চট্টগ্রামে ছাত্র জোটের সমাবেশে হামলা নিয়ে ৩২ নাগরিকের বিবৃতি
Published: 31st, May 2025 GMT
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে হামলা চালানোকে ভিন্নমত ও চিন্তা দমনের ফ্যাসিবাদী আক্রমণ বলে মনে করেন চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ৩২ নাগরিক। শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারা এই কথা বলেন। বিবৃতিতে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন নাগরিকেরা। গত বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর জামাল খান এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
বিবৃতিতে ৩২ বিশিষ্ট নাগরিক বলেন, ‘আমরা জেনেছি, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত এ টি এম আজহারুল ইসলামকে খালাস দেওয়ার ত্রুটিপূর্ণ বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট এ সমাবেশের আয়োজন করেছিল। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর যদি এটিকে সঠিক মনে না হয়, তবে তাদের আলাদাভাবে প্রতিবাদ জানানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু তার পরিবর্তে শাহবাগবিরোধী ঐক্য নামে উচ্ছৃঙ্খল মব সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
তারা আরও বলেন, ‘‘সম্প্রতি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’ নামে মব সৃষ্টি করে হামলা করা হয়েছে। এতে ১৮ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন গুরুতর আহত আছেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ভয়মুক্ত পরিবেশে স্বাধীন মতপ্রকাশ চর্চা এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনির্মাণের যে আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত হয়েছে, তা নস্যাতেই পরিকল্পিত ও কাপুরুষোচিত ফ্যাসিবাদী এই আক্রমণ করা হয়েছে।’
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে আছেন- লেখিকা ফেরদৌস আরা আলীম, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অনুবাদক জি এইচ হাবীব, আর রাজী, সায়মা আলম, মুনমুন নেছা, জিহান করিম, সাংবাদিক ও লেখক আহমেদ মুনির, কবি ঋষিন দস্তিদার, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের তত্ত¡াবধায়ক ইন্দ্রানী ভট্টাচার্য, স্বপ্ননগর বিদ্যানিকেতনের সমন্বয়কারী ধ্রুব জ্যোতি হোড়, কবি ও লেখক সৈকত দে, নিপীড়নবিরোধী আইনজীবী মঞ্চের আহŸায়ক ভুলন ভৌমিক, শিক্ষক জুলেখা আক্তার, গবেষক ঈশিতা দস্তিদার প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার নগরের জামালখানের চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্র জোটের ব্যানার কেড়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’–এর ব্যানারে এই হামলা চালানো হয়। এতে ছাত্রশিবিরের কর্মী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতা-কর্মীদের দেখা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
যদিও ঘটনাস্থলে শিবিরের কেউ ছিলেন না বলে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার শিবিরের সভাপতি মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক ছ ত র জ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বিএনপি নেতা অমিত
যশোরের চৌগাছায় ধর্ষণের শিকার ৭ বছরের সেই শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। একই সঙ্গে শিশুটির আইনি সুবিচার পেতে জেলার জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের নির্দেশনা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার যশোর জেনারেল হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে গিয়ে তিনি এই ঘোষণা দেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শিশুটির চিকিৎসার ব্যাপারে তিনি কথা বলেন।
বুধবার যশোরের চৌগাছায় বাড়ির পাশে শিশুটিকে ধর্ষণ করে প্রতিবেশী দাদা। এরপর শিশুটিকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুটির মা থানায় অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত মিজানুর রহমানকে (৫৫) আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠালে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
শিশুটির মা হাসপাতালে জানান, তার মেয়েটি বুধবার বিকেলে বাড়ির পাশে খেলা করছিল। এসময় শিশুটিকে একা পেয়ে মিজানুর জোর করে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর মেয়েটি রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়িতে ফিরে কান্না করছিল। তার কাছ থেকে ঘটনা শুনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। তার চিকিৎসা চলছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. হোসাইন সাফায়েত বলেন, শিশুটিকে আশাঙ্কাজনক অবস্থায় আনা হয়। তার শরীরের ক্ষত স্থানে অপারেশন করা হয়েছে। এখন শিশুটিকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। এখন শঙ্কামুক্ত।
চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, শিশুটির শরীরে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, রিপোর্ট পাওয়ার পর আসল ঘটনা জানা যাবে। ঘটনার পরেই অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিকে বিচারক কারাগারে প্রেরণ করেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটির চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে যান বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। এ সময় তার সঙ্গে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) যশোরের নেতৃবৃন্দ ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় বিএনপি নেতা অমিত শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নেন এবং শিশুটির পরিবার আইনি বিচার পেতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দদের নির্দেশনা দেন।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, শিশুটির সঙ্গে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। শিশুটির বাবা বিদেশ থাকে। এই পরিবারে কোন পুরুষ সদস্য নেই। তাছাড়া তারা গরীব। ঘটনাটি জানার পর বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে আমরা শিশুটিকে দেখতে যাই।