‘বৃষ্টি, জ্যাম আর আমি—এক বিরহ কাহিনি’
Published: 30th, May 2025 GMT
সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার। জানালার কাচে টুপটাপ বৃষ্টির শব্দে যেন একধরনের কবিতা শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেই কবিতা যে কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্র্যাজেডি নাটকে রূপ নেবে, তা বুঝিনি!
বলছি গতকালের কথা। অফিস যেতেই হবে, এই দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ছাতা হাতে বের হলাম। রাস্তায় পা রেখেই মনে হলো, আমি ঢাকা শহরে নই, কোনো ভাসমান দ্বীপে এসেছি। পানিতে হাঁটছি না, যেন জলজ ট্রেকিং করছি!
অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল, রাস্তাগুলো নদী উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে চলে গেছে। বাস, প্রাইভেট কার, অটোরিকশা, সব একসঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে এমনভাবে, যেন একটা জাতীয় সেমিনার চলছে, যার বিষয়: ‘ঢাকার জ্যাম ও আমাদের ভবিষ্যৎ’।
রাইড শেয়ারে উঠে গন্তব্য দিলাম মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরত্ব! গুগল ম্যাপ বলল, ‘৩০ মিনিট’। আমি তো আনন্দে হালকা হাই তুললাম।
দুই ঘণ্টা পর আমি তখন মিরপুর-১০–এর ট্রাফিক সিগন্যালে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে, সেই একই হাই তুলছি, তবে এবার সেটা আরাম নয়, হাহাকার!
ড্রাইভার মাঝেমধ্যে নিঃশব্দে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকেন, মুখে একরাশ হতাশা। মাঝে একবার বললেন, ‘জানেন, এই রাস্তায় কালও আটকে ছিলাম।’ আমি বললাম, ‘ভাই, মনে হচ্ছে আমরা একই জ্যামে প্রতিদিনের জীবন কাটাচ্ছি।’
আরও পড়ুনআমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের ও অস্থির একটি দিন ছিল ২ ঘণ্টা আগেএকদিকে ময়লা পানিতে রিকশা উল্টে যাচ্ছে, আরেক দিকে ট্রাকের পেছনে আটকে আছেন এক সাহসী বাইকার। ছাতা হাতে এক নারী পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, যাঁর গতি আমাদের গাড়ির চেয়ে অন্তত তিন গুণ বেশি।
ততক্ষণে আমি খিঁচে পড়েছি, মানে শরীর খিঁচে না, মনের খিঁচুনি! পেছনের সিটে বসে পিঠ ঘামছে, সামনে বাজছে হর্ন, আর মাথায় চলছে একটাই চিন্তা, এই শহর থেকে পালানো যায় না?
আরও পড়ুনমঙ্গল-অমঙ্গলের বৃষ্টি১ ঘণ্টা আগেএকটা পর্যায়ে হাল ছেড়ে দিয়ে আমি জানালার পাশে মাথা হেলিয়ে বসি। মনে মনে ভাবি, যদি এখন একটা ইলিশভাজা আর খিচুড়ি সামনে আসত, তবে এই জ্যামও হয়তো সহ্য হতো।
তিন ঘণ্টা পর, যখন গন্তব্যে পৌঁছালাম, তখন মনে হলো, আমি যেন হিমালয় জয় করে ফিরেছি। বাসার দরজায় আম্মু বললেন, ‘এত দেরি কেন?’ আমি চোখ মেলে বললাম, ‘মা, আজকে আমি শুধু রাস্তা পার হইনি, আমি নিজেকে পার করেছি।’
আরও পড়ুনআটকে যাওয়া এক সকাল২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনতাঁদের ট্রমা এখনো কাটেনি৩ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনপথের বিড়ম্বনা ১ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুন ‘আমার সাধারণ যাত্রা দুঃস্বপ্নে পরিণত’২৪ মিনিট আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার শপথ ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা যোদ্ধাদের
বিজয়ের মাস ঢাকায় এক হলেন একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর যোদ্ধারা; তাঁরা শপথ নিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার।
আজ শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেরিলা যোদ্ধাদের এই মিলনমেলায় এই বাহিনীর জীবিত সদস্যদের পাশাপাশি শহীদ পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। দিনভর এই আয়োজন করে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন বিশেষ গেরিলা বাহিনী সমন্বয় কমিটি।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে আলাদা গেরিলা বাহিনী গঠন করে অংশ নিয়েছিলেন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের সদস্যরা। কয়েক হাজার গেরিলা যোদ্ধার এই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদ। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বেতিয়ারার যুদ্ধে এই বাহিনীর সদস্যদের আত্মদান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আলোচিত ঘটনা।
স্বাধীনতার পর এই গেরিলা বাহিনীর সদস্যরা মোহাম্মদ ফরহাদের নেতৃত্বে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন। দেড় যুগ আগে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা করেছিল, তাতে এই বাহিনীর সদস্যদের রাখা হয়নি। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনীর সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
শহীদ মিনারে মিলনমেলার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি এই গেরিলা বাহিনীর সদস্য ছিলেন, স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে ভিপি হয়েছিলেন তিনি।
ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ শনিবার একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর মিলনমেলায় সিপিবির সাবেক সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম