ঘাটে তিনদিন অপেক্ষার পর গন্তব্যে পৌঁছাল ৪ মরদেহ
Published: 30th, May 2025 GMT
নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার হরণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ঘাটে তিনদিন অপেক্ষার পর বিশেষ বিবেচনায় সরকারি নৌযানে চারটি মরদেহ গন্তব্যে পৌঁছেছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন জানান, শুক্রবার (৩০ মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সরকারি নৌযান বে ক্রুজ-১ যোগে চেয়ারম্যান ঘাট থেকে চরঈশ্বর ইউনিয়নের নলচিরা ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয় মরদেহগুলো।
গত বুধবার (২৮ মে) বিকেল থেকে মরদেহবাহী চারটি অ্যাম্বুলেন্সে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে চেয়ারম্যান ঘাটে আটকা পড়েছিল। যারা মারা গেছেন এবং তাদের পরিবারের কোনো তথ্য জানাতে পারেননি ইউএনও।
আরো পড়ুন:
২২ দিনের শিশুকে হত্যা করে থানায় জিডি, গ্রেপ্তার ৪
ভারতীয় নাগরিকের মরদেহ হস্তান্তর
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে গত বুধবার দুপুর ১২টা থেকে হাতিয়ায় সব ধরনের নৌ যোগাযোগ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় উপজেলা প্রশাসন। যার কারণে গত তিনদিন ধরে হাতিয়া উপজেলার সঙ্গে নোয়াখালী জেলা সদরসহ সারা দেশের নৌ যোগাযোগ বন্ধ ছিল। ফলে জেলা সদর থেকে হাতিয়াগামী যাত্রীরা চেয়ারম্যান ঘাটে আটকা পড়েন।
ইউএনও মো.
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মরদেহ চারটি গ্রহণ করার জন্য নলচিরা ঘাটে স্বজনরা অপেক্ষায় ছিলেন। নৌযান থেকে নামানোর পর নলচিরা ঘাট থেকে সড়ক পথে হাতিয়া উপজেলা সদর ওছখালি নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে নিজ নিজ এলাকায় দাফনের জন্য নেওয়া হয় মরদেহ চারটি।
ঢাকা/সুজন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ নদ মরদ হ নলচ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি
ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।
শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।
ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।
কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলাশিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।
শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’
শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী