সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার। জানালার কাচে টুপটাপ বৃষ্টির শব্দে যেন একধরনের কবিতা শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেই কবিতা যে কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্র্যাজেডি নাটকে রূপ নেবে, তা বুঝিনি!

বলছি গতকালের কথা। অফিস যেতেই হবে, এই দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ছাতা হাতে বের হলাম। রাস্তায় পা রেখেই মনে হলো, আমি ঢাকা শহরে নই, কোনো ভাসমান দ্বীপে এসেছি। পানিতে হাঁটছি না, যেন জলজ ট্রেকিং করছি!

অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল, রাস্তাগুলো নদী উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে চলে গেছে। বাস, প্রাইভেট কার, অটোরিকশা, সব একসঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে এমনভাবে, যেন একটা জাতীয় সেমিনার চলছে, যার বিষয়: ‘ঢাকার জ্যাম ও আমাদের ভবিষ্যৎ’।

রাইড শেয়ারে উঠে গন্তব্য দিলাম মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরত্ব! গুগল ম্যাপ বলল, ‘৩০ মিনিট’। আমি তো আনন্দে হালকা হাই তুললাম।

দুই ঘণ্টা পর আমি তখন মিরপুর-১০–এর ট্রাফিক সিগন্যালে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে, সেই একই হাই তুলছি, তবে এবার সেটা আরাম নয়, হাহাকার!

ড্রাইভার মাঝেমধ্যে নিঃশব্দে জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকেন, মুখে একরাশ হতাশা। মাঝে একবার বললেন, ‘জানেন, এই রাস্তায় কালও আটকে ছিলাম।’ আমি বললাম, ‘ভাই, মনে হচ্ছে আমরা একই জ্যামে প্রতিদিনের জীবন কাটাচ্ছি।’

আরও পড়ুনআমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের ও অস্থির একটি দিন ছিল ২ ঘণ্টা আগে

একদিকে ময়লা পানিতে রিকশা উল্টে যাচ্ছে, আরেক দিকে ট্রাকের পেছনে আটকে আছেন এক সাহসী বাইকার। ছাতা হাতে এক নারী পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, যাঁর গতি আমাদের গাড়ির চেয়ে অন্তত তিন গুণ বেশি।

ততক্ষণে আমি খিঁচে পড়েছি, মানে শরীর খিঁচে না, মনের খিঁচুনি! পেছনের সিটে বসে পিঠ ঘামছে, সামনে বাজছে হর্ন, আর মাথায় চলছে একটাই চিন্তা, এই শহর থেকে পালানো যায় না?

আরও পড়ুনমঙ্গল-অমঙ্গলের বৃষ্টি১ ঘণ্টা আগে

একটা পর্যায়ে হাল ছেড়ে দিয়ে আমি জানালার পাশে মাথা হেলিয়ে বসি। মনে মনে ভাবি, যদি এখন একটা ইলিশভাজা আর খিচুড়ি সামনে আসত, তবে এই জ্যামও হয়তো সহ্য হতো।

তিন ঘণ্টা পর, যখন গন্তব্যে পৌঁছালাম, তখন মনে হলো, আমি যেন হিমালয় জয় করে ফিরেছি। বাসার দরজায় আম্মু বললেন, ‘এত দেরি কেন?’ আমি চোখ মেলে বললাম, ‘মা, আজকে আমি শুধু রাস্তা পার হইনি, আমি নিজেকে পার করেছি।’

আরও পড়ুনআটকে যাওয়া এক সকাল২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনতাঁদের ট্রমা এখনো কাটেনি৩ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনপথের বিড়ম্বনা ১ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুন ‘আমার সাধারণ যাত্রা দুঃস্বপ্নে পরিণত’২৪ মিনিট আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’

কৈশোর পেরোনোর আগেই শাহানাবাড়ির মেয়ে দীপার বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর নির্যাতনের জাল ছিঁড়ে নিজের মতো করে বাঁচতে চেয়েছেন তিনি। নব্বইয়ের দশকের পটভূমিতে দীপার বেঁচে থাকার লড়াইয়ের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বাড়ির নাম শাহানা।

সত্য কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত বাড়ির নাম শাহানায় দীপা চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনান সিদ্দিকা। ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে কমলা কালেক্টিভ ও গুপী বাঘা প্রোডাকশন্স লিমিটেড।

নির্মাণের বাইরে লীসা গাজী লেখক, নাট্যকর্মী হিসেবে পরিচিত

সম্পর্কিত নিবন্ধ