ঢাকায় অপহরণের শিকার যুবক ময়মনসিংহে উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭
Published: 1st, June 2025 GMT
রাজধানী থেকে অপহরণের শিকার এক যুবককে ময়মনসিংহে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে র্যাব। একই সঙ্গে অপহরণ চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ এর সদর দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে শনিবার রাত ১১টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সদর উপজেলার চুরখাই এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহৃত কামরুল হাসানকে উদ্ধার করা হয়। তিনি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ধামাহার শোলাগাড়ী গ্রামের মৃত আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে। কামরুল পাঁচ বছর ধরে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় স্ত্রী ও এক সন্তানকে নিয়ে বসবাস করছেন এবং অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ার করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাহমুদনগর গ্রামের রিফাত হাসান মিন্টু, পাঠানতুলা গ্রামের আশরাফুল ইসলাম, মাহমুদনগর গ্রামের মামুন অর রশিদ, পশ্চিম দাপুনিয়া গ্রামের আল-আমিন, তাতখোড়া গ্রামের মো.
র্যাব জানায়, ঘটনার দিন কামরুল হাসান মালিবাগ থেকে ফকিরের পুলের দিকে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ তার ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের সামনে একটি মাইক্রোবাস এসে দাঁড়ায়। মাইক্রোবাসটির সামনে ‘প্রেস’ লেখা একটি স্টিকার লাগানো ছিল। ১০-১২ জনের একটি দল কামরুলকে জোর করে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে ওই গাড়িতে তুলে নেয়। গাড়িতে চালকসহ ৬ জন ছিল। গাড়িতে তোলার পরপরই তার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং তাকে মারধর করা হয়। অপহরণকারীরা তার কাছে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে এবং টাকা না দিলে হত্যার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে কামরুল টাকা দিতে রাজি হলে তার মোবাইল ফোনটি চালু করে দেওয়া হয়। এরপর তিনি তার গ্রামের এক পরিচিত ভাইকে ফোন করে নিজের বিপদের কথা জানান এবং চার লাখ টাকা দ্রুত ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন। কামরুলের পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি দ্রুত র্যাবকে জানালে সংস্থাটি তাৎক্ষণিক অভিযান শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ময়মনসিংহ সদরের চুরখাই এলাকায় অভিযান চালিয়ে কামরুলকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে র্যাব। এ সময় গ্রেপ্তার করা হয় ৭ অপহরণকারীকে।
এছাড়া অপহরণে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়েছে। গাড়িটি তল্লাশি করে বিভিন্ন ভুয়া পরিচয়ের স্টিকার উদ্ধার করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে সংসদ সদস্যদের গাড়িতে ব্যবহৃত মনোগ্রাম, গাজীপুর পুলিশ, ডিবি, প্রেস, চ্যানেল-১৬, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), আরএএম গার্মেন্ট এবং বিজিএমইএ লেখা লেমিনেটিং করা কাগজপত্র।
ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ সদর দপ্তরের অধিনায়ক নয়মুল হাসান জানান, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীতে সক্রিয় ছিল। তারা বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করত। নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করতে বিভিন্ন সময় গাড়ির সামনে সংসদ সদস্য লেখা লোগো, সাংবাদিক, পুলিশ বা অন্যান্য পেশাজীবী সংগঠনের পরিচয়বাহী স্টিকার ব্যবহার করত। বর্তমানে সংসদ অধিবেশন না থাকায় তারা প্রেস, পুলিশ ও এনবিআর লেখা স্টিকার ব্যবহার করে অপকর্ম করে আসছিল। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান র্যাব কর্মকর্তা নয়মুল হাসান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ অপহরণ উদ ধ র উপজ ল র সদস য ব যবহ
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জলাবদ্ধতা, ঈদযাত্রায় ভোগান্তির আশঙ্কা
কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও এর চেয়ে কম। কয়েকটি স্থানে নালার স্লাব খুলে রাখা হয়েছে। ধীরগতিতে চলছে যানবাহন। কখনো কখনো দীর্ঘ যানজট দেখা দিচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের ভোগড়া থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত এ চিত্র দেখা যায়।
ভোগড়া এলাকায় কথা হয় গাজীপুর মহানগরের ট্রাফিক পুলিশের সদস্য আল আমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, মহাসড়কে পানি জমে থাকায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঢাকা-বাইপাস সড়কে টোল আদায় করায় ধীরগতির কারণে যানজট দীর্ঘ হচ্ছে। পুলিশ সদস্যরা এই যানজট নিরসন করতে হিমশিম খাচ্ছেন।
পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র চার দিন। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করতে রাজধানী ও আশপাশের জেলা থেকে গ্রামের বাড়ি ফিরবেন কর্মজীবী মানুষেরা। রোববার সকাল থেকে গাজীপুরের দুই মহাসড়ক দিয়ে যাত্রীর চাপ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। তবে চলমান বৃষ্টি দীর্ঘায়িত হলে এবং শিল্পকারখানা একসঙ্গে ছুটি হলে যানজটের শঙ্কা করছেন যাত্রী ও পরিবহনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এলাকাবাসী ও ট্রাফিক পুলিশ জানায়, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে গাজীপুরের ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া বাইপাস, চান্দনা চৌরাস্তাসহ আশপাশের সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী ও মহাসড়কের যাত্রীরা। বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির কারণে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যানবাহন চলাচলে ধীরগতি লক্ষ করা গেছে। এ জন্য আশঙ্কা করা হচ্ছে, বৃষ্টি না কমলে এবারের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি পোহাতে হবে ঘরমুখী মানুষদের।
শিল্প–অধ্যুষিত গাজীপুরে ২ হাজার ১৭৬টি নিবন্ধিত কলকারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ১৫৪টি পোশাক কারখানা। এসব কারখানায় কাজ করেন লাখ লাখ কর্মী। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ কারখানা ছুটি হবে ৪ থেকে ৬ জুনের মধ্যে। একসঙ্গে ছুটি হওয়ায় মহাসড়কে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হবে এবং যানজটের সৃষ্টি হতে পারে।
উত্তরবঙ্গের প্রবেশপথ–খ্যাত ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় ও ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া, চান্দনা চৌরাস্তা ধরেই মূলত রাজধানী ও গাজীপুরের লোকজন বাড়ি ফেরেন। ঈদের আগের চাপ এড়িয়ে চলার জন্য অনেকেই পরিবার-পরিজনকে আগেই গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জলাবন্ধতার কারণে যানবাহন চলাচল করছে ধীরগতিতে। গাজীপুর মহনগরীর ভোগড়া বাইপাস এলাকা। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায়