গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত, পানিবন্দি হাজারো পরিবার
Published: 30th, May 2025 GMT
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে পটুয়াখালীতে আজও বৃষ্টি হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় বইছে দমকা হাওয়া। সাগরের বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে।
উপকূলীয় এলাকায় এখনো ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার শঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। এ কারণে পটুয়াখালীর পায়রাসহ দেশের সব সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সব মাছধরা ট্রলার সমূহকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে তারা।
এদিকে, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার দুই স্থানে নতুন করে বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। ফলে অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি অবস্থায় আছেন হাজার হাজার মানুষ।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরায় বাঁধে ভাঙন, শতাধিক ঘের প্লাবিত
আমাকে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট বানানো হয়েছে: বাঁধন
ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ করছেন এলাকাবাসী
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে পটুয়াখালীর গলাচিপার পানপট্রি বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি বেড়িবাঁধ নতুন করে ভেঙে গেছে। ফলে তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রাঙ্গাবালী উপজেলার মধ্য চালিতাবুনিয়া গ্রামের বেড়িবাঁধ ভেঙে পুরো চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। চরআন্ডা গ্রামের বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে রাঙ্গাবালী উপজেলার অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত লাগোয়া সী-বিচ সড়ক উদ্বোধনের আগেই সমুদ্রের ঢেউয়ের তাণ্ডবে ধ্বসে পড়েছে। দুই দফা জোয়ারে নদ-নদীর পানি ২ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়িবাঁধের বাইরের ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। টানা বৃষ্টির বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ভেসে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর।
বাউফল উপজেলার আদাবাড়িয়ায় গাছ ভেঙে কয়েকটি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেড়িবাঁধের বাইরের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল।
কৃষি ও মৎস্য খাতে ঠিক কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখানো নিরূপণ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর।
রাঙ্গাবালী উপজেলা মধ্য চালিতাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা পারভেজ হোসেন বলেন, “আমাদের এখানের বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে। ঘর একেবারে তলিয়েছে। এখন আমরা পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।”
একই উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের মোল্লা গ্রামের বাসিন্দা ফয়েজ হোসেন বলেন, “আমরা বেড়িবাঁধের বাইরে থাকি। অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে আমাদের ঘর একেবারে তলিয়ে গেছে। স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করেছে। এখন আমরা একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। অনেক দুরাবস্থার মধ্যে আছি।”
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মো.
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ল ব ত হয় ছ উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যক্তিগত কর্মকর্তার স্ত্রীকে নগদে চাকরি দেওয়া নিয়ে যা বললেন ফয়েজ আহমদ
মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদে নিজের ব্যক্তিগত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করেছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। আজ শনিবার বিকেলের দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি অভিযোগ স্বীকারে করে পোস্ট দেন। এ ঘটনার সঙ্গে তাকে এবং তার মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামকে অন্যায়ভাবে জড়ানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন প্রধান উপদেষ্টার এ বিশেষ সহকারী।
পোস্টে ফয়েজ আহমদ লেখেন, ‘আমি বাংলাদেশ রাষ্ট্র এবং এ দেশের মানুষের একটি পয়সাও চুরি করব না—এই আস্থাটা আমার ওপর রাখবেন আশা করি। আমি প্রচণ্ডরকম আর্থিক সততা নিয়ে বড় হয়েছি। আমার ব্যক্তিগত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট (স্বার্থের সংঘাত) এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এসেছে। কাজটা ঠিক হয়নি—এটা আমি বিনা বাক্যে স্বীকার করছি। তাঁকে প্রচণ্ডরকম বকাবকিও করেছি। উনার বউকে চাকরি দেওয়ার বিষয়টি আমি তদন্তের ব্যবস্থা করেছি, নির্দেশনা দিয়েছি। নগদের অ্যাক্টিং সিইও এই বিষয়ে প্রেস রিলিজে বলবেন।’
মানবজমিনের প্রতিবেদনে ফয়েজ আহমদ এবং একই মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের প্রসঙ্গ আসা নিয়ে ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘তাঁদের অন্যায়ভাবে টেনে আনা হয়েছে। নগদের আগের সরকারের লোকজন অর্থ হাতিয়েছেন; কিন্তু দায় তাঁদের ওপর চাপানো হয়েছে।’ মিথ্যা সাংবাদিকতা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী আরও লেখেন, ‘আমরা সংবাদকর্মীদের কাছে জেনেছি যে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পক্ষ এজেন্সিকে দিয়ে ১৫০ কোটি টাকা দুর্নীতির রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এর আগে তারা কিছু টিভি স্টেশনকেও অ্যাপ্রোচ করেছিল। দেশের শীর্ষ ফ্যাক্টচেকার এবং ডিজিটাল ভেরিফিকেশন এক্সপার্ট সেটা এক্সপোজও করেছেন। নগদে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশাসক বসানোর পরে বাংলাদেশ ব্যাংক কেপিএমজি-কে দিয়ে ফরেনসিক রিপোর্ট করাচ্ছে (অভিযোগ আছে কেপিএমজি প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট্যান্ট)।’
নগদকে বাঁচাতে কাজ করছেন উল্লেখ করে ফয়েজ আহমদ লেখেন, ‘শাফায়াত গং এখানে হেভিওয়েট ব্যারিস্টার নিয়ে এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে। এই দায়ও আমাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা হয়েছে। একটা অস্থিতিশীল সময়ে ডাকের লাইসেন্সে, রেগুলেটরের গাইডলাইনে, টপ এক্সপার্টদের ম্যানেজ সার্ভিসে আনা গেলে নগদ ভালো চলবে—এটাই ডিও লেটারে লিখেছি।’
গতকাল শুক্রবার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় নগদের ‘অনিয়ম’ নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, ফয়েজ আহমদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আতিক মোর্শেদ নগদের কোনো কর্মকর্তা না হয়েও সেখানে অফিস করেন। পাশাপাশি নিজের স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা জুঁইকে একটি পদে চাকরিও দিয়েছেন। এ সংবাদের পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।