দলের কাউকে ব্যক্তিগতভাবে টাকা না দেওয়ার অনুরোধ এনসিপির
Published: 4th, June 2025 GMT
নিজেদের আর্থিক ও তহবিল পরিচালনার নীতিমালা তৈরি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির নেতারা বলছেন, তাঁরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির বিষয়টি নিশ্চিত করতে চান। ওয়েবসাইটে গিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অথবা সরাসরি রসিদ সংগ্রহ করে এনসিপিকে আর্থিক অনুদান দেওয়া যাবে। দলের কাউকে ব্যক্তিগতভাবে টাকা না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে এনসিপি।
এনসিপির আর্থিক নীতিমালা ঘোষণা ও ক্রাউড ফান্ডিং কার্যক্রম বিষয়ে জানাতে আজ বুধবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে দলটির পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়। রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে দলের আর্থিক ও তহবিল পরিচালনা নীতিমালার সারাংশ উপস্থাপন করেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব ও কোষাধ্যক্ষ এস এম সাইফ মোস্তাফিজ। তিনি বলেন, কোনো কালো টাকা, অজানা উৎস, বিদেশি সরকার বা অপরাধসংশ্লিষ্ট অর্থ একেবারেই নিষিদ্ধ।
পরে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এনসিপির আহ্বায়ক মো.
জুলাই আন্দোলন ক্রাউড ফান্ডিং বা গণচাঁদা থেকে পরিচালিত হয়েছিল উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এনসিপি তাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনার ওপর দাঁড় করাতে চাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এটাকে এখন ডিজিটাল একটা ফরম্যাটে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। ট্র্যাডিশনাল গণচাঁদা অব্যাহত থাকবে আর ডিজিটাল সিস্টেমে আমরা দেশ ও দেশের বাইরে থেকে একটা ফান্ডিং পাব।’
যাঁরা এনসিপিকে সাঁহায্য করতে চান, তাঁদের কেউ যেন ব্যক্তিগতভাবে কাউকে টাকা না দেন, সেই আহ্বানও জানান নাহিদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের ফাইন্যান্স টিম ও অ্যাকাউন্ট নম্বরের বাইরে কোনো প্রতিষ্ঠান বা কারও কাছে এনসিপি বা আমাদের ছাত্রদের নাম কেউ যদি ব্যবহার করেন, সেটিও আমাদের দপ্তরে, শৃঙ্খলা কমিটিকে জানালে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। কারণ, অনেক জায়গায় আমাদের নাম ব্যবহার করে অনেক ধরনের অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আবার একই সঙ্গে আমরা মিডিয়া ট্রায়ালেরও শিকার হয়েছি।’
নাহিদ বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পেশিশক্তির ব্যবহার, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি সবকিছুর মূলে অর্থ। দেশের রাজনৈতিক দলগুলো তাদের আর্থিক বিষয় প্রকাশ করে না। দলগুলোয় আর্থিক স্বচ্ছতার বিষয়টি নিয়ে আসতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে এটার জন্য কঠোর হতে হবে।
আয়-ব্যয়ের নিরীক্ষা হবে
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ওয়েবসাইটে (https://donate.ncpbd.org) গিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এনসিপির কেন্দ্রীয় তহবিলে দলের শুভাকাঙ্ক্ষী, সদস্য ও সাধারণ মানুষ অনুদান দিতে পারবেন। একই সঙ্গে সরাসরি এনসিপির কার্যালয়ে রসিদ সংগ্রহ করার মধ্য দিয়ে অনুদান দেওয়া যাবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আখতার বলেন, এনসিপির সদস্যরা এককালীন ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা ও তদূর্ধ্ব পরিমাণ টাকা দলকে দিয়েছেন। এই এককালীন চাঁদা, সদস্যদের মাসিক চাঁদা, সদস্য ফরম বিক্রি থেকে পাওয়া অর্থ, শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুদানের মধ্য দিয়ে দলের বর্তমান অস্থায়ী কার্যালয়ের ভাড়াসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘যখন আমরা নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য যাব, তখন আমাদের পূর্ণাঙ্গ অডিট সেখানে প্রকাশ করব। একই সঙ্গে আমাদের আর্থিক নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে অনুমোদিত অডিট ফার্মের মধ্য দিয়ে আয়-ব্যয়ের হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে। আমাদের ওয়েবসাইটেও সেটা পাওয়া যাবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, তিন মাস, ছয় মাস ও বার্ষিক ভিত্তিতে দলের আয়-ব্যয়ের নিরীক্ষা করা হবে। তাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কোষাধ্যক্ষ এস এম সাইফ মোস্তাফিজ লিখিত বক্তব্যে বলেন, দলের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতার জন্য প্রতিটি অনুদানে স্বয়ংক্রিয় রসিদ, অনলাইন এন্ট্রি ও ইউনিক আইডি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাঁচ হাজার টাকার বেশি দানের ক্ষেত্রে দাতার পরিচয় গোপন রাখা হবে। তবে দলীয়ভাবে সেটা সংরক্ষণ করা হবে। প্রয়োজন হলে সেটা প্রকাশ করা হবে।
এনসিপির এই নেতা বলেন, ওয়েবসাইটের ড্যাশবোর্ডে সবাই লাইভ দেখতে পারবেন যে মোট কত টাকা অনুদান হচ্ছে এবং কোন জেলা থেকে কত টাকা আসছে। তিনি বলেন, এনসিপি ১০০ টাকা মূল্যের সদস্য ফরম বিক্রি করছে। ৭০ হাজার ফরম ইতিমধ্যে সারা দেশে চলে গেছে, আরও ৫০ হাজার ঈদুল আজহায় যাচ্ছে। এখান থেকে তাঁরা প্রায় দুই কোটি টাকা পাবেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব দ র আর থ ক এনস প র ব যবস থ পর চ ল অন দ ন আম দ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
বন্ধুদের নিয়ে ‘উড়াল’
আট বছর আগে জোবায়দুর রহমানকে গল্পটা শুনিয়েছিলেন সম্রাট প্রামানিক। জোবায়দুর তখন সহকারী পরিচালক, স্বপ্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা হওয়া। কয়েক বছর পর সত্যি সত্যিই যখন সিনেমা নির্মাণের কথা ভাবলেন, শুরুতেই তাঁর সেই গল্পের কথা মনে পড়ল। সম্রাটকে ফোন করলেন জোবায়দুর, চায়ের দোকানে বসে আবারও গল্পটা শুনলেন। ঠিক করলেন, এ গল্প থেকেই ছবি বানাবেন তিনি।
পেশাদার কোনো প্রযোজকের কাছে যাননি জোবায়দুর, নিজেরাই স্বাধীনভাবে ছবিটি নির্মাণ করেছেন; পাশে ছিলেন ভাই-বন্ধুরা। নির্মাতা বললেন, ‘এটাই আমার প্রথম নির্মাণ, আগে কোনো কাজ করিনি। কী করা যায়? আশপাশের ভাই–বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করলাম। শরীফ সিরাজ, সম্রাট প্রামানিক, জহিরুল ইসলামসহ তিন-চারজন মিলে কাজটা শুরু করি।’ তাঁরা কেন বিনিয়োগ করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে নির্মাতা জোবায়দুর বলেন, ‘গল্পের কারণে আগ্রহী হয়েছেন তাঁরা।’
শুটিংয়র ফাঁকে তোলা ছবি