জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকার করছে না অন্তর্বর্তী সরকার। অথচ যে দলটি নিবন্ধন পায়নি, তারা সর্বক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাচ্ছে। সরকার নিজস্ব দল তৈরি করে নির্বাচন দিলে এতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে না। নব্বইয়ের পর আমরা বারবার বলেছি এ কথা। এ সরকার নির্বাচন দিতে পারবে না, তাদের ইচ্ছা নেই, ক্ষমতাও নেই। 

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রংপুর নগরীর সেনপাড়াস্থ স্কাই ভিউ বাসভবনে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, বর্তমান সরকার পৃথকীকরণ নীতি পালন করছে। দেশের বৃহৎ অংশকে তারা সমস্ত রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে কোণঠাসা করছে। এজন্য কালাকানুন ও আলাদা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সরকার। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জাতীয় পার্টি সব আন্দোলনে জনগণের পক্ষে ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সময় জাতীয় পার্টি জনগণের পক্ষে ছিল, এই হত্যাকাণ্ড আমার ভাগনে মারা গেছে। শাপলা চত্বরের আন্দোলনে আমরা সরাসরি হেফাজতকে সমর্থন দিয়েছিলাম। হেফাজতের মানুষকে পানি খাইয়েছি। চব্বিশের ছাত্র আন্দোলনেও আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা ছিল।

বিগত নির্বাচন সম্পর্কে জি এম কাদের বলেন, আমরা কোনো প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে যেতে চাইনি। কিন্তু সেসব নির্বাচনে আমাদের যেতে বাধ্য করা হয়েছে। বর্তমানে আমাদের মিছিল-মিটিং করতে দেওয়া হচ্ছে না। বাঁধার কারণে আমরা কাউন্সিল করতে পারছি না। আমাদের নেতাকর্মীদের বিনা কারণে জেলে নিচ্ছে। বিনা বিচার ও চার্জশিটে নেতাকর্মীরা মাসের পর মাস জেল খাটছে।  

তিনি আরও বলেন, সরকার সত্যিকার অর্থে সঠিক অবস্থান নিতে ব্যর্থ হলে দেশের জনগণকে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমার আহ্বান, যারা দেশে নিগৃহীত, অত্যাচারিত, আইনকে অন্যায়ভাবে যাদের ওপর ব্যবহার করা হচ্ছে, সেইসব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দেশে বেকার সমস্যা বাড়ছে, দারিদ্র্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত প্রায় ৯ মাসে দেশের অবস্থা আরও খারাপের দিকে গেছে। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারছে না। আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে সাধারণ মানুষ চলাফেরা করতে পারছে না। এমন চলতে থাকলে দেশে কেউ বিনিয়োগ করতে আসবে না। এ সময় জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইয়াসির, আজমল হোসেন লেবু, জেলা যুবসংহতির সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিমসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ এম ক দ র এম ক দ র আম দ র সরক র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান

জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, “দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী কিংবা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে।”

আরো পড়ুন:

বরগুনায় জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মামুন 

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির 

রবিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।

প্রতিটি নির্বাচনী আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “দেশের প্রতিটি সংসদীয় আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও প্রতিটি মানুষকে নিশ্চয়ই মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব নয়। ভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে রাজপথের সঙ্গী ছিলেন, এমন প্রার্থীকেও বিএনপি সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

এই বাস্তবতার কারণে হয়তো কিছু সংসদীয় সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থকদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আপনারা এই বাস্তবতাকে মেনে নেবেন।”

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, “দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।”

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, “পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।”

বিএনপির বিজয় ঠেকাতে অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।”

শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।”

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান জানান, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তার দল।

তারেক রহমান বলেন, “দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।”

দেশে নারীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সামাজিক উদাসীনতা প্রকট হয়ে উঠছে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ সংক্রান্ত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেন, “নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপত্তাহীন সমাজ নিশ্চয়ই সভ্য সমাজ হিসেবে গণ্য হতে পারে না।”

সেজন্য তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দলসহ বাংলাদেশের সচেতন নারী সমাজকে তাদের দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে অনলাইনে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ এবং তার ফি পরিশোধের প্রক্রিয়া নিয়ে একটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। তাতে বলা হয়, এখন থেকে বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে অনলাইনে বিএনপির দলীয় ওয়েবসাইটে গিয়ে সদস্যপদ গ্রহণ করা যাবে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এ জে ড এম জাহিদ হাসান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর হোসেন প্রমুখ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
  • ভুল শুধরে জনগণের আস্থা ফেরানোর সুযোগ এই নির্বাচন: আইজিপি
  • ৩০০ আসনে প্রার্থী বাছাই প্রায় চূড়ান্ত: তারেক রহমান
  • ইরান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো আরো শক্তিশালী করে পুনর্নির্মাণ করবে
  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
  • বিএনপি ও জামায়াত কে কোন ফ্যাক্টরে এগিয়ে
  • অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল
  • সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনগণ মাঠে নামবে: তাহের
  • সংস্কার ইস্যুতে সব দল ঐক্যবদ্ধ থাকলেও বিএনপি অবস্থান পরিবর্তন করে