বাজেট বিনিয়োগ ও ব্যবসাবান্ধব নয়: এফআইসিসিআই

সমকাল প্রতিবেদক
‘কিছু নীতি সংস্কারের পদক্ষেপ থাকলেও সার্বিক নীতির ধারাবাহিকতা না থাকায় ঘোষিত বাজেট বিনিয়োগবান্ধব নয়। একদিকে কিছু কর বা নীতি ছাড় দেওয়া হলেও অন্য কিছু কর বা নীতি জটিলতায় তার সুফল মিলবে না। ফলে সরকার যখন বিদেশি আকৃষ্ট করতে চাইছে, তখন এমন নীতি-বিশৃঙ্খলার কারণে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম।’

বুধবার বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এমন মন্তব্য করেছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)। রাজধানীর গুলশানস্থ সংগঠনটির নিজস্ব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন এফআইসিসিআই সভাপতি এবং ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও এমডি জাভেদ আখতার, সাবেক দুই সভাপতি নাসের এজাজ বিজয় এবং রূপালী হক চৌধুরী। বাজেটের সংক্ষিপ্তসার উপস্থাপন করেন কর বিশেষজ্ঞ স্নেহাশীষ বড়ুয়া।

এফআইসিসিআই সভাপতি জাভেদ আখতার বলেন, ‘এ বাজেট অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার বাজেট, প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে করা বাজেট নয়। এ বাজেট প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য না থাকায় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ নিয়ে আসবে না। বিনিয়োগ না আসলে নিয়ে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না। যথেষ্ট পদক্ষেপ না থাকায় মূল্যস্ফীতিও কমবে না ‘

তিনি বলেন, ‘যারা দেশের আইন মেনে স্বচ্ছতার সঙ্গে সরকারকে বেশি রাজস্ব দিচ্ছে, সরকার তাদের ওপরই বেশি বেশি করভার চাপাচ্ছে।’

এফআইসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘লেনদেনে কর ১ শতাংশে উন্নীত করার ফলে যারা আইন মানে না, লেনদেনে স্বচ্ছতা রাখে না, তারা বিক্রি কম দেখাবে। ফলে বাড়তি রাজস্ব আদায়ের চাপ আসবে, সেই বিদেশি কোম্পানিগুলোর ওপর যারা কর দেয়।’ 

সরকারকে করজাল বাড়িয়ে রাজস্ব আদায়ের দিকে জোর দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বার্জার পেইন্টেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী হক চৌধুরী বলেন, ‘ছোটো-খাটো পরিবর্তন করে সরকারের কতটা আয় বাড়ছে জানি না, তবে অনেক শিল্পের ক্ষতি  হচ্ছে। নীতির ধারাবাহিকতা নেই।’

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এমডি নাসের এজাজ বিজয় বলেন, ‘গত বছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৯ শতাংশ বাড়িয়ে আগামী অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও বাস্তব আয়ের তুলনায় রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৩৫ শতাংশ। বাড়তি কর চাপ বাড়বে, যারা কর দেয় তাদের ওপর।’

তিনি বলেন, ‘কর বাড়ালেই সরকারের রাজস্ব বাড়ে না। এর ভালো উদাহরণ বেভারেজ খাতে করারোপ করার পর থেকে গত কয়েক বছর ধরে এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় কমেছে। শিশু খাদ্য ও বেভারেজ পণ্যের ওপর নতুন করে আমদানি কর ও শুল্ক বাড়ানো ঠিক হয়নি বলে মত দেন তিনি।’

বাজেট বিশ্লেষণে স্নেহাশীষ বড়ুয়া বলেন, ‘রাজনৈতিক যে কোনো পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি চাপে ফেলা হয় ব্যবসায়ীদের।’ 

তিনি বলেন, ‘‘বাজেট নীতি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটা ‘সিগন্যাল’। বিনিয়োগকারীদের কাছে যেন খারাপ ‘সিগন্যাল’ না যায়, সে চেষ্টা করা উচিত।’’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র লক ষ য সরক র র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার শপথ ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা যোদ্ধাদের

বিজয়ের মাস ঢাকায় এক হলেন একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর যোদ্ধারা; তাঁরা শপথ নিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার।

আজ শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেরিলা যোদ্ধাদের এই মিলনমেলায় এই বাহিনীর জীবিত সদস্যদের পাশাপাশি শহীদ পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। দিনভর এই আয়োজন করে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন বিশেষ গেরিলা বাহিনী সমন্বয় কমিটি।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে আলাদা গেরিলা বাহিনী গঠন করে অংশ নিয়েছিলেন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের সদস্যরা। কয়েক হাজার গেরিলা যোদ্ধার এই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদ। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বেতিয়ারার যুদ্ধে এই বাহিনীর সদস্যদের আত্মদান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আলোচিত ঘটনা।

স্বাধীনতার পর এই গেরিলা বাহিনীর সদস্যরা মোহাম্মদ ফরহাদের নেতৃত্বে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন। দেড় যুগ আগে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা করেছিল, তাতে এই বাহিনীর সদস্যদের রাখা হয়নি। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনীর সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

শহীদ মিনারে মিলনমেলার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি এই গেরিলা বাহিনীর সদস্য ছিলেন, স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে ভিপি হয়েছিলেন তিনি।

ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ শনিবার একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর মিলনমেলায় সিপিবির সাবেক সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

সম্পর্কিত নিবন্ধ