সরকার নির্বাচন দিতে পারবে না, ইচ্ছা নেই: জি এম কাদের
Published: 29th, May 2025 GMT
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকার করছে না অন্তর্বর্তী সরকার। অথচ যে দলটি নিবন্ধন পায়নি, তারা সর্বক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাচ্ছে। সরকার নিজস্ব দল তৈরি করে নির্বাচন দিলে এতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে না। নব্বইয়ের পর আমরা বারবার বলেছি এ কথা। এ সরকার নির্বাচন দিতে পারবে না, তাদের ইচ্ছা নেই, ক্ষমতাও নেই।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রংপুর নগরীর সেনপাড়াস্থ স্কাই ভিউ বাসভবনে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, বর্তমান সরকার পৃথকীকরণ নীতি পালন করছে। দেশের বৃহৎ অংশকে তারা সমস্ত রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে কোণঠাসা করছে। এজন্য কালাকানুন ও আলাদা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সরকার। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জাতীয় পার্টি সব আন্দোলনে জনগণের পক্ষে ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সময় জাতীয় পার্টি জনগণের পক্ষে ছিল, এই হত্যাকাণ্ড আমার ভাগনে মারা গেছে। শাপলা চত্বরের আন্দোলনে আমরা সরাসরি হেফাজতকে সমর্থন দিয়েছিলাম। হেফাজতের মানুষকে পানি খাইয়েছি। চব্বিশের ছাত্র আন্দোলনেও আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা ছিল।
বিগত নির্বাচন সম্পর্কে জি এম কাদের বলেন, আমরা কোনো প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে যেতে চাইনি। কিন্তু সেসব নির্বাচনে আমাদের যেতে বাধ্য করা হয়েছে। বর্তমানে আমাদের মিছিল-মিটিং করতে দেওয়া হচ্ছে না। বাঁধার কারণে আমরা কাউন্সিল করতে পারছি না। আমাদের নেতাকর্মীদের বিনা কারণে জেলে নিচ্ছে। বিনা বিচার ও চার্জশিটে নেতাকর্মীরা মাসের পর মাস জেল খাটছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার সত্যিকার অর্থে সঠিক অবস্থান নিতে ব্যর্থ হলে দেশের জনগণকে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমার আহ্বান, যারা দেশে নিগৃহীত, অত্যাচারিত, আইনকে অন্যায়ভাবে যাদের ওপর ব্যবহার করা হচ্ছে, সেইসব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দেশে বেকার সমস্যা বাড়ছে, দারিদ্র্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত প্রায় ৯ মাসে দেশের অবস্থা আরও খারাপের দিকে গেছে। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারছে না। আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে সাধারণ মানুষ চলাফেরা করতে পারছে না। এমন চলতে থাকলে দেশে কেউ বিনিয়োগ করতে আসবে না। এ সময় জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইয়াসির, আজমল হোসেন লেবু, জেলা যুবসংহতির সভাপতি হাসানুজ্জামান নাজিমসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ এম ক দ র এম ক দ র আম দ র সরক র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব