১নং ওয়ার্ড শ্রমিকদলের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন
Published: 30th, May 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জের ১নং ওয়ার্ড শ্রমিকদলের উদ্যোগে স্বাধীনতার ঘোষক বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া ও খাবার বিতরন করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ মে) বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি তেরা মার্কেট এলাকায় এ আলোচনা সভা,দোয়া ও খাবার বিতরন করা হয়।
১নং ওয়ার্ড শ্রমিকদলের আহ্বায়ক আলীরাজের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামের পরিচালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক এস,এম,আসলাম।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জের ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক শরীফ হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শ্রমিকদলের সদস্য সচিব শরীফ হোসেন, ১নং ওয়ার্ড শ্রমিকদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি বাদশা মিয়া, জাহাঙ্গীর হোসেন, মোশারফ হোসেন, মামুন, সুমন ও রুবেল প্রমূখ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ জ য় উর রহম ন স দ ধ রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
এভারেস্ট চূড়ায় লাল-সবুজ পাতাকা হাতে কেঁদেছি: শাকিল
ঘনকালো মেঘে ঢাকা আকাশ। বৃষ্টি কখনও নামছে ঝুমঝুমিয়ে, কখনও গুঁড়িগুঁড়ি। এরই মধ্যে বিরামহীন বয়ে চলছিল দমকা হাওয়া। তবে এসব কিছুই বাধা হতে পারেনি হাজারো মানুষের জন্য। পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টে লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানো ইকরামুল হাসান শাকিলের জন্মভিটায় ফেরার সংবাদে তারা ভিড় করেন।
শনিবার দুপুরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বাগচালা গ্রামে দেখা যায় এ দৃশ্য। আশপাশের সব গ্রামের মানুষের গন্তব্য ছিল শাকিলের বাড়ির দিকে। তাদের কারও হাতে তাজা ফুলের তোড়া, কারও হাতে মালা। কেউ আবার নিয়ে এসেছিলেন নানা জাতের মৌসুমি ফল। অগণিত মানুষের সঙ্গে জ্যৈষ্ঠের প্রকৃতিও যেন ছুটে এসেছিল শাকিলকে স্বাগত জানাতে। মানুষের এই ভালোবাসার সামনে এভারেস্ট জয়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে আপ্লুত হয়ে ওঠেন তিনি।
ইকরামুল হাসান শাকিল বলেন, ‘এভারেস্টের চূড়ায় দাঁড়িয়ে লাল-সবুজের পাতাকা হাতে নিয়ে আমি কেঁদেছি। এই কান্না ছিল কৃতজ্ঞতার, আনন্দের আর দায়িত্ববোধের। এই পথ সহজ ছিল না।’
বাগচালা গ্রামের প্রয়াত খবির উদ্দিন ও শিরিন আক্তার দম্পতির তিন ছেলে। সবার বড় ইকরামুল হাসান শাকিলকে বিদ্যালয়জীবনেই আকর্ষণ করে কবিতাচর্চা। পরবর্তী সময়ে পাহাড়-পর্বতের চূড়া ছোঁয়ার নেশায় পেয়ে বসে তাঁকে। ভারতের নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিংয়ে পর্বতারোহণের প্রাথমিক ও উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন। পরে আরোহণ করেছেন গ্রেট হিমালয়, ৬ হাজার ১৮৬ মিটার উঁচুর মাউন্ট কায়াজো রি পর্বত, ৭ হাজার ১২৭ মিটার উঁচু হিমলুং, ৬ হাজার ৩৩২ মিটারের দোলমা খাংসহ বেশ কিছু পর্বত।
তবে এভারেস্টের শীর্ষ ছোঁয়ার আগে তাঁকে পাড়ি দিতে হয় দুর্গম পথ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তাঁর এই যাত্রা শুরু হয় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি। এদিন দুপুরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ইনানী থেকে হাঁটতে শুরু করেন। হেঁটে ৮৪ দিনে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছান গত ১৯ মে নেপালের স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে। সেখান থেকে শাকিল দেশে ফিরেছেন বৃহস্পতিবার বিকেলে। ঢাকায় দু’দিন বিশ্রামের পর শনিবার সকালে জন্মভিটায় ছুটে যান। ঢাকা থেকে মাওনা চৌরাস্তা, ফুলবাড়িয়া রোড হয়ে শালদহ সেতু পেরিয়ে বাগচালা গ্রামের ভিটায় পৌঁছান। শুরুতেই মা শিরিন আক্তারকে জড়িয়ে ধরেন। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চারদিক ফুলের বৃষ্টিতে তাঁকে স্বাগত জানায় এলাকাবাসী।
এ অনুভূতি বর্ণনা করতে গিয়ে শাকিল সমকালকে বলেন, ‘গ্রামের মানুষ আমাকে বিরল ভালোবাসা দিয়েছে। আমাকে আপ্লুত করেছে। আমাকে ঋণী করে ফেলেছে। আমাকে দায়বদ্ধ করে ফেলেছে। কৃতজ্ঞতা জানানো ছাড়া আমার আর কিছুই দেওয়ার নেই। বাবা বেঁচে থাকলে আজকে অনেক খুশি হতেন। তাঁকে খুব মিস করছি।’
এভারেস্ট অভিযানের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শাকিল বলেন, ‘হিমালয়ের অতল গভীর বরফের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে আমাদের জীবনবিন্দু। প্রতিটি পদক্ষেপে মৃত্যু আর জীবনের মাঝখানে এক সূক্ষ্ম ভারসাম্য ছিল। যমুনা নদীর উত্তাল খরস্রোতা ঢেউ, অনিশ্চয়তার দীর্ঘ পথ, খুম্বু আইসফল, লোৎসে ফেস, সাউথ কল, হিলারি স্টেপ– একেকটা জায়গা যেন একেকটা মানসিক যুদ্ধক্ষেত্র ও মৃত্যুর চোখ রাঙানি।’
অক্সিজেনশূন্য উচ্চতা উঠে কৃত্রিম অক্সিজেনের মাস্ক মুখে তাঁর প্রতিবারই মনে হয়েছে, ‘আর পেরে উঠবো না।’ কিন্তু হৃদয়ে বাজতে থাকা বাংলাদেশের নাম আর ‘সি টু সামিট’ অভিযানের অঙ্গীকার তাঁকে এগিয়ে যেতে প্রেরণা জুগিয়েছে।
শাকিল বলেন, ‘আমি তখন দাঁড়িয়ে পৃথিবীর সর্বোচ্চ বিন্দুতে। মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায়। মাথার ওপরে বিশুদ্ধ নীল আকাশ থাকার কথা ছিল, কিন্তু প্রকৃতি সেটা চায়নি। চেয়েছিল চরম পরীক্ষা। পায়ের নিচে ছিল অসীম শূন্যতা। ৮৮৪৮.৮৬ মিটার ওপরে দাঁড়িয়ে আমি শুধু একজন পর্বতারোহী নই– আমি তখন হাজারো আবেগ, ত্যাগ, সংগ্রাম আর স্বপ্নের প্রতিনিধি।’