নির্বাচনের সময় নিয়ে জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি: প্রিন্স
Published: 6th, June 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, ‘অবশেষে জাতীয় নির্বাচনের একটা সুনির্দিষ্ট সময় পাওয়া গেল। এটা একটা অগ্রগতি বলে মনে হয়। তবে এখানে জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এবং আমরা সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে যেটা বুঝেছি তাতে তারা এ বছরের মধ্যেই, অর্থাৎ ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচিত সপ্তাহ দেখতে চায়। আমরাও তা-ই চাই।’
শুক্রবার গণমাধ্যমকে দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সিপিবি সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সরকার তার কার্যকালে সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষা করতে পারেনি। মব-সন্ত্রাস চলছে, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ হয়নি। এ সময় দারিদ্র্য, বেকারত্ব বেড়েছে। অনেক কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, যাচ্ছে, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নেই।’
তিনি বলেন, জনজীবনের ন্যূনতম আকাঙ্ক্ষা সর্বজনীন রেশনব্যবস্থা ও জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষিত হয়নি। নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাস ঐতিহ্যের উপরে আক্রমণ পরিচালিত হচ্ছে। রাখাইনে করিডর, লাভজনক বন্দরকে বিদেশিদের লিজ দেওয়াসহ বেশ কিছু কর্মকাণ্ড দেশের সার্বভৌমত্বের ওপরে আঘাত বলে আমরা মনে করি।
এসব ঘটনায় আমাদের দেশের স্বার্থরক্ষিত হবে না বরঞ্চ ও রাজনৈতিক কারণে সাম্রাজ্যবাদ এবং আধিপত্যবাদী শক্তি এখানে আরো প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পাবে, বলেন তিনি।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘সব মিলিয়ে আরো অধিক সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় থাকলে জনজীবনের সংকটই ঘনীভূত হবে বলে আমরা মনে করছি।’
তিনি বলেন, ‘শুরুতেই বলেছি এ বছরের মধ্যে, অর্থাৎ ২০২৫-এর ডিসেম্বরের মধ্যে মানুষ ভোট দিয়ে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এটাই অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষের দাবি।’
কেন কালক্ষেপণ করে এপ্রিলে নির্বাচনের কথা বলছেন তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সময় তিনি দেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থে কি কি কাজ করতে চান তাও আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়।
তিনি বলেন, আমরা আশা করব নির্বাচন কমিশনকে এ বছরের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন করার কথা বলা হবে এবং তার আগে অবাধ গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করবেন। এটা করা সম্ভব বলে আমি মনে করি ।
সিপিবি সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটি আমাদের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া। এ বিষয়ে আমাদের দলের প্রেসিডিয়াম, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ও গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য গণতান্ত্রিক শক্তির সাথে কথা বলে চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।
আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগেএ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।
সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।
এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।
আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে