‘অ্যাই ধার দিবেন দা-বটি ছুরি-চাপাতি, অ্যাই ধার’-এমন কথাগুলো এখন কেবল কোরবানির ঈদ আসলেই। ঈদের কয়েক দিন আগে থেকেই কোরবানির মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম ধার করে দিতেই শান মেশিন নিয়ে রাজধানীর অলিগলিতে ঘুরে বেড়ান শানকার বা শান কারিগররা।

প্রযুক্তির আধুনিকতার ছোঁয়ায় এসব প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তবুও ঈদ মৌসুমে এমন এমন দৃশ্য খুব সাধারণ। পথে পথে বা অলিগলিতে ঘুরে হ্যান্ডমাইক হাতে উচ্চকণ্ঠে হাঁক দেন শান ওয়ালা কারিগররা।

শুক্রবার (৬ জুন) বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন মোড় বা গলিগতিলে মুখে গামছা পেঁচিয়ে শানকারদের হাঁক-ডাক দিতে দেখা গেছে। কোথায় আবার দু-হাত লম্বা করে দা, বটি, ছুরি ও চাপাতি ধার করতে দেখা গেছে। প্যাডেল ঘুরিয়ে সাইকেলের ফ্রেম আর ক্র্যাংকসেট দিয়ে তৈরি একটি যন্ত্রের (শান মেশিন) ওপর বসে তারা বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ধার করছেন। ধার দেওয়া শেষ হলেই বিদায় নেন তারা। ছুটে চলে নতুন গন্তব্যে।

ঈদকে কেন্দ্র করে হাটগুলোতে বিক্রি হচ্ছে পশু। সেই সঙ্গে কোরবানির মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জামের কদর বেড়েছে। তাই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কাঁধে শান মেশিন নিয়ে শানকারদের আনাগোনা কয়েকগুণ বেড়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দা-বটি ছুরি-চাপাতি ধার করে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

বিভিন্ন এলাকার শানকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্যান্য সময় প্রতি অস্ত্র ধার করে দিয়ে ২০-৩০ টাকা পাওয়া গেলেও ঈদের সময়ে পাওয়া যায় ৪০-৫০ টাকা। আবার কেউ কেউ খুশি হয়ে ৫০০ টাকাও দেন।

রাজধানীর মান্ডা এলাকার বাসিন্দা মোবারক হোসেন। শুক্রবার দুপুরে দক্ষিণ বনশ্রী এলাকায় ই-ব্লকে শান মেশিন নিয়ে এসেছেন। পেশায় তিনি খামারি। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে বাড়তি আয়ের জন্য শানকার বনে যান। তিনি খামারি হলেও কষ্ট করে এ কাজ শিখছেন। তিনি বলেন, “ঈদ আসলেই রাজধানীর অধিকাংশ বাসা-বাড়িতে পশু কোরবানি দেওয়া হয়। এ সময় প্রায় প্রতিটি পরিবারেই দা, বটি, ছুরি ও চাপাতি ধার দেওয়ার হিড়িক পড়ে।ফলে বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে ঈদের আগের কয়েদিন এ কাজ করে বাড়তি আয় হয়।”

ওই এলাকার বাসিন্দা আহমেদ ফারুক বলেন, “ঈদের আগে কাজের চাপ বেশি থাকে। মাংস কাটার অস্ত্র দোকানে নেওয়া সময় পাওয়া যায় না। তাই বাসার সামনে থেকে শান মেশিনে দা, বটি, ছুরি ও চাপাতি ধার করিয়ে নিয়েছি।”

এদিকে, রাশপুরা বনশ্রী এলাকায় কথা হয় শানকার নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, “মানুষজন এখন আর আগের মতো শান মেশিনে দা, বটি, ছুরি ও চাপাতি ধার করে না। ইলেক্ট্রনিক গ্রিন্ডার মেশিন দিয়ে এখন মানুষ মাংস কাটার অস্ত্র ধার করেন। তবে কোরবানির ঈদ এলে কিছু কাজ পাওয়া যায়।

ঢাকা/এনটি/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র ধ র কর সময় প

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার শপথ ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা যোদ্ধাদের

বিজয়ের মাস ঢাকায় এক হলেন একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর যোদ্ধারা; তাঁরা শপথ নিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার।

আজ শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেরিলা যোদ্ধাদের এই মিলনমেলায় এই বাহিনীর জীবিত সদস্যদের পাশাপাশি শহীদ পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। দিনভর এই আয়োজন করে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন বিশেষ গেরিলা বাহিনী সমন্বয় কমিটি।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে আলাদা গেরিলা বাহিনী গঠন করে অংশ নিয়েছিলেন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের সদস্যরা। কয়েক হাজার গেরিলা যোদ্ধার এই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদ। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বেতিয়ারার যুদ্ধে এই বাহিনীর সদস্যদের আত্মদান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আলোচিত ঘটনা।

স্বাধীনতার পর এই গেরিলা বাহিনীর সদস্যরা মোহাম্মদ ফরহাদের নেতৃত্বে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন। দেড় যুগ আগে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা করেছিল, তাতে এই বাহিনীর সদস্যদের রাখা হয়নি। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনীর সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

শহীদ মিনারে মিলনমেলার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি এই গেরিলা বাহিনীর সদস্য ছিলেন, স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে ভিপি হয়েছিলেন তিনি।

ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ শনিবার একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর মিলনমেলায় সিপিবির সাবেক সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

সম্পর্কিত নিবন্ধ