‘ওস্তাদ, টান দিয়েন না’, সহযোগীর আকুতির পরও থামেনি বাস, চাপায় প্রাণ গেল অটোরিকশাচালকের
Published: 7th, June 2025 GMT
‘ওস্তাদ, টান দিয়েন না, বাইজা গেছে’—চোখের সামনে অটোরিকশাচালককে চাপা পড়তে দেখে বাস থামানোর জন্য এই আকুতি জানান বাসের চালকের সহকারী। কিন্তু তাঁর আকুতি উপেক্ষা করে চালক বাস সামনে এগিয়ে নিয়ে গেলে মুহূর্তেই পিষ্ট হয়ে মারা যান অটোরিকশাচালক শিপন হোসেন। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন বাসটি আটক করলেও চালক কৌশলে পালিয়ে যান।
নিহত অটোরিকশাচালকের নাম শিপন হোসেন (৩৪)। তিনি রাজধানীর জুরাইন এলাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন।
আজ শনিবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা হিজলতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভাঙ্গাগামী একটি বাসের চাপায় ঘটনাস্থলে ওই অটোরিকশাচালকের মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশার যাত্রী রাজ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন বলেন, ‘আমাদের অটোরিকশাটি হিজলতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকার সার্ভিস লেন দিয়ে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ওই সড়কে বাসটি যাওয়ার চেষ্টা করলে অটোরিকশার চাকার সঙ্গে আটকে যায়। এ সময় অটোরিকশাচালক আকুতি করে বাসটি থামাতে বলে। কিন্তু বাসচালক (২৪) অটোরিকশাচালকের আকুতি উপেক্ষা করে বাস টান দেওয়ায় অটোরিকশাটি দুই ভাগ হয়ে যায়। এ সময় অটোরিকশাচালক বাসে উঠে চালককে বাস থামাতে বলেন। তাতেও কাজ হয়নি। একপর্যায়ে বাস থেকে নামার সময় অটোরিকশাচালক সার্ভিস লেনের বিভাজকের ওপর পা রাখলে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে বাসের পেছনের দিকের চাকার নিচে পড়ে যান। এ সময় বাসটি অটোরিকশাচালকের পা ও বুকের ওপর দিয়ে চলে যায়।’
অটোরিকশার যাত্রী রাজ হোসেন আরও বলেন, ‘বাসচালক যদি শুরুতেই বাসটি থামিয়ে একটু পেছনে যেতেন, তাহলে আর এ দুর্ঘটনা ঘটত না। সে ধৈর্যহীন হয়ে বাসটি টান দেওয়ায় এমন মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটল।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও হিজলতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা মো.
ঘটনাস্থলে থাকা মোটরসাইকেল চালক শাহীন আলম বলেন, ‘আমি মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে হিজলতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দেখতে পাই, বাসের পেছনের চাকার দিকে এক ব্যক্তি চাপা পড়েছে। এ সময় বাসচালকের সহকারী, কয়েকজন যাত্রী, আমি ও অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শী বাসটি থামাতে বলি। তবে চালক কারও কথা না শুনে বাসটি টান দেন। এ সময় আমিসহ আরও এক বাইকচালক বাসটিকে ধাওয়া করি। একপর্যায়ে নাজিরেরবাগ ঝিলমিল এলাকায় উড়ালসড়কের ওপর বাসটির সামনে মোটরসাইকেল রেখে পথরোধ করি। এ সময় বাসের চালক ও সহকারী বাস থেকে নেমে দৌড়ে কৌশলে পালিয়ে যান।’
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক পীযূষ রায়। তিনি বলেন, বাসটি আটক করা হয়েছে। বাসের চালক ও সহকারী কৌশলে পালিয়ে গেছেন। তাঁদের আটকের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এল ক য় এ সময় র ওপর সহক র চ লকক
এছাড়াও পড়ুন:
বিছনাকান্দিতে পাথর চুরি ঠেকাতে বিএসএফের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ, ফাঁকা গুলি
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দিতে পাথর চুরি করতে যাওয়া শ্রমিকদের লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছুড়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে বিছনাকান্দির ভারতীয় সীমান্ত এলাকার শূন্যরেখার পাশে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজন ও বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে কয়েকজন শ্রমিক বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকার গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দিতে নৌকা নিয়ে পাথর তুলতে যান। এ সময় শ্রমিকেরা ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় ঢুকে পড়ে পাথর উত্তোলন শুরু করেছিলেন। একপর্যায়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা বিষয়টি বুঝতে পেরে বাঁশি বাজিয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া দেন। এ সময় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীও শ্রমিকদের লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। একপর্যায়ে একটি ফাঁকা গুলিও ছোড়ে। এতে শ্রমিকেরা ভয়ে ওই এলাকা ত্যাগ করেন। তবে এ ঘটনায় হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সিলেট ব্যাটালিয়ন ৪৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, শ্রমিকেরা পাথর চুরির জন্য শূন্যরেখা অতিক্রম করে ভারতের অভ্যন্তরে চলে গিয়েছিলেন। বিজিবি খবর পেয়ে বাঁশি বাজিয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া করে। একই সময় বিএসএফ এসেও শ্রমিকদের ভয় দেখাতে সম্ভবত দুটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং একটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে শ্রমিকেরা পালিয়ে যান। তবে হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।