মৌলভীবাজারে পাহাড়ি টিলায় ধস, সড়কে ভোগান্তি
Published: 1st, June 2025 GMT
মৌলভীবাজারে ভারী বর্ষণে রাজনগর-কুলাউড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে টিলা ধস ও গাছ উপড়ে পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
গতকাল শনিবার (৩১ মে) সন্ধ্যা রাতে রাজনগর উপজেলার ২৪ নাম্বার পাহাড়ি এলাকায় টিলা ধসের ঘটনা ঘটে। এসময় আঞ্চলিক মহাসড়কের দুপাশে গাড়িগুলো আটকে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
এসময় প্রায় ৩০ মিনিট সড়ক বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অভিযান চালিয়ে সড়ক থেকে গাছ সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেন।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকাল থেকে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে মৌলভীবাজারে ভারী বর্ষণ হচ্ছিলো। মাঝে মাঝে বৃষ্টি কম থাকলেও বিকেল ৩টার পর ভারী বর্ষণ শুরু হয়। এসময় ভারী বর্ষণের কারণে রাজনগর-কুলাউড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ২৪ নাম্বারে পাহাড়ি টিলা ধসের ঘটনা ঘটে।
টিলা ধসের কারণে সেখানে থাকা পাহাড়ি গাছ সড়কের উপর পড়ে দুই পাশের চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এসময় সড়কের দু'ধারে গাড়িগুলো যানজটের মধ্যে পড়ে। ব্যস্ততম সড়কটি ৩০ মিনিটের মতো বন্ধ থাকে। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উপস্থিত হয়ে গাছ সরালে সড়কের একপাশ দিয়ে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে টিলা ধসের মাটি সড়ক থেকে সরানো যায়নি।
রাজনগর চা বাগানের শ্রমিক নেতা প্রদীপ যাদব বলেন, “কুলাউড়া যাওয়ার পথে ২৪ নম্বর এসে দেখি সড়ক বন্ধ। সড়কের উপরে পাহাড়ি টিলা ধসে পড়ার সাথে গাছও উপড়ে পড়েছে। পরে সেখান হেঁটে পাহাড় ধস এলাকা পাড়ি দিয়ে অন্য একটি গাড়ি ধরি।”
তিনি বলেন, “টিলা ধসের কারণে সড়কে মাটি রয়েছে। যার জন্য সড়ক পিচ্ছিল হয়ে পড়ে।”
রাজনগর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন ইনচার্জ আলী হোসেন বলেন, “খবর পাওয়ার সাথে সাথে সেখানে গিয়ে সড়কে পড়ে থাকা গাছ কেটে সরিয়ে গাড়ি চলাচলের জন্য ব্যবস্থা করি। সড়কের এক পাশ দিয়ে বর্তমানে গাড়ি চলাচল করছে। সড়কের মাটি সরানো যায়নি।”
ঢাকা/আজিজ/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জনগর সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস