ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দিতে যানজট নেই, ঈদযাত্রায় স্বস্তি
Published: 5th, June 2025 GMT
ঈদে ঘরমুখী মানুষ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি ভোগান্তি ছাড়াই পার হচ্ছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এখানে সড়ক ফাঁকা। কোনো যানজট নেই।
যেকোনো ছুটি বা উৎসবে মহাসড়কের দাউদকান্দি অংশে যানজট শুরু হয়। যানবাহনের চাপ বাড়ায় গতকাল বুধবার সকাল ৮টায় চট্টগ্রামগামী লেনে দাউদকান্দির গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় ২৯ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে ধীরে ধীরে যানজট কমে যায়। গতকাল রাতে কিছুটা যানজট হলেও সকালে তা দূর হয়ে যায়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি অংশে মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা দিয়ে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলার মানুষ ঢাকায় যাওয়া-আসা করেন। একসঙ্গে অসংখ্য যানবাহন পারাপারের কারণে টোল প্লাজায় অনেক সময় যানবাহন পারাপারে ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যায়। সেখানেও যেকোনো সময় যানজট তৈরি হয়।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় দাউদকান্দির হাসানপুর এলাকায় দুর্ঘটনায় পড়ে একটি কাভার্ড ভ্যান। মহাসড়কের পাশের খাদ থেকে গাড়িটি ওঠানোর সময় সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। তখন যানজট ধীরে ধীরে মেঘনা-গোমতী সেতু থেকে গৌরীপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটারে পৌঁছায়। তবে দিবাগত রাত ২টার পর থেকে চট্টগ্রামগামী লেনে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদ খান চৌধুরী বলেন, মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ যানজটমুক্ত রাখতে হাইওয়ে পুলিশ রাতদিন দায়িত্ব পালন করছে। ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়কের দাউদকান্দি অংশে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। হাইওয়ের পুলিশের ৪০ জন সদস্যের পাশাপাশি খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি থেকে আসা ২০ জন অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য, দাউদকান্দি উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া ২০ জন আনসার ও সেনাবাহিনীর চারটি দল রাত-দিন দায়িত্ব পালন করছে। এ ছাড়া দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহন দ্রুত অন্যত্র সরাতে ছয়টি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বেসরকারি রেকার রাখা হয়েছে।
চালক ও যাত্রীদের স্বস্তি
ঢাকা-কচুয়া রুটের লোকাল পরিবহনের বাসের চালক মামুন মিয়ার সঙ্গে আজ সকাল সাড়ে ৭টায় গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে কথা হয়। তিনি বলেন, তিনি গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় দাউদকান্দির গৌরীপুর থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় রওনা দেন। দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতু পার হয়ে যানজটে আটকা পড়েন। পরে তিনি রাত ২টায় ঢাকার সায়েদাবাদে পৌঁছান। আজ ভোর ৫টায় আবার ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে রওনা দিয়ে সকাল সাড়ে ৭টায় গৌরীপুরে পৌঁছেছেন।
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা এরশাদ আলী বাসে করে ঢাকা থেকে আজ সকাল পৌনে ৮টায় দাউদকান্দির পেন্নাই এলাকায় পৌঁছেছেন। তিনি বলেন, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে সকাল ৬টায় বাসে ওঠেন। পথে হালকা যানজট পেয়েছেন। এতে ৫০ মিনিটের মহাসড়ক পৌনে দুই ঘণ্টায় পৌঁছেছেন।
নোয়াখালীর সেনবাগের সিরুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার চাকরি করেন। তিনি বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ৩টায় সাভার থেকে বাসে ওঠেন। আজ সকাল ৮টায় গৌরীপুরে পৌঁছেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র দ উদক ন দ য় দ উদক ন দ দ উদক ন দ র গতক ল য নজট
এছাড়াও পড়ুন:
পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করল পাকিস্তান-সৌদি আরব
পাকিস্তানের ওপর কেউ হামলা চালালে সৌদি আরব তাদেরকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে। আবার সৌদি আরবের ওপর কেউ আগ্রাসন চালালে পাকিস্তানও সৌদি আরবকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে। ঠিক এমনই একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সৌদি আরব ও পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান।
জিও নিউজের খবর অনুসারে, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সৌদি আরব সফরের সময় এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে শাহবাজের বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে এ চুক্তির কথা জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
এক সপ্তাহে সৌদি আরবে ২০ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার
২০ বছর কোমায় থাকার পর মারা গেলেন সৌদির ‘ঘুমন্ত যুবরাজ’
চুক্তি স্বাক্ষরের পর উভয় দেশ একটি যৌথ বিবৃতিতে জানায় যে, ভ্রাতৃত্ব, ইসলামিক সংহতি ও অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থের ভিত্তিতে এবং প্রায় আট দশকের দীর্ঘ অংশীদারত্বের ওপর দাঁড়িয়ে দুই পক্ষ কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
ক্রাউন প্রিন্সের আমন্ত্রণেই শরিফ সৌদি আরব সফরে গেছেন বলেও তাদের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সৌদি আরবের সঙ্গে হওয়া এই প্রতিরক্ষা চুক্তির ফলে এখন ‘এক দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসনকে উভয়ের বিরুদ্ধে আগ্রাসন’ বিবেচনা করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা এই চুক্তিকে 'ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন অগ্রগতি' বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, এটি পাকিস্তান ও সৌদি আরবের সম্পর্ককে আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতিতে উন্নীত করেছে। তারা বলছেন যে, এই পদক্ষেপ কেবল পাকিস্তান-সৌদি সম্পর্ককে দৃঢ় করছে না, বরং দক্ষিণ এশিয়া এবং মুসলিম বিশ্বের জন্যও এর গুরুত্ব রয়েছে। এটি পাকিস্তানকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার সবচেয়ে সক্ষম মুসলিম শক্তি হিসেবে তুলে ধরেছে।
বিশ্লেষকরা আরও বলছেন যে, সাম্প্রতিক আঞ্চলিক অস্থিরতা, ইসরায়েলের হামলা, দোহা সম্মেলন এবং আরব বিশ্বে সার্বভৌমত্ব নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এই চুক্তির তাৎপর্য অনেক বেশি। এটি প্রমাণ করে যে, বর্ধিত হুমকির সময়ে সৌদি আরব পাকিস্তানকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে বিশ্বাস করছে।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখানো হয়, চুক্তি স্বাক্ষরের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে আলিঙ্গন করতে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির, যাকে দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে দেখা হয়।
ঢাকা/ফিরোজ