ভবনের বেজমেন্টে জমে থাকা পানিতে দুই শিশুর মৃত্যু
Published: 2nd, June 2025 GMT
কিশোরগঞ্জে নির্মাণাধীন ভবনের বেজমেন্টের গর্তে জমে থাকা পানিতে ডুবে ওবায়দুল্লাহ্ (৪) ও ফাহাদ হোসেন (৫) নামে দুই শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সম্পর্কে তারা মামাত-ফুফাত ভাই।
রবিবার (১ জুন) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার উত্তর মোল্লাপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ওবায়দুল্লাহ্ উত্তর মোল্লাপাড়া গ্রামের মমিন মিয়ার ছেলে। ফাহাদ হোসেন জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার সুখিয়া এলাকার সৌদি প্রবাসী মকবুল হোসেনের ছেলে।
স্বজনরা জানায়, রবিবার বিকালে বাড়ির উঠানে খেলা করছিল ওবায়দুল্লাহ্ ও ফাহাদ। কোন এক সময় স্বজনদের চোখের আড়ালে খেলতে খেলতে বাড়ির পাশে নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের বেজমেন্টের গর্তে বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে পড়ে যায় তারা। তারপর বিকেল থেকে কয়েক ঘণ্টা খোঁজাখুজির পর সন্ধ্যায় বেজমেন্টের গর্তে ভাসমান অবস্থায় ওবায়দুল্লাহ্ ও ফাহাদকে দেখতে পায় স্থানীয়রা। দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
দুটি কোমলমতি শিশুর এমন মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
নিহত ফাহাদের মামা নওফেল বলেন, ‘‘আমার বোন সোমা আক্তার পাকুন্দিয়া থাকে। তার স্বামী মকবুল হোসেন সৌদি প্রবাসী। ঈদ উপলক্ষ্যে আজকে কিশোরগঞ্জে শহরে ব্যাংকে টাকা তুলতে এসেছিলো। ব্যাংক থেকে টাকা তোলা শেষে পরে আমাদের বাড়িতে আসে। কিন্তু এরই মধ্যে এমন মর্মান্তিক ঘটনা আমরা কেউ মেনে নিতে পারছি না। ওর দুটি বাচ্চা ছোট ছেলেটি ঘুমিয়ে ছিল। আর ফাহাদ আমার বড় ভাই মমিনের ছেলের সঙ্গে খেলতে খেলতে এমন দুর্ঘটনার শিকার হলো।’’
এসময় তিনি নবনির্মিত বাড়ির মালিককে দোষারোপ করে তিনি বলেন, ‘‘পাকুন্দিয়ার চরকাওনার স্বপন মিয়া এই বাসাটি করাচ্ছেন। তিনি রাস্তার পাশে কোনরকম নিরাপত্তা বেষ্টনি না দিয়েই কাজ করাচ্ছেন।আর এ কারণেই আজকে আমাদের পরিবারের দুটি নাবালক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।আমরা পুলিশের কাছে এ ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করছি।’’
এদিকে শিশু ওবায়দুল্লাহ’র মা মরিয়ম আক্তার প্রিয় সন্তানের মৃত্যুতে বারবার মুর্চ্ছা যাচ্ছেন।তার আতর্নাদে সবাই স্তব্ধ হয়ে গেছে। একটু স্বাভাবিক হলে তিনি জানান, প্রায় আটবছর পর তার এই সন্তানটির জন্ম হয়। খুব আদরে লালন-পালন করেছেন। সবসময় চোখে চোখেই রাখতেন। কিন্তু আজ কেন তার চোখের আড়ালে এমন হলো, এটা তিনি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। এখনও তিনি পাঁচ মাসের গর্ভবতী।কিন্তু কোনভাবেই তাকে শান্ত করা যাচ্ছে না।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ্ আল মামুন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দুর্ঘটনার স্থানের যাবতীয় তথ্য আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঢাকা/রুমন/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার শপথ ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা যোদ্ধাদের
বিজয়ের মাস ঢাকায় এক হলেন একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর যোদ্ধারা; তাঁরা শপথ নিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার।
আজ শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেরিলা যোদ্ধাদের এই মিলনমেলায় এই বাহিনীর জীবিত সদস্যদের পাশাপাশি শহীদ পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। দিনভর এই আয়োজন করে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন বিশেষ গেরিলা বাহিনী সমন্বয় কমিটি।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে আলাদা গেরিলা বাহিনী গঠন করে অংশ নিয়েছিলেন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের সদস্যরা। কয়েক হাজার গেরিলা যোদ্ধার এই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদ। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বেতিয়ারার যুদ্ধে এই বাহিনীর সদস্যদের আত্মদান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আলোচিত ঘটনা।
স্বাধীনতার পর এই গেরিলা বাহিনীর সদস্যরা মোহাম্মদ ফরহাদের নেতৃত্বে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন। দেড় যুগ আগে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা করেছিল, তাতে এই বাহিনীর সদস্যদের রাখা হয়নি। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনীর সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
শহীদ মিনারে মিলনমেলার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি এই গেরিলা বাহিনীর সদস্য ছিলেন, স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে ভিপি হয়েছিলেন তিনি।
ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ শনিবার একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর মিলনমেলায় সিপিবির সাবেক সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম