদ, কমিটির পর এবার প্রকাশ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব
Published: 26th, May 2025 GMT
তাহিরপুরে ইউনিয়ন বিএনপির কর্মিসভায় দুই নেতাকে ঘিরে স্থানীয় বিএনপির দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। এর আগে কমিটি, পদ ও নানা ক্ষেত্রে ভাগাভাগিতে অন্তঃকোন্দলে জড়াতে শুরু করেন দলটির নেতাকর্মীরা।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এরই মধ্যে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপি নেতাদের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এর মাঝে সুনামগঞ্জে প্রথম এই ইস্যুতে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এলো দুই নেতা আনিসুল হক ও সালমা নজিরকে ঘিরে।
শনিবার তাহিরপুর বিএনপি আয়োজিত ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মিসভার প্রথম দিনের কর্মসূচি ছিল উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নে। সেখানেই আনিসুল-সালমার মনোনয়নকেন্দ্রিক শীতল দ্বন্দ্বের প্রকাশ ঘটে ভরা মঞ্চে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের ধারাবাহিক কর্মিসভা তাৎক্ষণিক স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
শনিবারের কর্মিসভায় প্রধান বক্তা কামরুজ্জামান কামরুল অনুপস্থিত থাকায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আনিসুল হক। বিশেষ অতিথিদের মাঝে ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য নজির হোসেনের সহধর্মিণী সালমা নজির।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে আনিসুল হক বিএনপির দুঃসময়ের রাজনীতির স্মৃতিচারণ করেন। এ সময় তিনি ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপটে দলটির প্রয়াত নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য নজির হোসেনকে ইঙ্গিত করে তাঁর সে সময়ের ভূমিকার সমালোচনা করেন।
আনিসুলের বক্তব্যের সময় উপস্থিত নেতাকর্মীর মধ্য থেকে বক্তব্যের পক্ষে-বিপক্ষে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় নজির হোসেনের স্ত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামী তাহিরপুরসহ সুনামগঞ্জ-১ আসনের মানুষের জন্য নিবেদিত ছিলেন। এখানকার বিএনপি তাঁর গড়া সংগঠন। তিনি কল্পনাও করেননি এই অঞ্চলের কেউ প্রয়াত সেই নেতাকে নিয়ে এমন মিথ্যাচার করবেন।
রোববার বিকেলে আনিসুল হক তাঁর ফেসবুক আইডিতে লিখেন– ‘শনিবার বালিজুরী ইউনিয়ন বিএনপির সভায় অসাবধানতাবশত অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু কথা বলেছেন; যা শোভন নয়। তিনি বক্তব্য প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘আমি বুঝেছি অপ্রিয় সত্যও অনেক সময় বলা যায় না। বিএনপির সব নেতাকর্মীকে নিয়ে আগামী দিনে একসঙ্গে রাজনীতি করতে চাই। এজন্য এ প্রসঙ্গ এখানেই শেষ হোক।’
এদিকে সালমা নজির এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আনিসুলও একসময় আমার স্বামী নজির হোসেনের শুভানুধ্যায়ী ছিলেন। তাদের সহযোগিতায় নজির হোসেন এই নির্বাচনী এলাকায় বিএনপিকে শক্তিশালী করেছেন। নজির হোসেনের জনপ্রিয়তা ছিল এই আসনে আকাশচুম্বী। আনিসুল এভাবে কথা বলবেন কল্পনা করিনি।
অপর প্রভাবশালী নেতা কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, ‘শুনেছি আনিসুল হক ‘ওয়ান ইলেভেন’ কালের রাজনৈতিক প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন। ওই সময় প্রয়াত নজির হোসেনের কর্মী-সমর্থক ক্ষুব্ধ হন। শেষে তাৎক্ষণিক বৈঠক করে ইউনিয়ন পর্যায়ের সভাগুলো স্থগিত ঘোষণা করা হয়। আমাদের সবারই নেতা ছিলেন প্রয়াত নজির হোসেন।
এর আগে গত বছর নভেম্বর মাসে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের সময়ও স্থানীয় নেতা ও তাদের অনুসারীদের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি হয়। শুধু রাজনৈতিক ইস্যু নয়, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জেরেও দলীয় নেতাকর্মীর পরস্পরের বিরুদ্ধে সহিংস হওয়ার নজির রয়েছে জেলায়। চলতি বছরের মার্চ মাসে মধ্যনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ দ বন দ ব ন ত কর ম ব এনপ র র কর ম র জন ত প রক শ পর য য়
এছাড়াও পড়ুন:
হাদিকে গুলির ঘটনায় কে এই ফয়সাল করিম
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গতকাল পুরানা পল্টনে গুলি করা হয়েছে। প্রথম আলো খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে, ফয়সাল করিম নামের এই ব্যক্তি কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের (এখন নিষিদ্ধ) রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হয়েছিলেন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।