বিনা মূল্যে আইটি প্রশিক্ষণ, ২ লাখ টাকার কোর্স শেষে কর্মসংস্থান, আবেদন শুরু
Published: 28th, May 2025 GMT
ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-বাংলাদেশ ইসলামিক সলিডারিটি এডুকেশন ওয়াক্ফ (আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ) আইটি স্কলারশিপ প্রোগ্রামের ৬৮তম রাউন্ডে শিক্ষার্থী ভর্তিতে আবেদন চলছে।
এ প্রোগ্রামে নন-আইটি ব্যাকগ্রাউন্ডের স্নাতকধারীরা সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে সাড়ে আট মাসের আইটি প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন। চাকরির বাজারের সঙ্গে সামাঞ্জস্য রেখে আইএসডিবি-বিআইএসইডব্লিউ সব কোর্স পরিচালনা করে। এই প্রোগ্রামের আওতায় কোর্স সম্পন্নকারী ৯২ শতাংশ শিক্ষার্থী দেশে-বিদেশে সফলভাবে কর্মরত আছেন।
আইএসডিবি-বিআইএসইডব্লিউ বাংলাদেশ সরকার ও ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, জেদ্দা, সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত একটি প্রতিষ্ঠান। তথ্যপ্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষা খাতে বাংলাদেশের যুবসমাজের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে আইএসডিবি-আইএসইডব্লিউ নিজস্ব অর্থায়নে কর্মমুখী শিক্ষা ও বিভিন্ন প্রকল্প প্রণয়ন, অর্থায়ন এবং বাস্তবায়ন করে থাকে।
এ প্রোগ্রামের আওতায় ১৩টি কোর্সের ওপর স্কলারশিপ দেওয়া হয়। প্রোগ্রামটি ১৯ বছর ধরে চলছে। এ প্রোগ্রামের লক্ষ্য মেধাবী মুসলিম প্রার্থীদের আন্তর্জাতিক স্তরের পেশাদার আইটি প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। প্রোগ্রামটি এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার ২৭৬ জন আইটি প্রফেশনাল তৈরি করেছে, যাঁরা দেশ এবং বিদেশের ৩ হাজার ২৫৪টির বেশি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য—আইডিবির আইটি স্কলারশিপের সাড়ে আট মাসের এই প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তিতে মোট আসন আছে ১৬৫টি। চলমান রাউন্ডে আবেদনের শেষ তারিখের মধ্যে প্রার্থীর সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর হতে হবে। পূর্ববর্তী রাউন্ডের কোনো কোর্সে যোগদানকৃত প্রার্থী নতুন করে এ কোর্সে আবেদন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা ঢাকা ও চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে। এমসিকিউ পদ্ধতিতে গণিত ও ইংরেজি বিষয়ের ওপর পরীক্ষা নেওয়া হয়।
সুযোগ-সুবিধা-*সম্পূর্ণ বিনা ফিতে কোর্সটি করানো হয়;
*প্রায় দুই লাখ টাকা সমমূল্যের কোর্স;
*সফলভাবে কোর্স সম্পন্ন করার পর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা;
*আন্তর্জাতিক স্বীকৃত আইটি প্রফেশনাল হওয়ার সুযোগ।
আবেদনকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-
*প্রতি রাউন্ডে আসনসংখ্যা মোট ১৬৫;
*চলমান রাউন্ডে আবেদনের শেষ তারিখের মধ্যে প্রার্থীর সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর হতে হবে;
*পূর্ববর্তী রাউন্ডের কোনো কোর্সে যোগদানকৃত প্রার্থী নতুন করে আবেদন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না;
*ডিপ্লোমাধারী প্রার্থীদের জন্য সব কোর্স শুধু ঢাকায় করানো হয়।
এ প্রোগ্রামে নন-আইটি ব্যাকগ্রাউন্ডের স্নাতকধারীরা সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে সাড়ে আট মাসের আইটি প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন। কোর্স সম্পন্নকারী ৯২ শতাংশ শিক্ষার্থী দেশে-বিদেশে সফলভাবে কর্মরত।চীনের সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি, মিলবে বই কেনারও অর্থ, আইইএলটিসে ৭ হলে আবেদন৬০০ বৃত্তির সুযোগ গ্র্যাজুয়েট রিসার্চ স্কলারশিপে, জেনে নিন বিস্তারিতজাপানের স্টাডি সাপোর্ট স্কলারশিপ, ইংরেজি ও জাপানিজ দুই ভাষার দক্ষতা প্রয়োজনছবি: আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ–এর সৌজন্য.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশনের কাজ সফলভাবে শেষ হওয়ায় প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন
সাফল্যের সঙ্গে সব সক্রিয় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লাগাতার বৈঠকের মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি ও বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারণ করায় জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বাসস লিখেছে, বাংলাদেশে একটি স্থায়ী জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কারের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা শুরু হয় চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি, যার মেয়াদ শেষ হয় ৩১ অক্টোবর।
আরো পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচনি প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা
সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়া সম্ভব
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই জাতীয় সনদ আমাদের ঐতিহাসিক অর্জন। এই সনদ আমাদের জাতির এক মূল্যবান দলিল, যা আমাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনের পথকে কেবল সুগমই করবে না, জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ পথনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে এবং আমাদের গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে।”
প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, “জনগণ প্রত্যাশায় আছে জাতীয় জীবনে এমন কিছু পরিবর্তন দেখার জন্য, যা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাবে; এমন কিছু পরিবর্তন যা এদেশে আর কখনো কোনো স্বৈরাচারের আগমন ঘটতে দেবে না, এমন কিছু পরিবর্তন যা আমাদের জাতীয় জীবনে সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটাবে, সবার নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করবে।”
“সবচেয়ে আশার কথা হচ্ছে, আমরা নিজেরাই এই সংস্কার প্রক্রিয়াগুলো নিয়ে কাজ করেছি, একমত হয়েছি। বাইরের কেউ আমাদের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়নি,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
‘অতীতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে যে সমস্ত রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছে, তাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আমরা বিদেশিদের আসতে দেখেছি’ জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বন্ধু রাষ্ট্রসহ জাতিসংঘের প্রতিনিধিবৃন্দ বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে এক টেবিলে আনার চেষ্টা করেছেন। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে যে, আমাদের নিজেদের সংকট নিজেদেরই সমাধান করতে হবে।”
“এই কারণেই সকল রাজনৈতিক দল এক কাতারে এসেছে, রাজনৈতিক বিতর্কে অংশ নিয়েছে এবং আমাদেরকে সমাধানের পথ দেখিয়েছে। বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট সমাধানে আমন্ত্রণ জানানোর পরিবর্তে আমরা নিজেরাই বিশ্ববাসীর দরবারে আমাদের জাতীয় ঐক্যকে তুলে ধরেছি,” বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলকে এবং তাদের নেতৃবৃন্দকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “রাজনৈতিক দলের নেতারা যারা এই সনদ তৈরিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন তাদের সকলকে আমি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।”
এই জুলাই সনদ সারা বিশ্বের জন্যই একটি অনন্য দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “পৃথিবীর আর কোথাও এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে এক উজ্জ্বল ঘটনা হয়ে থাকবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশও সংকটকালীন সময়ে দেশগঠনের পদক্ষেপ হিসেবে ‘ঐকমত্য কমিশন’ গঠনের কথা বিবেচনা করবে।”
প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং বিশেষ সহকারী মনির হায়দারকে ধন্যবাদ জানান। এর পাশাপাশি গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ যারা মাসের পর মাস এই দীর্ঘ আলোচনার সঙ্গে থেকেছেন, ঐকমত্য কমিশনের সকল কার্যকলাপ মানুষের কাছে সহজ ভাষায় পৌঁছে দিয়েছেন, তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের সকলের মনে রাখতে হবে, যে অভূতপূর্ব ঐক্য আমাদের মাঝে রয়েছে রাষ্ট্র সংস্কারে এই জাতীয় ঐক্য আমাদের ধরে রাখতেই হবে। কারণ ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী এ জাতিকে বিভক্ত করতে সর্বশক্তি নিয়োজিত করেছে। গত ১৫ মাস আমরা তাদের নানা ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করেছি। ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করতে হলে, এই দেশকে বাঁচাতে হলে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই।”
‘দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ আছে’ বলে মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কোনো একক ব্যক্তি, একক সংগঠন, একক সংস্থা অথবা একক সরকার দিয়ে সম্ভব হবে না; এজন্য সকল রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মধ্যে একতা থাকতে হবে, যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন ঐক্য ধরে রাখতে হবে।”
ঢাকা/রাসেল