‘শিল্প এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বাড়ছে শনিবার থেকে’
Published: 31st, May 2025 GMT
শিল্প কলকারখানায় গ্যাস সংকট কাটাতে আজ শনিবার থেকেই সরবরাহ বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
শনিবার (৩১ মে) সকালে আশুলিয়ায় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এই তথ্য জানান।
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কার্যালয় পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আরও দুয়েকদিন আগেই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হতো। কিন্তু সমুদ্র উত্তাল থাকায় জাহাজ থেকে গ্যাস মূল সঞ্চালন লাইনে পাঠানো সম্ভব হয়নি। এখন সে সমস্যা সমাধান হয়েছে। আজ থেকেই গ্যাস সরবরাহ বাড়বে। ইতোমধ্যে ৫০ এমএমসিএফডি সরবরাহ বেড়েছে, আরও এক থেকে দেড়শ’ এমএমসিএফডি বাড়বে।”
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আগামীকালই একটি সভা হবে। পল্লী বিদ্যুৎ ও আরইবির সম্পর্ক কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা হবে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি আগামীকাল চূড়ান্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে। ওই প্রতিবেদন চূড়ান্ত হওয়ার পর আমরা ব্যবস্থা নেব।”
মিছিলে-সমাবেশে সমস্যার সমাধান নয় বরং তা আরও জটিল করে তোলে মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, “বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি এবং এগুলো দ্রুত সমাধান করা হবে। মিছিল-মিটিং করে কোনো লাভ নেই। এগুলো করলে শুধু ক্ষতিই হয়। আগেও প্রায় ২৬-২৭টি স্থানে আন্দোলনকারীরা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তারা ভেবেছিল এতে ভাল হবে। কিন্তু এটি ছিল নাশকতামূলক কাজ। সে কারণে সরকার বাধ্য হয়েছে কিছু ব্যবস্থা নিতে।”
পরিদর্শন কার্যক্রম সম্পর্কে ফাওজুল কবির বলেন, “শিল্প কারখানাগুলোর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখার জন্যই আমরা এসেছি। প্রথমে আমরা বেপজায় যাব, সেখানকার পরিস্থিতি দেখব। এরপর চন্দ্রা, মির্জাপুর, কালিয়াকৈর, ভালুকা হয়ে পরে টঙ্গী এলাকার শিল্প কারখানাগুলোর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করব।”
এসময় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, পেট্রোবাংলা ও অন্যান্য দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন।
ঢাকা/সাব্বির/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরবর হ ব ড় পর স থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার বসার দাবি উচ্ছেদ হওয়া হকারদের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা থেকে সম্প্রতি উচ্ছেদের শিকার হকাররা আবারও আগের জায়গায় বসার দাবি জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে শাহবাগে বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন ভবনের ২ নম্বর কক্ষে জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ ও ভুক্তভোগী হকারদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মাশরুমচাষি ও ক্যাম্পাসে হকারদের কাছে মাশরুম সরবরাহকারী রুবি আক্তার। সঞ্চালনা করেন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন ঢাকা জেলার আহ্বায়ক শবনম হাফিজ। এতে বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম, ঢাকা জেলা কমিটির সদস্য ইকবাল কবির ও আঁখি মনি এবং ভাসমান উদ্যোক্তা নুরুজ্জামান কমলসহ উচ্ছেদের শিকার কয়েকজন হকার।
মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন শবনম হাফিজ। তিনি বলেন, টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকাজুড়ে তিন শতাধিক হকার কাজ করতেন। গত অক্টোবরে মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগ এনে ডাকসুর সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। এতে অসংখ্য হকার বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে পড়েছেন।
শবনম হাফিজ আরও বলেন, এই মানুষগুলোকে উচ্ছেদের নামে হয়রানি করা হলো, জিনিসপত্র নষ্ট করা হলো। এই ক্ষতির জবাবদিহি চাই, ক্ষতিপূরণ চাই এবং তাঁদের যেন সসম্মানে কাজের সুযোগ দেওয়া হয়, সেটি চাই। প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ যেন তাঁদের পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করে দেয়।
আয়োজকেরা বলেন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন ও ভুক্তভোগী হকাররা উচ্ছেদের পর নিজেদের কার কী পরিস্থিতি ও কীভাবে তাঁদের বর্তমান জীবন চলছে, তা জানতে একটি জরিপ পরিচালনা করছেন। এর আওতায় এ পর্যন্ত তাঁরা ৫০ জনের বিস্তারিত সাক্ষাৎকার নিতে পেরেছেন। এর মধ্য দিয়ে যে চিত্র বেরিয়ে এসেছে, তা তুলে ধরার লক্ষ্যেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে রুবি আক্তার নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারির সময় স্বামীর গাড়ি ভাড়ার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে তাঁরা মাশরুম চাষ শুরু করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চাহিদার ওপরই নির্ভর ছিল তাঁদের সংসার। হকার উচ্ছেদের পর সেই বাজার প্রায় হারিয়ে গেছে।
রুবি আক্তার বলেন, ‘একজন হকারের সঙ্গে আরও অনেকের আয় জড়িয়ে থাকে—সরবরাহকারী, পানিওয়ালা ও সবজিওয়ালা। একজনের আয় বন্ধ হলে বহু পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা চাই, হকারদের কাজের জায়গা আবারও ফিরিয়ে দেওয়া হোক, বসতে দেওয়া হোক আগের জায়গায়। তাতে আরও অনেক পরিবার বেঁচে যাবে।’
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, হকার উচ্ছেদ ডাকসুর দায়িত্ব নয়। এটি মানবিক বা ন্যায়সংগত কোনো পদক্ষেপ নয়। হকারদের সম্মানজনক ব্যবসার ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব। এ বিষয়ে যথাযথ পরিকল্পনা করা সম্ভব।
ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম বলেন, জনগণের মৌলিক অধিকার ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করা অন্যায় ও অমানবিক বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও কয়েকজন হকার নিজেদের বর্তমান সংকটের কথা জানান।
চার দফা সুপারিশঅনুষ্ঠানে আয়োজকেরা চার দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো উচ্ছেদ করা হকারদের আগের কাজের জায়গায় ফেরার সুযোগ দেওয়া; কিছুদিন পরপর উচ্ছেদের নামে হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ করা এবং যাঁরা এই নির্যাতন করেছেন, তাঁদের বিচার করা; প্রয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা সিটি করপোরেশন বা নিজেদের সমবায় বা ট্রেড ইউনিয়নের পরিচয়পত্র ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা এবং কয়েক দফায় ভাসমান উদ্যোক্তাদের হাঁড়িপাতিল ও অন্যান্য যে মালামাল প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে গেছে, তা দ্রুত ফেরত দিতে হবে।