প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, ‘অবশেষে জাতীয় নির্বাচনের একটা সুনির্দিষ্ট সময় পাওয়া গেল। এটা একটা অগ্রগতি বলে মনে হয়। তবে এখানে জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এবং আমরা সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে যেটা বুঝেছি তাতে তারা এ বছরের মধ্যেই, অর্থাৎ ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচিত সপ্তাহ দেখতে চায়। আমরাও তা-ই চাই।’

শুক্রবার গণমাধ্যমকে দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সিপিবি সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সরকার তার কার্যকালে সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষা করতে পারেনি। মব-সন্ত্রাস চলছে, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ হয়নি। এ সময় দারিদ্র্য, বেকারত্ব বেড়েছে। অনেক কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, যাচ্ছে, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নেই।’

তিনি বলেন, জনজীবনের ন্যূনতম আকাঙ্ক্ষা সর্বজনীন রেশনব্যবস্থা ও জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষিত হয়নি। নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাস ঐতিহ্যের উপরে আক্রমণ পরিচালিত হচ্ছে। রাখাইনে করিডর, লাভজনক বন্দরকে বিদেশিদের লিজ দেওয়াসহ বেশ কিছু কর্মকাণ্ড দেশের সার্বভৌমত্বের ওপরে আঘাত বলে আমরা মনে করি।

এসব ঘটনায় আমাদের দেশের স্বার্থরক্ষিত হবে না বরঞ্চ ও রাজনৈতিক কারণে সাম্রাজ্যবাদ এবং আধিপত্যবাদী শক্তি এখানে আরো প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পাবে, বলেন তিনি।

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘সব মিলিয়ে আরো অধিক সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় থাকলে জনজীবনের সংকটই ঘনীভূত হবে বলে আমরা মনে করছি।’

তিনি বলেন, ‘শুরুতেই বলেছি এ বছরের মধ্যে, অর্থাৎ ২০২৫-এর ডিসেম্বরের মধ্যে মানুষ ভোট দিয়ে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এটাই অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ মানুষের দাবি।’

কেন কালক্ষেপণ করে এপ্রিলে নির্বাচনের কথা বলছেন তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সময় তিনি দেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থে কি কি কাজ করতে চান তাও আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়।

তিনি বলেন, আমরা আশা করব নির্বাচন কমিশনকে এ বছরের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন করার কথা বলা হবে এবং তার আগে অবাধ গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করবেন। এটা করা সম্ভব বলে আমি মনে করি ।

সিপিবি সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটি আমাদের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া। এ বিষয়ে আমাদের দলের প্রেসিডিয়াম, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ও গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য গণতান্ত্রিক শক্তির সাথে কথা বলে চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার শপথ ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা যোদ্ধাদের

বিজয়ের মাস ঢাকায় এক হলেন একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর যোদ্ধারা; তাঁরা শপথ নিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার।

আজ শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেরিলা যোদ্ধাদের এই মিলনমেলায় এই বাহিনীর জীবিত সদস্যদের পাশাপাশি শহীদ পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। দিনভর এই আয়োজন করে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন বিশেষ গেরিলা বাহিনী সমন্বয় কমিটি।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে আলাদা গেরিলা বাহিনী গঠন করে অংশ নিয়েছিলেন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের সদস্যরা। কয়েক হাজার গেরিলা যোদ্ধার এই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদ। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বেতিয়ারার যুদ্ধে এই বাহিনীর সদস্যদের আত্মদান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আলোচিত ঘটনা।

স্বাধীনতার পর এই গেরিলা বাহিনীর সদস্যরা মোহাম্মদ ফরহাদের নেতৃত্বে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন। দেড় যুগ আগে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা করেছিল, তাতে এই বাহিনীর সদস্যদের রাখা হয়নি। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনীর সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

শহীদ মিনারে মিলনমেলার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি এই গেরিলা বাহিনীর সদস্য ছিলেন, স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে ভিপি হয়েছিলেন তিনি।

ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ শনিবার একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর মিলনমেলায় সিপিবির সাবেক সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

সম্পর্কিত নিবন্ধ