ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করছে তাঁর দেশ। গাজায় নতুন দফায় সামরিক হামলায় অন্তত ৫২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পর তিনি এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের পরামর্শে সরকার গাজার অভ্যন্তরীণ প্রভাবশালী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে ‘সক্রিয়’ করেছে।

এর আগে নেতানিয়াহু গাজায় এমন কৌশল প্রয়োগ করছেন বলে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাভিগদর লিবারম্যান অভিযোগ করেছিলেন।

নেতানিয়াহুর এ বিবৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল সরকার প্রথমবারের মতো কিছু প্রভাবশালী গোত্রভিত্তিক সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীকে সমর্থন দেওয়ার কথা স্বীকার করল। ত্রাণকর্মীদের অভিযোগ, ইসরায়েলের অবরোধের কারণে পুরো গাজা যখন দুর্ভিক্ষের মুখে আছে তখন এই গোষ্ঠীগুলো হামলা চালাচ্ছে এবং ট্রাক থেকে ত্রাণ চুরি করছে।

মার্কিন বার্তা সংস্থা এপিকে উদ্ধৃত করে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, নেতানিয়াহু যে গোষ্ঠীগুলোর কথা বলছেন তার একটি তথাকথিত ‘পপুলার ফোর্সেস’। এই গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইয়াসের আবু শাবাব। তিনি রাফা এলাকার একজন স্থানীয় গোত্রপ্রধান।

ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজ গত মাসে সংগঠনটির কার্যকলাপ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। সেখানে এ গোষ্ঠীটিকে ‘অ্যান্টিটেরর সার্ভিস’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। প্রতিবেদনে গাজাভিত্তিক কয়েকটি সূত্রের বরাতে বলা হয়, এ গোষ্ঠী প্রায় ১০০ জন সশস্ত্র সদস্য নিয়ে গঠিত। তারা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অঘোষিত অনুমোদন নিয়ে কাজ করছে।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আবু শাবাব গোষ্ঠী অনলাইনে দেওয়া এক ঘোষণায় দাবি করেছে, তাদের যোদ্ধারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে পরিচালিত নতুন ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহযোগিতা করছে। গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন এসব ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র পরিচালনা করছে।

জর্ডানের রাজধানী আম্মানে নিযুক্ত আল–জাজিরার প্রতিনিধি হামদাহ সালহুত বলেন, ইসরায়েলের সরকার বা মন্ত্রিসভার মধ্যে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে দেশটির বিরোধী দল দাবি করেছে। নেতানিয়াহু বলছেন, এই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো মূলত গাজায় হামাসকে পরাজিত করতে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করতে পারে।

আরও পড়ুনগাজায় যুদ্ধবিরতি: নিরাপত্তা পরিষদে তোলা প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো০৫ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র সশস ত র গ

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ