কোন ডায়েট আপনার উপযোগী, বুঝবেন কী করে?
Published: 5th, June 2025 GMT
সুস্থ জীবনযাপনের মূল ভিত্তি হলো সুস্থ খাদ্যাভ্যাস। সেই সঙ্গে সঠিক পুষ্টিও নিশ্চিত করা উচিত। সঠিক পুষ্টি পেতে ছয় ধরনের খাদ্য উপাদান, যেমন কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, মিনারেল ও পানি রোজ গ্রহণ করতে হবে, সঠিক মাত্রায়। সব খাবারে সব রকমের পুষ্টি উপাদান থাকে না। তাই আলাদা আলাদা খাবার দিয়ে বিভিন্ন রকমের প্রয়োজনীয় উপাদান দেহে সরবরাহ করতে হয়। কোনো উপাদানের ঘাটতি হলে তা বিরূপ প্রভাব ফেলে স্বাস্থ্যের ওপর।
খাদ্যাভ্যাস আমাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা, ঘুম, মেজাজ-মর্জি, ওজন, বিপাকক্রিয়া ইত্যাদির ওপর প্রভাব ফেলে। বিভিন্ন অসংক্রামক ব্যাধি, যেমন ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, ক্যানসার, হরমোনজনিত সমস্যার পেছনে আছে মন্দ খাদ্যাভ্যাস।
উচ্চতা ও বয়স অনুযায়ী আদর্শ ওজন বজায় রাখা প্রয়োজন। বাড়তি ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম কিংবা শরীরচর্চার পাশাপাশি ডায়েট করতে হবে। বলা হয় যে ওজন কমাতে ডায়েটের ভূমিকা ৭০ শতাংশ আর বাকি ৩০ শতাংশ ব্যায়াম ও অন্যান্য জীবনাচরণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। সুতরাং ওজন কমাতে, রক্তে শর্করা বা চর্বির পরিমাণ কমাতে, হৃদ্রোগ প্রতিরোধে সবার আগে খাবারে লাগাম টানতে হবে। ওজনাধিক্য থাকলে দৈনিক খাদ্যতালিকা থেকে ধীরে ধীরে ক্যালরি কমাতে হবে।
এসব কারণে আজকাল মানুষ ডায়েট বিষয়ে সচেতন। তাই বর্তমানে প্রচলিত হয়েছে নানা ধরনের ডায়েট ও জীবনযাপনের পরামর্শ। ইন্টারনেটের যুগে আমরা সহজেই এসব নিয়ে জানতে পারছি এবং নিজেদের জীবনে প্রয়োগ করতে চেষ্টা করছি। কিন্তু মনে রাখবেন, নানা ধরনের ডায়েট প্রচলিত থাকলেও কার জন্য কোনটা প্রযোজ্য আর কার জন্য কোনটা ক্ষতিকর, তা বুঝেশুনেই ডায়েট করতে হবে। একেক ধরনের ডায়েটের আছে একেক রকম উপকার। ডায়েট সম্পর্কে সঠিকভাবে না জেনে অনেকেই অন্ধের মতো অনুসরণ করে নিজের ক্ষতি ডেকে আনছেন। তবে যেকোনো ডায়েট অনুসরণ করার আগে বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যাঁরা এরই মধ্যে ওজন কমানোর কথা ভাবছেন কিন্তু কোন ডায়েট অনুসরণ করবেন বুঝতে পারছেন না, তাঁরা কোন কোন ডায়েট এখন বিশ্বব্যাপী সমাদৃত, সে সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংবর্তমানে এটি বেশ জনপ্রিয়। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এই ডায়েটে বেশ কিছু সময় ফাস্টিং বা উপবাসে থাকতে হবে৷ নানা রকম পদ্ধতি অনুসরণ করে এই ডায়েট করা হয়। যেমন টাইম রেস্ট্রিকটেড ফাস্টিং পদ্ধতিতে দিনের কয়েক ঘণ্টা খাওয়া যাবে আর বাকি সময় না খেয়ে থাকতে হবে। ১৬/৮ পদ্ধতিতে ৮ ঘণ্টা খাওয়াদাওয়া করা যাবে কিন্তু নির্দিষ্ট ১৬ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হবে। যে সময়টুকু ফাস্টিং করা হবে, সে সময় শরীর জমা করা চর্বি ব্যয় করে শক্তিতে রূপান্তরিত করবে। তবে অনেকের একটা ভুল ধারণা যে ওই ৮ ঘণ্টা যা খুশি খাওয়া যাবে। তা কিন্তু না। এ সময় সুষম ও পরিমিত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের আরেকটি পদ্ধতি হলো ৫: ২। এতে সপ্তাহে ৫ দিন নির্দিষ্ট পরিমাণে স্বাভাবিক খাবার খেয়ে বাকি দুই দিন ক্যালরি কমিয়ে ৫০০-৬০০তে নামিয়ে আনা হয়। অলটারনেট ডে ফাস্টিংয়ে এক দিন পর পর উপবাস করার নিয়ম। ‘ওয়ান্স আ মিল’ পদ্ধতিতে সারা দিনে একবার খাবার কথা বলা হয়। তবে যে পদ্ধতিতেই উপবাস করুন না কেন, আগে পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কিটো ডায়েটকিটো ডায়েটে শর্করার পরিমাণ রাখা হয় খুবই কম আর তা পূরণ করতে বাড়ানো হয় চর্বির পরিমাণ। কিটো ডায়েটে দৈনিক চাহিদার ৭০ শতাংশ চর্বি থেকে গ্রহণ করা হয়, যেখানে সুষম খাবারে ৩০ শতাংশের বেশি চর্বি গ্রহণ উৎসাহিত করা হয় না। কিটো ডায়েট মূলত মৃগীরোগ বা এপিলেপসি রোগীদের দেওয়া হতো। কিন্তু ওজন কমানোর জন্য বর্তমানে এ ডায়েট বেশ জনপ্রিয়। এ ডায়েটে স্বল্প পরিমাণ শর্করার উৎস হলো শাকসবজি ও ফল। ভাত, আটা ও আলুর মতো শর্করা কিটো ডায়েটে খাওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। তবে কিটো ডায়েটে অতিরিক্ত চর্বি গ্রহণ করার কারণে ফ্যাটি লিভার, হার্টের রোগ ও কিডনিতে সমস্যাসহ নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এই ডায়েট দীর্ঘদিনের জন্য বাস্তবসম্মত নয়। চুল ও ত্বকের সুস্বাস্থ্য ব্যাহত হতে পারে। কিটো ডায়েট করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
মেডিটেরিয়ান ডায়েটসবচেয়ে জনপ্রিয়, সবচেয়ে উপকারী এবং দীর্ঘদিন চালিয়ে যাওয়ার উপযোগী ডায়েট প্ল্যানগুলোর একটি হলো মেডিটেরিয়ান ডায়েট। এতে নানা রকমের ফল, শাকসবজি ও মাছের ওপরে বেশি জোর দেওয়া হয়। শর্করার উৎস হিসেবে ব্যবহার করা হয় হোলগ্রেন কার্ব বা গোটা শস্যদানা। উপকারী চর্বি ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ মাছ, বিনস বা বীজজাতীয় খাবার মেডিটেরিয়ান ডায়েটের বৈশিষ্ট্য। পরিমিত বাদাম আর অলিভ অয়েলের সমন্বয়ে এই ডায়েটে পাওয়া যায় ভালো ফ্যাট। চিনিজাতীয় খাবার ও লাল মাংস একেবারেই সীমিত রাখা হয়। বিশ্বজুড়ে মেডিটেরিয়ান ডায়েটকে চিকিৎসকেরা হার্ট সুস্থ রাখার জন্য আদর্শ ডায়েট বলে মনে করে থাকেন।
ভেগান ডায়েটনতুন প্রজন্মের কাছে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভেগান খাদ্যাভ্যাস। আজকাল পরিবেশবাদীসহ অনেকেই এ ধরনের ডায়েটের দিকে ঝুঁকছেন। মাছ, মাংস, ডিম তো বটেই, দুগ্ধজাত কোনো খাবারও এই ডায়েটে নেই। মানে এটি প্রাণিজ উৎস থেকে মুক্ত। ভেগান ডায়েট করলে শরীর সুস্থ থাকে, নিয়ন্ত্রণে থাকে ওজনও। কিন্তু এ ধরনের ডায়েটের কিছু সমস্যাও আছে। ভেগান ডায়েট শুরু করার আগে সেগুলো জেনে নেওয়া জরুরি। যেমন উদ্ভিজ্জ খাবারে প্রোটিন থাকে কিন্তু শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি মেটাতে তা পর্যাপ্ত নয়। মাছ, মাংস, ডিম, দুধে প্রোটিনের পরিমাণ সর্বোচ্চ এবং এগুলো প্রথম শ্রেণির প্রোটিন। তাই দীর্ঘদিন ধরে প্রাণিজ প্রোটিন না খেলে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হতে পারে। এ ছাড়া দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার না খাওয়ায় প্রোবায়োটিক উপাদানের অভাবে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ও হজমশক্তি কমে যেতে পারে। প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সয়া, ডাল, বীজ, বাদাম ইত্যাদি খেতে হবে।
ওম্যাড ডায়েটওম্যাড ডায়েটকে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের আরেক পদ্ধতিও বলা যেতে পারে। এই ডায়েটে শুধু এক বেলা খাওয়া যায়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এক ঘণ্টা খাওয়াদাওয়া করে বাকি ২৩ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হবে৷ বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, চাইলে এক বেলা নিজের যেকোনো পছন্দের ক্যালরিযুক্ত খাবার খেলেও সমস্যা নেই। তবে কোন বেলা খাওয়াদাওয়া করা যাবে, তা নিজের ওপর নির্ভর করছে৷ এ ডায়েট সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। ওজন কমানোর পাশাপাশি এই ডায়েট শরীরের অনেক ক্ষতিও করে, যেমন স্থায়ী দুর্বলতা, ত্বকের নানাবিধ সমস্যা, চুল পড়ে যাওয়া, নখ ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। কারণ, এক ঘণ্টা খাবার খেয়ে কখনোই শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি নেওয়া সম্ভব নয়। দীর্ঘদিন পুষ্টির ঘাটতি হওয়ার কারণে শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এ ডায়েট অনুসরণ করতে চাইলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে।
ড্যাশ ডায়েটফল, সবজি, শস্য গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। আর সীমিত পরিমাণে চর্বিহীন লিন মিট বা মাংস, হাঁস-মুরগি, মাছসহ কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম বেশি থাকা সত্ত্বেও ড্যাশ ডায়েটে সোডিয়ামের পরিমাণ কমানো হয়। সকাল ও বিকেলের নাশতায় থাকে তাজা ফলমূল। মাখন, মার্জারিন, সালাদ ড্রেসিংজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। খেতে হলে লো ফ্যাট, লো সোডিয়াম খাবার বেছে নিতে হবে। প্রতিদিন তালিকায় লো ফ্যাট বা স্কিমড মিল্ক (ফ্যাট তোলা দুধ) বা দুগ্ধজাত খাবার রাখা যাবে। স্ন্যাকস হিসেবে চিপস, ফাস্ট ফুড বা ডেজার্ট–জাতীয় খাবারের বদলে বেছে নিন লবণহীন বাদাম, টকদই, কিশমিশ, পপকর্ন ইত্যাদি। যেকোনো খাবার কেনা বা অর্ডার দেওয়ার আগে লবণের পরিমাণ দেখে নিন। সয়াসস, টেস্টিং সল্ট, কেচাপ, আচার ইত্যাদি দিয়ে তৈরি খাবারে লবণ বেশি থাকে। তাই এ ধরনের খাবার এড়িয়ে যেতে হবে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য ড্যাশ ডায়েট একটি আদর্শ পদ্ধতি।
প্রোটিনসমৃদ্ধ ডায়েটএই ডায়েট অনুসরণ করলে খাওয়ার প্রবণতা কমে। কারণ, প্রোটিন দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। মাংস ও দুগ্ধজাত খাবার এখনো প্রোটিনের জনপ্রিয় উৎস কিন্তু যারা মাংস খেতে পারেন না বা খেতে চান না, তাদের জন্য ভেগান প্রোটিন পাউডারও আছে। এ ছাড়া তরল ডিমের সাদা অংশ থেকে তৈরি ডিমের সাদা প্রোটিন পাউডারও আছে। প্রোটিন খাদ্যের উদাহরণের মধ্যে রয়েছে চর্বিহীন গরুর মাংস, মুরগি বা হাঁস, স্যামন, টুনা, ডিম ও সয়া। তবে অতিরিক্ত প্রোটিন অনেক সময় কিডনির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
প্যালিও ডায়েটপ্যালিওলিথিক বা প্যালিও বর্তমানে জনপ্রিয় একটি ডায়েট। এই ডায়েটে খাবার অনেক কম থাকে। ফল, শাকসবজি, মাংস, মুরগি, মাছ, বাদাম, বীজ খাওয়া গেলেও দুগ্ধ, শস্য, লেবু ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয় এই ডায়েটে। এই ডায়েটে যেহেতু খাবার খুব সীমিত থাকে, তাই শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
কোন ডায়েট প্ল্যান অনুসরণ করা উচিতসব ডায়েট সবার জন্য নয়, আবার প্রচলিত এসব ডায়েটই যে মানতে হবে, এমনও না। সুষম বা ব্যালান্সড ডায়েট সবচেয়ে কার্যকর বলে প্রমাণিত। তবে ওজন কমাতে চাইলে ক্যালরির পরিমাণ কমাতে হবে। আবার হয়তো কষ্ট করে দিনের পর দিন ডায়েট করছেন কিন্তু ভুল খাবার নির্বাচন অনেক সময় যেকোনো ডায়েট প্ল্যানকেই অকার্যকর করে দিতে পারে। তাই খাবার নির্বাচনে সতর্ক হতে হবে। একেকজনের শরীরে একেক ধরনের ডায়েট ভালো কাজ করে। আবার প্রত্যেক মানুষের জীবনযাপনের পদ্ধতিও ভিন্ন। সব মিলিয়ে নিজের জন্য এমন একটি ডায়েট বেছে নিতে হবে, যা আপনি দীর্ঘদিন স্বচ্ছন্দে অনুসরণ করতে পারবেন। অবাস্তব বা উচ্চাকাঙ্ক্ষী ডায়েট অনুসরণ করা কঠিন। সে ক্ষেত্রে দেখা যায়, কিছুদিন ডায়েট করার পরই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন বা উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন এবং আবার অস্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। এ কারণে ডায়েট শুরুর আগে উচিত একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া। ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডিসলিপিডেমিয়া, ইউরিক অ্যাসিড ইত্যাদি আছে কি না, তা বুঝে এবং জীবনযাপনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, এমন একটি ডায়েট তৈরি করে দিতে পারেন একজন অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদ।
সুষম খাদ্যের গুরুত্বসুস্বাস্থ্যের জন্য সুষম খাদ্যের গুরুত্ব অপরিসীম। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে প্রতিদিনের কাজকর্মের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি এবং পুষ্টির জোগান দিতে সক্ষম সুষম খাদ্য। সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিন আমাদের নির্দিষ্ট পরিমাণ পুষ্টি ও ক্যালরি গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। সুষম খাদ্য আমাদের সেই প্রয়োজনীয় শক্তি ও পুষ্টি সরবরাহ করতে পারে। এ জন্য প্রতিদিন সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে আমরা আমাদের সেই দৈনন্দিন পুষ্টি ও ক্যালরির চাহিদাকে সঠিকভাবে পূরণ করে রাখার মাধ্যমে দেহকে সুস্থ রাখতে পারি এবং একই সঙ্গে নানা ধরনের অপুষ্টিজনিত রোগ ও সমস্যা থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারি।
স্বাভাবিক কর্মক্ষমতাকে বজায় রাখতে নিয়মিত প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও ক্যালরির চাহিদা পূরণ করতে প্রতিদিনের খাবারের মধ্যে একটি সুষম বণ্টন থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই প্রচলিত বাজার চলতি নানা ডায়েটের পেছনে না ছুটে সুষম বা ব্যালান্সড ডায়েট অনুসরণ করতে পারেন। কেবল নিজের জন্য কতটুকু ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত, তা ঠিক করে নিতে হবে।
এ ছাড়া সুস্থ খাদ্যাভ্যাসের শর্ত হলো মন্দ খাদ্যাভ্যাস থেকে দূরে থাকা। কোমল পানীয়, কৃত্রিম জুস, ফাস্ট ফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার, অ্যালকোহল ও ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ধরন র ড য় ট র জন য প এই ড য় ট র জন য ক র পর ম ণ ড য় ট কর ন র জন য জনপ র য় প রচল ত ন র পর উপ দ ন র র আগ আম দ র সমস য র ওপর উৎস হ
এছাড়াও পড়ুন:
গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুতত সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়। যদিও এর আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথায় জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
প্রেস উইং জানায়, জাতীয় ঐক্যমত কমিশন থেকে প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য এবং বহু বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।
এতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে লক্ষ্য করা হয় যে, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া, গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে সে জন্য সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণভোটের সময় কখন হবে, গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে, জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্নমতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে ঐক্যমত কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরী ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভা অভিমত ব্যক্ত করে।
এসব ক্ষেত্রে ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে ( সম্ভব হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে) সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। বলেও উল্লেখ করা হয়। পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যেকোনো সুযোগ নাই সেটাও সবার বিবেচনায় রাখার জন্য বলা হয়।
সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা না পেলে কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে এই বিষয়েও আমাদের একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে—এ প্রত্যাশা করছি। ওনারা যদি আলাপ-আলোচনা করেন, আমাদের জন্য কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়। ওনারা যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।”
ঢাকা/ইভা