রোদ-বৃষ্টিতে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারীদের পাশে প্রশাসন
Published: 28th, May 2025 GMT
রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে দিনের পর দিন সড়কে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা করেন একদল স্বেচ্ছাসেবী। যারা পরিচিত কমিউনিটি ট্রাফিক সদস্য হিসেবে। তাদের এই নিরলস পরিশ্রমের স্বীকৃতিস্বরূপ ছাতা ও রেইনকোট উপহার দিলেন কালীগঞ্জ পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার কালীগঞ্জ-টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কের কাপাসিয়া রোড পয়েন্টে মঙ্গলবার (২৭ মে) আনুষ্ঠানিকভাবে এই উপহার সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ইউএনও তনিমা আফ্রাদ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.
কমিউনিটি ট্রাফিক সদস্যরা মূলত সড়কে যানজট নিরসনে সহায়তা করা, পথচারীদের নিরাপদ পারাপারে সহায়তা এবং সাধারণ মানুষকে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন করতে কাজ করেন। তাদের এই মানবিক দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতি দিতে এবং কাজের সুবিধার্থে এই ধরনের উপহার প্রকৃত অর্থেই সময়োপযোগী।
এই কার্যক্রম চলমান থাকবে এবং ভবিষ্যতে আরও উপকরণ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কমিউনিটি ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ।
ছাতা ও রেইনকোট পাওয়া কমিউনিটি ট্রাফিক সদস্যরা জানান, প্রশাসনের এই উদ্যোগ তাদের কাজের প্রতি উৎসাহ আরও বাড়িয়ে তুলবে।
কমিউনিটি ট্রাফিক সদস্য স্বেচ্ছাসেবক রাসেল বলেন, “অনেক সময় বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো, ছাতা বা রেইনকোট না থাকায় কষ্ট হতো। আজকে এই উপহার আমাদের দায়িত্ব পালনকে অনেকটা সহজ করবে। আমরা কৃতজ্ঞ।”
ওসি মো. আলাউদ্দিন বলেন, “কমিউনিটি ট্রাফিক সদস্যরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী। জনকল্যাণে তাদের ভূমিকা অপরিসীম। এই আয়োজন তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার ছোট্ট প্রকাশ।”
কমিউনিটি ট্রাফিক সদস্যদের উদ্দেশে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, “যারা রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রতিদিন আমাদের নাগরিকদের যানজট নিরসনে সাহায্য করছেন, তারা সত্যিই সমাজের নীরব যোদ্ধা। তাদের এই মানবিক ও সাহসী ভূমিকাকে সম্মান জানাতে এই ছোট উদ্যোগ। ভবিষ্যতেও তাদের পাশে থাকার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”
ঢাকা/রফিক/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট র ফ ক সদস য আম দ র উপহ র
এছাড়াও পড়ুন:
‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি
ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।
শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।
ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।
কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলাশিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।
শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’
শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী