কাঁধে শান মেশিন নিয়ে অলিগলিতে ঘুরছেন শানকার
Published: 6th, June 2025 GMT
‘অ্যাই ধার দিবেন দা-বটি ছুরি-চাপাতি, অ্যাই ধার’-এমন কথাগুলো এখন কেবল কোরবানির ঈদ আসলেই। ঈদের কয়েক দিন আগে থেকেই কোরবানির মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম ধার করে দিতেই শান মেশিন নিয়ে রাজধানীর অলিগলিতে ঘুরে বেড়ান শানকার বা শান কারিগররা।
প্রযুক্তির আধুনিকতার ছোঁয়ায় এসব প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তবুও ঈদ মৌসুমে এমন এমন দৃশ্য খুব সাধারণ। পথে পথে বা অলিগলিতে ঘুরে হ্যান্ডমাইক হাতে উচ্চকণ্ঠে হাঁক দেন শান ওয়ালা কারিগররা।
শুক্রবার (৬ জুন) বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন মোড় বা গলিগতিলে মুখে গামছা পেঁচিয়ে শানকারদের হাঁক-ডাক দিতে দেখা গেছে। কোথায় আবার দু-হাত লম্বা করে দা, বটি, ছুরি ও চাপাতি ধার করতে দেখা গেছে। প্যাডেল ঘুরিয়ে সাইকেলের ফ্রেম আর ক্র্যাংকসেট দিয়ে তৈরি একটি যন্ত্রের (শান মেশিন) ওপর বসে তারা বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ধার করছেন। ধার দেওয়া শেষ হলেই বিদায় নেন তারা। ছুটে চলে নতুন গন্তব্যে।
ঈদকে কেন্দ্র করে হাটগুলোতে বিক্রি হচ্ছে পশু। সেই সঙ্গে কোরবানির মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জামের কদর বেড়েছে। তাই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কাঁধে শান মেশিন নিয়ে শানকারদের আনাগোনা কয়েকগুণ বেড়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দা-বটি ছুরি-চাপাতি ধার করে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
বিভিন্ন এলাকার শানকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্যান্য সময় প্রতি অস্ত্র ধার করে দিয়ে ২০-৩০ টাকা পাওয়া গেলেও ঈদের সময়ে পাওয়া যায় ৪০-৫০ টাকা। আবার কেউ কেউ খুশি হয়ে ৫০০ টাকাও দেন।
রাজধানীর মান্ডা এলাকার বাসিন্দা মোবারক হোসেন। শুক্রবার দুপুরে দক্ষিণ বনশ্রী এলাকায় ই-ব্লকে শান মেশিন নিয়ে এসেছেন। পেশায় তিনি খামারি। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে বাড়তি আয়ের জন্য শানকার বনে যান। তিনি খামারি হলেও কষ্ট করে এ কাজ শিখছেন। তিনি বলেন, “ঈদ আসলেই রাজধানীর অধিকাংশ বাসা-বাড়িতে পশু কোরবানি দেওয়া হয়। এ সময় প্রায় প্রতিটি পরিবারেই দা, বটি, ছুরি ও চাপাতি ধার দেওয়ার হিড়িক পড়ে।ফলে বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে ঈদের আগের কয়েদিন এ কাজ করে বাড়তি আয় হয়।”
ওই এলাকার বাসিন্দা আহমেদ ফারুক বলেন, “ঈদের আগে কাজের চাপ বেশি থাকে। মাংস কাটার অস্ত্র দোকানে নেওয়া সময় পাওয়া যায় না। তাই বাসার সামনে থেকে শান মেশিনে দা, বটি, ছুরি ও চাপাতি ধার করিয়ে নিয়েছি।”
এদিকে, রাশপুরা বনশ্রী এলাকায় কথা হয় শানকার নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, “মানুষজন এখন আর আগের মতো শান মেশিনে দা, বটি, ছুরি ও চাপাতি ধার করে না। ইলেক্ট্রনিক গ্রিন্ডার মেশিন দিয়ে এখন মানুষ মাংস কাটার অস্ত্র ধার করেন। তবে কোরবানির ঈদ এলে কিছু কাজ পাওয়া যায়।
ঢাকা/এনটি/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র ধ র কর সময় প
এছাড়াও পড়ুন:
সেই আছিয়ার পরিবারকে গরু ও ঘর দিল জামায়াত
মাগুরায় যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে মারা যাওয়া আলোচিত শিশু আছিয়ার পরিবারকে দুটি গরু ও একটি গোয়ালঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে আছিয়ার পরিবারকে এ উপহার দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উপহার হস্তান্তর করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন।
এ সময় জেলা জামায়াতের আমির এম বি বাকের, সাবেক আমির ও কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল মতিনসহ স্থানীয় এবং জেলা কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা
গত ১৫ মার্চ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আছিয়ার বাড়িতে যান। তিনি শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত বিচার চান। সে সময় আছিয়ার পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে একটি গোয়াল ঘর এবং দুটি গরু দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জামায়াতের আমির।
আট বয়সী আছিয়া মাগুরার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয় বলে পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ ওঠে। গত ৬ মার্চ অচেতন অবস্থায় মাগুরার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। অবস্থার অবনতি হলে মাগুরা হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে শিশুটিকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে থেকে সেদিন সন্ধ্যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকায় নেওয়া হয় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। দুই দিন পর ৮ মার্চ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আছিয়ার।
ঢাকা/শাহীন/রফিক