আসছে অরুন্ধতী রায়ের নতুন বই ‘মাদার মেরি কামস টু মি’
Published: 6th, June 2025 GMT
আসছে অরুন্ধতী রায়ের নতুন বই ‘মাদার মেরি কামস টু মি’। এটি প্রকাশ করছে পেঙ্গুইন ইন্ডিয়া। ৪ জুন ফেসবুক পোস্টে এ কথা জানিয়েছেন অরুন্ধতী রায় নিজেই।
অরুন্ধতী রায়ের প্রথম স্মৃতিকথা, যেখানে লেখক কীভাবে পরিস্থিতির দ্বারা ব্যক্তি এবং লেখক হয়ে ওঠেন তার বিবরণ রয়েছে।
মায়ের সাথে কাটানো জীবনস্মৃতি ও তাদের সম্পর্কের নানাবিধ জটিলতা বইটিতে জায়গা পেয়েছে। অরুন্ধতী রায় বলেন, “আমি সারাজীবন ধরে বইটি লিখেছি। সম্ভবত আমার মতো একজন লেখকের জন্য তার মতো একজন মায়ের দরকার ছিল। কেবল তার সন্তান হিসেবে আমি ব্যথিত নই, আমি শোক করি একজন লেখকের জন্য যিনি তার জীবনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়টি হারিয়েছেন।”
হ্যামিশ হ্যামিল্টনের প্রকাশনা পরিচালক সাইমন প্রসার- “বইটি জাদুকরীভাবে অরুন্ধতী রায়ের জীবন এবং লেখার সমস্ত উপাদানকে একত্রিত করেছে, অরুন্ধতী রায় যেমন বিস্ময় ও অনুপ্রেরণা-এই বইটিও তাই।”
ঢাকা/সাইফ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সর্বনাশ! এ তো শয়তানের নিশ্বাস!
এমন না যে তিনি তাঁর ফ্ল্যাটে তালা মেরে কোথাও বেড়াতে গেছেন। বাসা খোলা। ভাই, মানে ভাবির হাজব্যান্ড বিদেশে। এক ছেলে গেছে বন্ধুদের সঙ্গে মাস্তি করতে, বাড়ি ফাঁকা, বাসায় ভাবি একাই ছিলেন। তাহলে হঠাৎ গেলেন কোথায়? সবার মধ্যে আতঙ্ক।
কে একজন খালি বাসায় সরেজমিন চেক করতে গিয়ে কী মনে করে একফাঁকে ডিপ ফ্রিজ খুলে দেখেন, সেখানে একটা প্যাকেট, তাতে লেখা, ‘ভাবির কলিজা’! আতঙ্ক দ্বিগুণ হয়ে গেল। তবে কি খালি বাসায় কেউ তাঁকে...নাহ্, বাকিটা ভাবতে পারলেন না সেই অনুসন্ধানী প্রতিবেশী। কোনোরকমে টলতে টলতে বাইরে এসে দাঁড়ালেন।
‘কী হয়েছে আপনার?’ পাশের ফ্ল্যাটের আরেকজন প্রতিবেশী এগিয়ে এলেন।
‘ভাবি...ভাবি...!’ বাকিটা আর বলতে পারলেন না। ওখানেই দেয়াল ধরে বসে পড়লেন। ঠিক তখনই লিফটের দরজা খুলে ভাবি এসে দাঁড়ালেন।
‘একি ভাবি! আপনি?’
‘হ্যাঁ, আমি। কেন, কী হয়েছে?’
‘আপনি সকাল থেকে নেই, ফ্ল্যাটের দরজা খোলা...!’
আরে, ওকে দিয়ে কিছু কাজ করিয়ে নেব ভাবছি। আপাতত গ্যারেজে গরুর ভুঁড়ি পরিষ্কার করতে লাগিয়ে দিয়েছি।‘ওহ্, আর বলবেন না। দরজা খোলা রেখেছি বুয়া এসে ঘরদোর গোছাবে। আর আমি গিয়েছিলাম আপনার ভাই কিছু টাকা পাঠিয়েছে, ওটা আনতে। টাকা পাঠানোর আর সময় পেল না।’
‘টাকা পেয়েছেন?’
‘পেয়েছি। তারপর তো আরেক কাণ্ড!’
‘কী কাণ্ড?’
‘টাকা নিয়ে আসছি, পথে এক লোক একটা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বলল, “ঠিকানাটা একটু বলে দিন না।”’
‘সর্বনাশ! এ তো শয়তানের নিশ্বাস!’ অন্যরা একসঙ্গে চেঁচিয়ে উঠলেন।
‘হ্যাঁ হ্যাঁ, আমি তো জানি। এসব কেস পত্রিকায় পড়েছি, ফেসবুকে দেখেছি। আমি সঙ্গে সঙ্গে কাগজটা ওর হাত থেকে কেড়ে নিয়ে উল্টা ওর নাকের কাছে ধরলাম...ব্যস, লোকটা একদম কেমন যেন ভ্যাবদা মেরে গেল। যা-ই বলি, তা-ই শোনে।’
‘তারপর? লোকটা কই? পুলিশে দিয়েছেন?’
‘কিসের পুলিশ, লোকটাকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি।’
‘সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন মানে?’ সবাই শিউরে উঠলেন।
‘আরে, ওকে দিয়ে কিছু কাজ করিয়ে নেব ভাবছি। আপাতত গ্যারেজে গরুর ভুঁড়ি পরিষ্কার করতে লাগিয়ে দিয়েছি।’
‘বলেন কী!’ সবাই হুড়মুড় করে ছুটলেন লোকটাকে দেখতে।
গিয়ে দেখেন, সত্যিই গ্যারেজে বসে বিমর্ষ ভঙ্গিতে এক লোক গরুর ভুঁড়ি পরিষ্কার করছে। এর মধ্যে একজন প্রশ্ন করে বসলেন, ‘এই, তোমার “শয়তানের নিশ্বাস”-এর ঘোর কতক্ষণ থাকবে?’
লোকটা বিড়বিড় করে কী সব বলে, বোঝা যায় না।
‘তাহলে তো ওকে দিয়ে আমার গরুর ভুঁড়িটাও পরিষ্কার করিয়ে নিতে পারি। কী, পারবে না?’
লোকটা মাথা নাড়ে, পারবে। এ সময় পিঙ্কি ভাবিকে দেখা যায়। লোকটাকে বলেন, ‘এই, ভুঁড়ি পরিষ্কার করেছ?’
‘জি, ম্যাডাম!’
‘এবার ছাদে যাও, ছাদবাগানে পানি দিতে হবে।’
কিন্তু বিকেলের মধ্যে দুজন পুলিশ এসে হাজির হলেন। দারোয়ান এগিয়ে গেলেন। ‘এখানে শয়তানের নিশ্বাসের এক আসামি নাকি ধরা পড়েছে?’লোকটা রোবটের মতো উঠে দাঁড়ায়, হাঁটা দেয় লিফটের দিকে। ছাদবাগানে পানি দিতে যাচ্ছে। এর মধ্যে ভাবির কানে কানে একজন বলেন, ‘আপু, এই শয়তানের নিশ্বাসের ঘোর কিন্তু দুই ঘণ্টার মতো থাকে। এক ঘণ্টা কিন্তু হয়ে গেছে।’
‘আরে, আমিও খোঁজ নিয়েছি, দুই থেকে তিন ঘণ্টা থাকে। গুগল করে আগেই জেনে নিয়েছি। দেড় ঘণ্টার মতো হয়েছে...আরও দেড় ঘণ্টা হাতে আছে। আপনারা কেউ ওকে দিয়ে কোনো কাজ করাতে চান?’
‘আমার ভুঁড়িটার যদি...।’
‘বেশ, ছাদবাগানে পানি দেওয়ার পর...।’
কিন্তু বিকেলের মধ্যে দুজন পুলিশ এসে হাজির হলেন। দারোয়ান এগিয়ে গেলেন।
‘এখানে শয়তানের নিশ্বাসের এক আসামি নাকি ধরা পড়েছে?’
‘জি জি।’
‘সে কোথায়?’
‘সে ছাদে টাংকি পরিষ্কার করতেছে।’
‘মানে?’
দারোয়ান এদিক-ওদিক তাকিয়ে গলা এক ধাপ নামিয়ে বললেন, ‘স্যার, ফ্ল্যাটের ম্যাডামরা সব ওকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছেন, ওই লোককে যা বলা হয়, তা-ই করে...।’
‘বুঝতে পেরেছি, তার মানে আসামিই এখন ভিকটিম!’
‘ঠিক তা-ই।’ পাশে পিঙ্কি ভাবি কখন এসে দাঁড়িয়েছেন, দারোয়ান-পুলিশ কেউই টের পায়নি। ‘আপনারা খবর পেলেন কীভাবে?’
‘আপনাদের এখান থেকে কেউ একজন থানায় ফোন করেছেন, পুরো ঘটনাই শুনেছি আমরা।’
‘হুম, এখন কি ওকে অ্যারেস্ট করতে চান?’
‘সে জন্যই আমাদের আসা।’ এ সময় সেই লোককে আসতে দেখা গেল, তার জামাকাপড় ভেজা, ছাদের ট্যাংকি পরিষ্কার করে নেমে এসেছে। তখনো সে কেমন যেন ভ্যাবদা মেরে আছে।
‘এ–ই তাহলে আসামি?’
‘জি।’
‘এই, তোমার ঠিকানা লেখা কাগজটা বের করো।’ লোকটা বের করল, কাগজটাও ভিজে চুপচুপে। তবে সেখানে সত্যি সত্যি একটা ঠিকানা লেখা। ঠিকানাটা একটা মেন্টাল হসপিটালের। পুলিশ দুজন একজন আরেকজনের দিকে তাকান, ‘এ তো মেন্টাল কেস মনে হচ্ছে। ম্যাডাম মনে হয় ভুল করে...!’
‘মানুষমাত্রই ভুল করে, ভুল না করলে শিখবে কোথা থেকে?’ পিঙ্কি ভাবি দীর্ঘশ্বাস ফেলে মনে মনে ভাবেন...।
আরও পড়ুন‘শয়তানের নিশ্বাস’ বা ‘ডেভিলস ব্রেথ’ থেকে নিরাপদ থাকতে কী করবেন১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫