ঈদে ঘরমুখী মানুষ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি ভোগান্তি ছাড়াই পার হচ্ছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এখানে সড়ক ফাঁকা। কোনো যানজট নেই।

যেকোনো ছুটি বা উৎসবে মহাসড়কের দাউদকান্দি অংশে যানজট শুরু হয়। যানবাহনের চাপ বাড়ায় গতকাল বুধবার সকাল ৮টায় চট্টগ্রামগামী লেনে দাউদকান্দির গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় ২৯ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে ধীরে ধীরে যানজট কমে যায়। গতকাল রাতে কিছুটা যানজট হলেও সকালে তা দূর হয়ে যায়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি অংশে মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল প্লাজা দিয়ে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলার মানুষ ঢাকায় যাওয়া-আসা করেন। একসঙ্গে অসংখ্য যানবাহন পারাপারের কারণে টোল প্লাজায় অনেক সময় যানবাহন পারাপারে ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যায়। সেখানেও যেকোনো সময় যানজট তৈরি হয়।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় দাউদকান্দির হাসানপুর এলাকায় দুর্ঘটনায় পড়ে একটি কাভার্ড ভ্যান। মহাসড়কের পাশের খাদ থেকে গাড়িটি ওঠানোর সময় সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। তখন যানজট ধীরে ধীরে মেঘনা-গোমতী সেতু থেকে গৌরীপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটারে পৌঁছায়। তবে দিবাগত রাত ২টার পর থেকে চট্টগ্রামগামী লেনে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদ খান চৌধুরী বলেন, মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ যানজটমুক্ত রাখতে হাইওয়ে পুলিশ রাতদিন দায়িত্ব পালন করছে। ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়কের দাউদকান্দি অংশে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। হাইওয়ের পুলিশের ৪০ জন সদস্যের পাশাপাশি খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি থেকে আসা ২০ জন অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য, দাউদকান্দি উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া ২০ জন আনসার ও সেনাবাহিনীর চারটি দল রাত-দিন দায়িত্ব পালন করছে। এ ছাড়া দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহন দ্রুত অন্যত্র সরাতে ছয়টি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বেসরকারি রেকার রাখা হয়েছে।

চালক ও যাত্রীদের স্বস্তি

ঢাকা-কচুয়া রুটের লোকাল পরিবহনের বাসের চালক মামুন মিয়ার সঙ্গে আজ সকাল সাড়ে ৭টায় গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ডে কথা হয়। তিনি বলেন, তিনি গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় দাউদকান্দির গৌরীপুর থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় রওনা দেন। দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতু পার হয়ে যানজটে আটকা পড়েন। পরে তিনি রাত ২টায় ঢাকার সায়েদাবাদে পৌঁছান। আজ ভোর ৫টায় আবার ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে রওনা দিয়ে সকাল সাড়ে ৭টায় গৌরীপুরে পৌঁছেছেন।

কুমিল্লার হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা এরশাদ আলী বাসে করে ঢাকা থেকে আজ সকাল পৌনে ৮টায় দাউদকান্দির পেন্নাই এলাকায় পৌঁছেছেন। তিনি বলেন, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে সকাল ৬টায় বাসে ওঠেন। পথে হালকা যানজট পেয়েছেন। এতে ৫০ মিনিটের মহাসড়ক পৌনে দুই ঘণ্টায় পৌঁছেছেন।

নোয়াখালীর সেনবাগের সিরুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার চাকরি করেন। তিনি বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ৩টায় সাভার থেকে বাসে ওঠেন। আজ সকাল ৮টায় গৌরীপুরে পৌঁছেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র দ উদক ন দ য় দ উদক ন দ দ উদক ন দ র গতক ল য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ