কুমিল্লা-সিলেট এবং ব্রাহ্মণবড়িয়া-ঢাকা মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার শহর বাইপাস সড়কের বিরাসার নামক স্থানে গ্যাস সিলিন্ডারবাহী ট্রাক উল্টে-প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। 

বুধবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ট্রাকের প্রায় দুই শতাধিক সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। ঘটনায় খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় শহর বাইপাস সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে।

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা থেকে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বোঝাই একটি ট্রাক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের বর্ডার বাজারের দিকে আসছিল। বর্ডার বাজার পৌঁছার এক কিলোমিটার আগে বিরাসার গ্যাসফিল্ড এলাকায় বাইপাস সড়কের খানাখন্দে ভরা সড়কে সিলিন্ডারবাহী ট্রাকটি উল্টে যানজটে আটকে পড়া একটি প্রাইভেট কারের ওপর ছিটকে পড়ে। এক পর্যায়ে ট্রাক ও প্রাইভেট কারে আগুন ধরে যায়। পরে বিকট শব্দে একটার পর একটা সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হতে থাকে। এসময় আশপাশ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় বাইপাস সড়কে সবধরণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।

খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফায়ার সার্ভিস ও সরাইল ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় একঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ভোর ৪টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে বিকল্প পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে যান চলাচল করে।

প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক মাহাবুব রহমান সাবিক বলেন, আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে সিএনজি নিয়ে লালপুরের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় বিরাসার মোড়ে একটি প্রাইভেট কার রাস্তার খাদে আটকে যায়। এ সময় প্রাইভেটকারের যাত্রীরা ধাক্কাধাক্কি করছিলেন। এর মধ্যে পেছন থেকে গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি একটি ট্রাক এসে প্রাইভেটকারের ওপর উল্টে গিয়ে পড়ে। পরে প্রাইভেট কারের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। পরে ট্রাকে থাকা সিলিন্ডার গুলোতে আগুন ধরতে শুর করে। পরে একে একে সিলিন্ডার গুলোতে বিস্ফোরণ শুরু হয়। পরে আমি দ্রুত ৯৯৯-এ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে জানাই। তিনি জানান, এ দুর্ঘটনা সড়কের খানাখন্দেকর কারণে ঘটেছে।

ঘটনাস্থলের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন জানান, বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে গেলে দেখি রাস্তায় আগুন। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেই। রাস্তার নাজুক অবস্থার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক নিউটন দাস জানান, দুর্ঘটনার পর প্রাইভেটকারের ইঞ্জিন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস বিষয়টি তদন্ত করছে। তদন্তের পরই প্রকৃত কারণ জানা যাবে। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাফর হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। পুলিশ শহরের ভেতর দিয়ে বিকল্পপথে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করে। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সড়কটিতে উদ্ধার কাজ চলছিল বলে তিনি জানান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন ব র হ মণব ড় য় এ ঘটন য় এ সময় সড়ক র র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুতত সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়। যদিও এর আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথায় জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

প্রেস উইং জানায়, জাতীয় ঐক্যমত কমিশন থেকে প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য এবং বহু বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।  

এতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে লক্ষ্য করা হয় যে, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া, গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর  মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে সে জন্য সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণভোটের সময় কখন হবে, গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে, জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্নমতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে ঐক্যমত কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরী ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভা অভিমত ব্যক্ত করে।

এসব ক্ষেত্রে ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে ( সম্ভব  হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে) সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। বলেও উল্লেখ করা হয়। পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যেকোনো সুযোগ নাই সেটাও সবার বিবেচনায় রাখার জন্য বলা হয়।

সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা না পেলে কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে এই বিষয়েও আমাদের একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে—এ প্রত্যাশা করছি। ওনারা যদি আলাপ-আলোচনা করেন, আমাদের জন্য কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়। ওনারা যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।” 

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ