বৃহস্পতি গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পুরো সৌরজগতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে বৃহস্পতি গ্রহ তার প্রাথমিক অবস্থায় ছিল। সে সময় বর্তমানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বড় ছিল বৃহস্পতি গ্রহ। শুধু আকারেই বড় নয়, বৃহস্পতি গ্রহের চৌম্বক ক্ষেত্রও ছিল খুব শক্তিশালী। ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ সাময়িকীতে নতুন এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালটেকের গ্রহবিজ্ঞানের অধ্যাপক কনস্টান্টিন ব্যাটিগিন ও মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ ফ্রেড সি অ্যাডামস বৃহস্পতি গ্রহের প্রাথমিক অবস্থার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছেন। তাঁদের তথ্যমতে, সৌরজগতের প্রথম কঠিন পদার্থ তৈরির প্রায় ৩৮০ কোটি বছর পর বৃহস্পতি গ্রহের আকার বড় হতে থাকে। সে সময় সূর্যের চারপাশে পদার্থের ডিস্ক প্রোটোপ্ল্যানেটারি নীহারিকা ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হচ্ছিল। সেই সময় বৃহস্পতি গ্রহের চৌম্বক ক্ষেত্র ছিল খুবই শক্তিশালী।

আরও পড়ুনসৌরজগতের কোন গ্রহ কীভাবে ঘুরছে২৩ মে ২০২৫

বিজ্ঞানী ব্যাটিগিন বলেন, ‘আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য আমরা কোথা থেকে এসেছি, তা জানা। বিভিন্ন ধাঁধা সমাধানের জন্য বিভিন্ন গ্রহ গঠনের প্রাথমিক পর্যায় নির্ধারণ করা অপরিহার্য।’ নতুন তথ্য শুধু বৃহস্পতি গ্রহ নয়, সমগ্র সৌরজগৎ শুরুতে কেমন ছিল, সে সম্পর্কেও জানতে সহায়তা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুনঅন্য সব গ্রহে নতুন বছরের হিসাব কেমন৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

বৃহস্পতি গ্রহের চাঁদ আমালথিয়া ও থিব পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই দুটি চাঁদ গ্রহের চারটি বৃহৎ গ্যালিলিয়ান উপগ্রহের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ও নিকটতম। আমালথিয়া ও থিবের কক্ষপথ সামান্য হেলে থাকায় আরেক চাঁদ আইওর চেয়েও বৃহস্পতি গ্রহকে কাছ থেকে প্রদক্ষিণ করছে।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ রহ র চ

এছাড়াও পড়ুন:

সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি

বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে ১০ গুণ বড় ‘ওয়াস্প-১৮ বি’ নামের দৈত্যকার একটি দূরবর্তী গ্যাসীয় গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে এবারই প্রথম সৌরজগতের বাইরে থাকা কোনো গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এই যুগান্তকারী মানচিত্র গ্রহ বিজ্ঞানের একটি বড় পদক্ষেপ। সূর্যের বাইরের অন্য কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র এর আগে তৈরি করা হয়নি। মানচিত্র তৈরির এ কৌশল ব্যবহার করে মহাবিশ্বে আবিষ্কৃত ছয় হাজারের বেশি বহির্গ্রহকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।

বহির্গ্রহ নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ অনেক দিনের। সৌরজগতের বাইরের নানা ধরনের গ্রহ দেখা যায়। কিছু গ্রহ আছে যাদের দুষ্টু গ্রহ বলা হয়। এসব গ্রহ কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে না। মহাবিশ্বে অনেকটা স্বাধীনভাবে বা বন্ধনহীনভাবে ভেসে বেড়ায়। নাসার এক্সোপ্ল্যানেট সায়েন্স ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ২৮টি বহির্গ্রহ শনাক্ত করা হয়েছে। আরও প্রায় আট হাজার বহির্গ্রহ গ্রহের মর্যাদার পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, থ্রিডি ইক্লিপস ম্যাপিং কৌশল ব্যবহার করে ত্রিমাত্রিক মানচিত্রটি তৈরি করেছেন। এই প্রক্রিয়া স্পেকট্রোস্কোপিক ইক্লিপস ম্যাপিং নামেও পরিচিত। এর আগে বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে বহির্গ্রহের টুডি বা দ্বিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছিলেন। বিভিন্ন বহির্গ্রহ পৃথিবী থেকে পর্যবেক্ষণ করা বিজ্ঞানীদের জন্য কঠিন বলে নতুন ত্রিমাত্রিক মানচিত্র বেশ উপকারী হবে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে আবিষ্কৃত ওয়াস্প-১৮ বি গ্রহের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের উপস্থিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী রায়ান চ্যালেঞ্জার বলেন, ‘টেলিস্কোপ ও এই নতুন কৌশলটির মাধ্যমে আমরা আমাদের সৌরজগতের প্রতিবেশীদের মতোই বহির্গ্রহকে বোঝার সুযোগ পাব।’

সূত্র: স্পেস ডট কম

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি