ফরিদপুরের মধুখালীতে যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক ব্যক্তিসহ পাকুড়গাছে আঘাত করে দুর্ঘটনায় পড়ে। ওই ব্যক্তি দুই ঘণ্টা ধরে গাছ ও বাসের মাঝখানে আটকে আছেন। আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মেছরদিয়া মোড়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে যশোরগামী একটি বাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মধুখালী উপজেলার মেছরদিয়া মোড় এলাকায় উল্টো দিক (ডান দিকে) দিয়ে গিয়ে সড়কের পাশে দাঁড়ানো একটি লোককে নিয়ে একটি পাকুড়গাছে আঘাত করেন। এরপর এলাকাবাসী মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। সাড়ে ৯টা থেকে বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এ কারণে দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মধুখালী পৌরসভার বাসিন্দা শাহ মো.

ফারুক হোসেন বলেন, পরে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও রাজনৈতিক নেতারা এলাকাবাসীকে বুঝিয়ে সড়ক থেকে গাছের গুঁড়ি সরিয়ে দিলে বেলা পৌনে ১১টা থেকে মহাসড়কের এক দিক থেকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

যানজটে আটকে পড়া ফরিদপুর থেকে মাগুরাগামী যাত্রী শুভ বিশ্বাস জানান, আটকে পড়া ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে হাইওয়ে পুলিশ মধুখালী ফায়ার সার্ভিস ও পরে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা অংশ নিয়েছেন। তবে তাঁরা বাসটি সরাতে ব্যর্থ হন। সড়ক বিভাগের একটি রেকার দিয়েও বাসটি সরানো সম্ভব হয়নি।

দুর্ঘটনাকবলিত বাসের যাত্রী যশোরের বাসিন্দা ইয়ামিন খান (২৬) জানান, তিনি ও তাঁর স্ত্রী রেবা খান পোশাক কারখানায় কাজ করেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছেন। তাঁরা দৌলতদিয়া থেকে ওই বাসে উঠেছেন। বাসটি মধুখালী শহরে ঢোকার আগে দ্রুতগতিতে চলছিল। চালকের বেপরোয়া গতির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার কারণে ঝাঁকুনিতে বাসের যাত্রীরা কমবেশি আঘাত পেয়েছেন। চালক পালিয়ে গেছেন।

ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক অধীর চন্দ্র হাওলাদার বলেন, গাছ ও বাসের মধ্যে আটকে পড়া ব্যক্তি এখনো বেঁচে আছেন। তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করার প্রয়োজন। এ জন্য প্রয়োজন বড় রেকার।

করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  মো. সালাহউদ্দিন চৌধুরী বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে প্রথমে সড়ক ও জনপথের একটি রেকার পাঠানো হয়েছিল বাসটি টেনে তোলার জন্য। কিন্তু সেটি দুর্বল থাকায় কাজ হয়নি। বর্তমানে ভাঙ্গা থেকে হাইওয়ে পুলিশের রেকরটি আনা হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু

৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা ও ময়মনসিংহের পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে পৌঁছানোর লক্ষ্যে এ বিশেষ যাতায়াত সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে শাখা ছাত্রদলের কর্মী নাফিস ইকবাল পিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেসবুক গ্রুপে এ তথ্য জানিয়ে পোস্ট দেন। একইসঙ্গে শাখা সভাপতি সাগর নাইম ও সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপুও তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে পরীক্ষার্থীদের এ সুবিধা গ্রহণের আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন

বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান অর্জন ও বিতরণের জায়গা: ইউজিসি চেয়ারম্যান

ছাত্রদল জানিয়েছে, ক্যাম্পাস থেকে দুটি বাস ছাড়বে। একটি ঢাকা রুটে এবং অপরটি ময়মনসিংহ রুটে যাবে। প্রতিটি বাসে ৫০ জন করে মোট ১০০ জন শিক্ষার্থী এই ফ্রি সার্ভিসের আওতায় যাতায়াত করতে পারবেন। এজন্য শিক্ষার্থীদের অবশ্যই আগাম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গুগল ফর্মের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কেউ এই সার্ভিসের সুবিধা নিতে পারবেন না।

শিক্ষার্থীদের জন্য এ উদ্যোগ ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী পোস্ট দিয়ে ছাত্রদলের এ পদক্ষেপকে ‘শিক্ষার্থীবান্ধব ও সময়োপযোগী উদ্যোগ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

শাখা সভাপতি সাগর নাইম তার পোস্টে বলেন, “প্রতি বছর বিসিএসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাফল্যের আলো ছড়িয়ে দেন। আমরা চাই এ সুনাম আরো দূরে ছড়িয়ে পড়ুক, আরো উজ্জ্বল হোক। এ ধারাবাহিক সাফল্যের পথে আপনাদের পাশে থাকতে, ভালোবাসা ও সম্মান জানাতে মাভাবিপ্রবি ছাত্রদল ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বিশেষ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে।”

এ বিষয়ে শাখা সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপু বলেন, “জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময়ই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে থাকে। গত বিসিএসে আমাদের বড় ভাই বিসিএস প্রশাসনে প্রথম হয়েছেন। এটি শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নয়, সারা দেশের জন্যই গর্বের বিষয়। সেই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আমরা এবার পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করেছি।”

তিনি বলেন, “বিশেষ করে অনেক নারী শিক্ষার্থী আছেন, যারা ক্যাম্পাস থেকে পরীক্ষাকেন্দ্র অনেক দূরে হওয়ায় অংশ নিতে পারেন না। আবার অনেকে যানবাহন না পেয়ে দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছান। আমরা চাইনি কেউ যেন যাতায়াত সমস্যার কারণে বিসিএস পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়েন। তাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভাইয়ের সহায়তায় আমরা এ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছি।”

ঢাকা/আবিদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ