চীনের সঙ্গে নতুন বাণিজ্যিক সম্পর্কের সূচনা হয়েছে। দেশটিতে আম রপ্তানি শুরু করেছে বাংলাদেশ। প্রথম চালানে তিন টন আম বিমানের মাধ্যমে চীনের ছাং শা হুয়াং হুয়া বিমানবন্দরে পৌঁছেছে। 

শনিবার (৩১ মে) দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জি মোমেন্টস এক এক্স বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

আম পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর শুল্ক বিভাগের কর্মীরা প্যাকেজিং ও ফলের চেহারা কোয়ারেন্টিন পরিদর্শন করার পর ছাড়পত্র দেন।

এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ থেকে চীন আম আমদানি করল। এই ঘটনা চীন-বাংলাদেশ কৃষিপণ্যের বাণিজ্যিক সহযোগিতার নতুন পথ পাড়ি দেওয়ার প্রতীক বলে মনে করা হচ্ছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই চালানের আম চীনের ই-কর্মাস, সুপারমার্কেট ও তাজা খাদ্য চেইনের মতো চ্যানেলে বিক্রি করা হবে। এর আগে বাংলাদেশের আম প্রধানত মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বিক্রি করা হতো।
 
এর আগে, প্রথম দফায় ২৮ মে বুধবার দুপুরে আমের চালান চীনে পাঠানো হয়। এ জন্য হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

গত কয়েক মাস আগে চীনে আম রপ্তানি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। কিছুদিন আগে এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি হয়। এ মৌসুমে সব মিলিয়ে ১০০ টন আম রপ্তানি হবে। প্রথম চালানে সাতক্ষীরা, যশোর অঞ্চলের আম রপ্তানি করা হলো। কয়েকজন রপ্তানিকারক মিলে ১০ টন আম রপ্তানি করেছেন বলে জানা গেছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, “প্রথম দফায় ঢাকা থেকে আম চীনে রপ্তানি হয়েছে। ধীরে ধীরে বাকি আমও রপ্তানি করা হবে।”

গত ২৮ এপ্রিল চীনের রাষ্ট্রদূত চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের বাগান পরিদর্শন করেছিলেন। এরপরই আম রপ্তানির প্রক্রিয়া দ্রুত হয়।

চলতি বছর চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপিত হলো। এ উপলক্ষে এই আম রপ্তানি একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ হলো।

২০১৯ সালে চীনে আমসহ কিছু কৃষিপণ্য রপ্তানির অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছিল বাংলাদেশ। তবে করোনা সংক্রমণসহ নানা কারণে ছয় বছর পর দেশটিতে আম রপ্তানির উদ্যোগ সফল হচ্ছে। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে আম উৎপাদিত হয়েছে ২৪ লাখ টন। এর মধ্যে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৩২১ টন। বাংলাদেশ থেকে গত বছর ২১টি দেশে আম রপ্তানি করা হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ইতালি ও সিঙ্গাপুরের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশ রয়েছে।

ঢাকা/হাসান/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

সব মাধ্যমে কাজ করতে চান জৌপারী

২০১০ সালে ঢাকায় এসেছেন বান্দরবানের মেয়ে জৌপারী লুসাই। পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন, ঘুণাক্ষরেও অভিনয়ে আসার কথা ভাবেননি। ২০১২ সালে এনটিভির টেলিফিল্ম শেষ বলে কিছু নেই দিয়ে প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান জৌপারী। তখন বিএএফ শাহীন কলেজে পড়তেন। এক বন্ধুর কাছে শুনলেন টেলিফিল্মে এক কিশোরী চরিত্রের জন্য শিল্পী খুঁজছেন নির্মাতা মেজবাউর রহমান। পরে অডিশন দিয়ে টিকে যান।

নিজেকে প্রথমবার ছোট পর্দায় দেখে রীতিমতো আপ্লুত হয়েছিলেন। সেই সময়ের অনুভূতিকে অনেকটা ‘প্রথম প্রেমে পড়ার’ মতো বললেন এই তরুণ অভিনেত্রী। টেলিফিল্মটি প্রচারের পর পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছিলেন, যেটি তাঁকে অভিনয়ে অনুপ্রাণিত করেছে।


‘রেহানা মরিয়ম নূর’ থেকে ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি’
আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের আলোচিত সিনেমা রেহানা মরিয়ম নূর-এ মিমি চরিত্রে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন জৌপারী। এটি ২০২১ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা হিসেবে কান চলচ্চিত্র উৎসবের ‘আঁ সার্তে রিগা’ বিভাগে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান খেলনাছবির বিজ্ঞাপন করেছিলাম, সেখানে নির্মাতা সাদ ভাইও ছিলেন।’ খেলনাছবির সূত্র ধরেই সিনেমাটিতে কাজের সুযোগ পান তিনি। ২০১৭ সালে সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হন, ২০১৮ সালে শুটিং করেন।
জৌপারী লুসাই বলেন, ‘সিনেমাটি করার আগে অভিনয় নিয়ে খুব একটা বুঝতাম না। সিনেমাটি করার পর অভিনয়কে সিরিয়াসলি নিই। তখন মনে হয়েছিল অভিনয় চালিয়ে যাব। সঙ্গে অভিনয় শিখবও।’

আরও পড়ুনশাকিবের ‘তাণ্ডব’, রাজের ‘ইনসাফ’–এ কাজ করা কে এই তরুণ সংগীত পরিচালক২৫ জুন ২০২৫

বঙ্গ অরিজিনাল সিরিজ বিএনজি-তে অভিনয় করে তরুণ দর্শকের কাছে পৌঁছেছেন জৌপারী। আরেক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সারভাইভ-এও মূল চরিত্রে দেখা গেছে তাঁকে। তিনি বলেন, ‘বিএনজি ও সারভাইভ দুটি কাজের জন্যই খুব ভালো রেসপন্স পেয়েছি। দুটি কাজ দেখে অনেকে আমাকে চিনেছেন।’
প্রায় এক যুগের ক্যারিয়ারে কোন কাজটিকে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বলবেন? জৌপারী বলেন, ‘আসলে এটা আমার পক্ষে বলা কঠিন। প্রতিটা কাজই মন থেকেই করি। আমি কাজ করে যেতে চাই, কাজটাকে ভালোবাসি।’
এর মাঝে অভিনয়ে নিজেকে শাণিত করতে নাট্যব্যক্তিত্ব সৈয়দ জামিল আহমেদের কর্মশালায় অংশ নেন জৌপারী। জামিল আহমেদ নির্দেশিত আমি বীরাঙ্গনা বলছি-এ একজন নির্যাতিতা পাহাড়ি নারীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি।

‘পারফেক্ট ওয়াইফ’ ইরা
২২ অক্টোবর মুক্তি পাওয়া চরকির ফ্ল্যাশ ফিকশন পারফেক্ট ওয়াইফ-এ একজন জাপানি তরুণী ইরার চরিত্রে অভিনয় করেছেন জৌপারী। ফিকশনটি পরিচালনা করেছেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম। ফিকশনটি মুক্তির পর ভালো সাড়া পাচ্ছেন জানিয়ে জৌপারী বলেন, ‘আমার পরিচিতদের মধ্যে যাঁরা কাজটা দেখেছেন, তাঁরা সবাই চরিত্রটা পছন্দ করেছেন। অনেকে বলেছেন, তুমি রোবট না মানুষ।’
সেলিমের পরিচালনায় এবারই প্রথম কাজ করেছেন তিনি। কাজের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক ভালো। কারণ, উনি আসলে অ্যাক্টিংটাকে দারুণভাবে ডিল করেন। খুবই আরাম করে আমি কাজ করেছি। অভিনয়ের ক্ষেত্রে পরিচালক অনেক ম্যাটার করে। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ যে রকম আমাকে ছেড়ে দিয়েছিলেন, যেভাবে ইচ্ছা তুমি করো, ঠিক একইভাবে আমি বলব যে এই চরিত্রটা (ইরা) করতে গিয়ে আমি আমার মনে হয়েছে যে আমি আরও বেশি এনজয় করেছি।’

আরও পড়ুনসব ধরনের চরিত্র করতে চান এই তরুণ অভিনেত্রী ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সব মাধ্যমে কাজ করতে চান
ওটিটি, প্রেক্ষাগৃহের সিনেমা থেকে টিভি নাটক—সব মাধ্যমেই কাজ করেছেন জৌপারী। তিনি বলেন, ‘টিভি হোক, ওটিটি হোক কিংবা সিনেমা—সব মাধ্যমেই অভিনয় করতে চাই।’
ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমা রেহানা মরিয়ম নূর-এর পর আর কোনো সিনেমা মুক্তি পায়নি। মাঝে এনামুল করিম নির্ঝরের একটি সিনেমার কাজ শেষ করেছেন, তবে সিনেমাটি এখনো মুক্তি পায়নি।
অভিনয়কে পেশা হিসেবে নিতে চান জানিয়ে জৌপারী বলেন, ‘আমি অভিনয়ের কোন স্টেজে আছি, জানি না। তবে অভিনয়টা আমার প্রফেশন। আমার প্যাশনের জায়গাও। আমি এটা সারা জীবন করে যেতে চাই।’
সামনে কী করছেন? তিনি বলেন, এখনো কোনো কাজ চূড়ান্ত হয়নি, তবে কিছু কাজের কথাবার্তা চলছে। যদি সবকিছু কনফার্ম হয়, তাহলে তো সামনের বছর দেখা যেতে পারে।
জৌপারী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিডিয়া স্টাডিজ ও জার্নালিজমে পড়াশোনা করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কে হবে নারী বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন
  • ভারত নাকি দক্ষিণ আফ্রিকা, কে হবে নতুন নারী বিশ্বকাপ চ‌্যাম্পিয়ন
  • বিশ্বকাপ ফাইনালের প্রতি টিকিটের দাম দেড় লাখ টাকার বেশি
  • গোল্ডেন বুট হাতে এমবাপ্পে বললেন, রিয়ালে আরও বহু বছর থাকতে চাই
  • সব মাধ্যমে কাজ করতে চান জৌপারী