মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের সাগরদিঘি পাড়ের কোরবানির পশুর হাটে রাজশাহী থেকে নিয়ে আসা ১৫ মণ ওজনের একটি হরিয়ানা জাতের গরু নজর কেড়েছে সবার। কালচে রঙের কারণে গরুটির নাম রাখা হয়েছে ‘কালো মানিক’। মালিক রুহুল আমিন এটির দাম হাঁকছেন ৯ লাখ টাকা। তবে ক্রেতারা সর্বোচ্চ সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম বলেই চলে যাচ্ছেন।

বাজারে এটি সবচেয়ে বড় গরু হওয়ায় অনেকে কিনতে না পারলেও দেখতে ভিড় করছেন। কালো মানিক ছাড়াও রুহুল আমিন ৪ লাখ থেকে ৮ লাখ টাকার দামের আরও ১৭টি গরু এনেছেন হাটে।

শুধু রুহুল আমিন নন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু ব্যবসায়ী ও খামারিরা গতকাল সোমবার সকাল থেকেই ছোট-বড় গরু, মহিষ ও ছাগল নিয়ে হাটে হাজির হয়েছেন। বাজারে শুরু থেকেই ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে অধিকাংশই গরু দেখে দরদাম করে চলে যাচ্ছেন। বিক্রেতারা বলছেন, ভিড় থাকলেও বিক্রি তুলনামূলক অনেক কম।

গরু ব্যবসায়ী রুহুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, শ্রীমঙ্গলের সাগরদিঘি বাজারে এর আগেও তিনি কয়েকবার এসেছেন। ক্রেতা আসছেন, দরদাম করছেন। কেউ নিচ্ছেন না। তিনি আশা করছেন, ঈদের আগের দিন সব কটি গরুই বিক্রি করে দিতে পারবেন।

বাজারে কথা হয় হবিগঞ্জের মিরপুর থেকে আসা আরেক ব্যবসায়ী সালাম মিয়ার সঙ্গে। তিনি ১৪-১৫ মণ ওজনের ১৫টি ষাঁড় এনেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, প্রতিবছর এই হাটে ভালো গরু বিক্রি হয়, তাই এবারও এসেছেন।

প্রথম দিনের হাট ঘুরে দেখা যায়, গরু দেখতে ও কিনতে লোকজনের ভিড় লেগেই আছে। এসেছেন স্থানীয় রুবেল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমার বাজেট ৮০ হাজার টাকা। গরু পছন্দ হলেও দামে মিলছে না। ঘুরে দেখছি, দরদাম হলে কিনে নেব।’

আরেক ক্রেতা আব্বাস মিয়া বলেন, ‘গরু পছন্দ হয়েছে, দামেও হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হলো ঈদের আগের কয়েক দিন এই গরু রাখার জায়গা বাড়িতে নেই। তাই আর আজ কিনিনি। ঈদের আগের দিন একটা কিনে নিয়ে যাব।’

সাগরদিঘি পশুর হাটের ইজারাদার দুলাল হাজি বলেন, ‘সাগরদিঘি পাড়ে সারা বছরই সপ্তাহে একদিন গরুর হাট বসে। ঈদ এলে সপ্তাহখানেক একটানা গরু–ছাগল ইত্যাদি পশু বেচাকেনা হয়। আমরা এবারে এক লাখের ভেতর গরু কিনলে এক হাজার টাকা হাসিল নিচ্ছি। কোরবানির হাটে কেউ যেন অসুস্থ গরু নিয়ে না আসেন ও কেউ যেন দালালের খপ্পরে পড়ে হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য আমাদের ভলান্টিয়ারেরা কাজ করছেন। তা ছাড়া বাজারে সার্বক্ষণিক পুলিশ নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত আছেন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র হ ল আম ন স গরদ ঘ করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিসিএলে বিদেশি দল, এনসিএলে বিদেশি ক্রিকেটার

দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান নিয়ে প্রশ্ন আজকের নয়। জাতীয় ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ যে মানের হয়, যেভাবে আয়োজন হয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে হরহামেশা। অতীতে সমালোচনার পর কিছুটা মান বেড়েছে। কিন্তু তারপরও ‘আপ টু মার্ক’ হয়নি।

বিশেষ করে ঘরোয়া ক্রিকেটে দিব‌্যি পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা যখন জাতীয় দলে এসে ধুকতে থাকেন তখন তারতম‌্য প্রকটভাবে ফুটে উঠে। এজন‌্য ঘরোয়া ক্রিকেটের মান বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিদেশি ক্রিকেটারকে নিয়ে আসতে চায় বিসিবি। এছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে যুক্ত করতে চায় বিদেশি দল।

বিসিবির পরিচালক ও টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম‌্যান আকরাম খান রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

তিন সপ্তাহের জন্য আসছেন উড, মনোবিদ স্কট

সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার বেলায়েত হোসেন মারা গেছেন

বিসিএল শুরু থেকে ছিল ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রতিযোগিতা। ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন, প্রাইম ব‌্যাংক সাউথ জোন, ইসলামী ব‌্যাংক ইষ্ট জোন ও বিসিবি নর্থ জোন নামে চারটি দল শুরুর কয়েক বছর বিসিএলে অংশ নিয়েছে। পেশাদারিত্বের ঘাটতি, পরিকল্পনার অভাব এবং বাণিজ‌্যিকভাবে লাভবান না হওয়ায় তিনটি ফ্রাঞ্চাইজি ধীরে ধীরে সরে যায়। পরবর্তীতে বিসিবি চারটি দলই নিজস্ব খরচে পরিচালনা করে বিসিএল চালু রাখে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বীতার অভাব বোঝা যায়।

এজন‌্য বিসিবি সামনের আসরে বিদেশ থেকে একটি দল নিয়ে আসতে চায়। শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। বিসিএল যেই সময়ে আয়োজন করতে চাচ্ছে সেই সময়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে ব‌্যস্ত থাকবেন। আফগানিস্তানকে চূড়ান্ত করার পথে হাঁটছে। বিসিবির পুরো খরচেই অতিথি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। বাকি তিনটি দল গঠন করবে বিসিবি।

আকরাম খান বলেছেন, ‘‘আমরা প্রথমবারের মতো বিসিএলে একটি বিদেশি দলকে পেতে যাচ্ছি। হয়তো তারা এ দল হিসেবে আসবে। নয়তো অন‌্য কোনো নামে। এক মাস এই টুর্নামেন্ট চলবে। ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’’

এদিকে জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিদেশি ক্রিকেটার অন্তর্ভূক্ত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় তারা যুক্ত হবেন, কিভাবে আসবেন, পারিশ্রমিক কত হতে পারে সেসব নিয়ে এখনও কোনো উপায় খুঁজতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। তবে ভালোমানের বিদেশি খোঁজার প্রক্রিয়া চলছে।

তাদের পারিশ্রমিক চূড়ান্ত করা, পুরো আসরে অ‌্যাভেইলেভেল থাকবেন কিনা সেসব নিয়েও কাজ হচ্ছে। এজন‌্য আগেভাগে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান না আকরাম।

আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত দুই স্তরে জাতীয় ক্রিকেট লিগের খেলা অনুষ্ঠিত হবে। আট দলে একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার রাখার ইচ্ছা বিসিবির। অতীতে বিদেশি ক্রিকেটার জাতীয় ক্রিকেট লিগে অংশ নিয়েছে। ইমরান ফরহাদ, আমির ওয়াসিমরা খেলেছেন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রথম শ্রেণির এই টুর্মামেন্টে।

মূলত প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি এবং মান বাড়াতে এই উদ‌্যোগ নিতে যাচ্ছে আয়োজকরা। যদিও একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর নিয়ম প্লেয়িং কন্ডিশনে সব সময়ই ছিল, ছিল সর্বশেষ মৌসুমেও। বিভাগীয় দলগুলো আগ্রহ না থাকায় বিসিবিও জোর দেয়নি। তবে এবার বিসিবি বিদেশি ক্রিকেটারকে যুক্ত করবে। পাশাপাশি তাদের পারিশ্রমিক ও সুযোগ সুবিধার বিষয়টিও দেখভাল করবে।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ