কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে আরও ২৩ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
Published: 27th, May 2025 GMT
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট, বাবুরহাট ও কেদার সীমান্ত দিয়ে আরও ২৩ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার তিনটি সীমান্ত এলাকা দিয়ে ওই ২৩ জনকে বাংলাদেশের ভেতরে পাঠানো হয়। পরে বিজিবি সদস্যরা তাঁদের আটক করে।
আটক ব্যক্তিরা কোন দেশের নাগরিক, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁদের কেদার, সোনাহাট ও বাবুরহাট ক্যাম্পের হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম ২২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল মাহাবুব উল হক।
এর আগে আজ ভোর সাড়ে চারটায় জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বড়াইবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ১৪ জনকে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করে বিএসএফ। তবে এতে বাধা দেয় বিজিবি। ওই ১৪ জন সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় অবস্থান করছেন।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ ভোর পাঁচটার দিকে বিএসএফ ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিনটি সীমান্ত এলাকা দিয়ে ২৩ জন নারী-পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। তাঁদের মধ্যে সোনাহাট সীমান্ত থেকে ৬ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী, বাবুরহাট সীমান্ত দিয়ে ৬ জন পুরুষ ও ২ জন নারী এবং কচাকাটা থানার কেদার সীমান্ত দিয়ে ৪ জন পুরুষ ও ২ জন নারীকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুনকুড়িগ্রাম সীমান্তে ১৪ জনকে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা বিএসএফের, বিজিবির বাধা৪ ঘণ্টা আগেলেফটেনেন্ট কর্নেল মাহাবুব উল হক বলেন, ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিনটি সীমান্ত এলাকা দিয়ে ২৩ জনকে পুশইন করার ঘটনা ঘটেছে। বিজিবি সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁদের আটক করেছে। আটক ব্যক্তিরা কোন দেশের নাগরিক তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনকুড়িগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের ঠেলে পাঠানো ১২ জনকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর২৫ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ম ন ত এল ক উপজ ল র ব এসএফ ২৩ জনক জন ন র ২৩ জন
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে আটক ১৯ জেলে ৯৭ দিন পর বাড়ি ফিরলেন
ভোলার সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ১৯ জেলে ৯৭ দিন ভারতে আটক থাকার পর দেশে ফিরেছেন। গত বুধবার রাতে তাঁরা নিজ নিজ বাড়ি ফিরেছেন।
দেশে ফেরত জেলেরা বলছেন, সাগরে মাছ ধরা শেষে ফেরার পথে ঝড়ে দিগ্ভ্রান্ত হয়ে তাঁদের বহনকারী ট্রলার ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে যায়। পরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাঁদের আটক করে।
দেশে ফেরা জেলেরা হলেন সফিজল ব্যাপারী (মাঝি), শাহে আলম, ছিডু মুন্সি, রাজীব চন্দ্র দাস, আক্তার হোসেন, মিন্টু হাওলাদার, মো. ফরিদ, মো. আলমগীর, মোহাম্মদ ফরিদ, মো. ইউনুছ, মো. বাবুল সরদার, মো. নিরব হোসেন, মো. ইসমাইল, মো. শাহ আলম হাওলাদার, গৌতম চন্দ্র দাস, জাকির হোসেন, সগির সিকদার, মো. টুটুল ও শহীদুল ইসলাম। তাঁরা সবাই ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
জেলে ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, ৫ সেপ্টেম্বর শান্তির হাট ঘাট এলাকা থেকে একটি মাছ ধরার নৌকা নিয়ে বঙ্গোপসাগরে যান ওই জেলেরা। মাছ ধরা শেষে ফেরার পথে ঝড়ে দিক হারিয়ে তাঁরা ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশ করেন। বিএসএফ তাঁদের আটক করে সুন্দরবনের কোস্টাল থানায় হস্তান্তর করে। সেখান থেকে তাঁদের আলীপুর সদর ও পরে বারাইপুর জেলে পাঠানো হয়। দুই দেশের সরকারের সিদ্ধান্তে বন্দিবিনিময়ের অংশ হিসেবে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মেরিটাইম বাউন্ডারিতে হস্তান্তরের পর পশ্চিমাঞ্চলীয় কোস্টগার্ডের সহায়তায় বুধবার সন্ধ্যায় মোংলা বন্দরে পৌঁছান তাঁরা। পরে দিবাগত রাত দুইটার দিকে নিজ নিজ বাড়িতে ফেরেন।
জেলেরা ফিরলেও মাছ ধরার নৌকাটি ফেরত দেওয়া হয়নি দাবি করেন সফিজল মাঝির ছেলে হোসাইন স্বাধীন। তিনি বলেন, ‘৩০ লাখ টাকা মূল্যের ফিশিং বোটটি ফেরত পাইনি। নৌকাটি না পেলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব।’
আরও পড়ুনবঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ট্রলার বিকল, ভোলার ১৯ জেলে ভারতের কারাগারে২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫জেলে মো. শাহে আলম বলেন, সাগর থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ পাওয়া গিয়েছিল। ভারতীয় প্রশাসন মাছসহ ফিশিং বোট নিয়ে গেছে।
ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ওই জেলেদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছেন বলে দাবি করেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী ও জেলে সমিতির ভোলা সদর উপজেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মামুন শেখ। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে যেন আর কোনো জেলেকে এভাবে নির্যাতন না করা হয়, সেই অনুরোধ জানাই।’
আরও পড়ুনসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ১২ দিন ধরে ১৫ জেলে নিখোঁজ২২ নভেম্বর ২০২৫আল মামুন শেখ বলেন, জেলেরা আটক হওয়ার খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট পরিবারের কাছ থেকে সব কাগজপত্র সংগ্রহ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রশাসন, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এর ফলে দীর্ঘ ৯৭ দিন পর কোস্টগার্ডের সহায়তায় ওই জেলেরা দেশে ফিরেছেন।
কোস্টগার্ড সূত্রে জানা যায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে বন্দিবিনিময়ের সিদ্ধান্ত হলে বাংলাদেশ ৪৭ ভারতীয় জেলেকে ও ভারত ৩২ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত দেয়।
ভোলা সদর ইউএনও মো. আরিফুজ্জামান বলেন, সাধারণত এ ধরনের ঘটনায় জেলেদের ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ সময় লাগে। এ ক্ষেত্রে ৯৭ দিনের মাথায় তাঁরা ফিরেছেন। আটক থাকা অবস্থায় তাঁদের পরিবারগুলোকে খাদ্যসহায়তা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুনভোলায় সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ ১৩ জেলে ভারতের কারাগারে বন্দী০১ ডিসেম্বর ২০২৫