গত বছর কেরেলা রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী ভি আব্দুরহিমান এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছিলেন, আর্জেন্টিনা ফুটবল দলকে ভারতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলকে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলার প্রস্তাবও দিয়েছে।
আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনও ভারতের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। একটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে তারাও রাজি হয়েছে। তবে কবে, কখন, কোথায় ম্যাচটি হবে সেটা নিয়ে ভেতর-ভেতর কাজ চলছিল।
শনিবার আব্দুরহিমান নিশ্চিত করেছে, চলতি বছরের অক্টোবর বা নভেম্বরে আর্জেন্টিনা ফুটবল দল মেসিকে নিয়ে ভারত সফর করবে। পুরো সফরে আর্জেন্টিনা দলকে "রাষ্ট্রীয় অতিথি"র মর্যাদায় স্বাগত জানাবে কেরালা সরকার। এরই মধ্যে স্পন্সর থেকে টাকা পেয়ে ম্যাচ ফি-ও পরিশোধ করা হয়েছে। কেরালা সরকার দলটির নিরাপত্তা, আবাসন এবং আয়োজনের বাকি বন্দোবস্ত করবে।
আব্দুরহিমান শনিবার গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘স্পনসর প্রতিষ্ঠান এখন প্রয়োজনীয় অর্থ পরিশোধ করেছে। আর কোনো জটিলতা নেই। অক্টোবর-নভেম্বরের ফিফা উইন্ডোতেই ম্যাচটি আয়োজনের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।’’
ম্যাচটি থিরুভানন্তপুরমের গ্রীনফিল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হবে যা ফিফা স্বীকৃত। যেখানে আগেও আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছে।
এর আগে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতে প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল তিনবারের বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনা। কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে তারা জিতেছিল ১-০ গোলে। ম্যাচে অংশ নিয়েছিলেন মেসিও।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আর জ ন ট ন
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।