ভারতীয় উপমহাদেশের পুরুষদের মধ্যে গয়না পরার চল ছিলো। আগেকার দিনে রাজা-বাদশারাও বিভিন্ন ধরণের গয়না পরতেন। পুরুষদের গয়না সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছেন বলিউড অভিনেতা সুনীল শেঠি। তার জুয়েলারি ব্র্যান্ড ‘মেটাম্যান’ তৈরি করছে আধুনিক সব জুয়েলারি। 

মেটম্যান ব্যান্ডের গয়নাগুলো পুরুষদের জন্য বিশেষ ডিজাইনে করা হচ্ছে। পুরুষদের পছন্দের জুয়েলারির তালিকায় স্থান করে নিচ্ছে—ব্রেসলেট, চেইন, আংটি এবং কানের দুল। পিতল, স্টার্লিং সিলভার ও সোনার মতো ধাতু দিয়ে ডিজাইন করা হচ্ছে এসব গয়না। যা সব বয়সের পুরুষের জন্য উপযুক্ত। ফ্যাশন ধারণায় বদল এসেছে। প্রতিদিন বদলে যাচ্ছে ফ্যাশনের সংজ্ঞা।  মেয়েদের লুক নিয়ে যেমন পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে তেমনই পুরুষেরাও নিজেদের লুক নিয়ে অনেক ধরনের পরীক্ষা করছেন। 

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টলিউড অভিনেতা গৌরব রায়চৌধুরীর একটি ছবি পোস্ট করেছেন। যেখানে নায়কের পরনে একটি কালো পাঞ্জাবী। চোখে কাজল। গলায় দুইটি হার। ইদানীং অনেক অভিনেতা এবং পোশাকশিল্পীদের দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের গয়না পরতে। 

গৌরব ভারতীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘‘ভারতীয় ইতিহাসে পুরুষদের কিন্তু গয়না পরার একটা ঐতিহ্য রয়েছে। রাজাদের আমলে তারা কিন্তু গয়না পরতেন। সময়ের সঙ্গে ট্রেন্ড তো বদলাবেই। এখন সেই সময়। এর জন্য  শুধু আত্মবিশ্বাসের প্রয়োজন।” 

কিছুদিন আগে কান চলচ্চিত্রের আসরে বলিউড বাদশা শাহরুখ খানকে একাধিক গয়না পরে উপস্থিত হতে দেখা গেছে। 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য র গয়ন

এছাড়াও পড়ুন:

জনপ্রিয় থ্রিলার লেখক ফ্রেডেরিক ফোরসাইথ মারা গেছেন

ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক, গোয়েন্দা থ্রিলার লেখক ফ্রেডেরিক ফোরসাইথ মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

ফ্রেডেরিক ফোরসাইথের মুখপাত্র জনাথন লয়েড এর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা ও দ্য গর্ডিয়ান জানায়, ফোরসাইথ সোমবার (৯ জুন) বাকিংহামশায়ারের জর্ডানস গ্রামে নিজ বাড়িতে মারা যান।

জনাথন লয়েড বলেন, “আমরা বিশ্বের সেরা থ্রিলার লেখকদের একজনকে হারালাম। ‘দ্য ওডেসা ফাইল’ এবং ‘দ্য ডগস অব ওয়ার’-এর মতো ২৫টিরও বেশি বই (যার অধিকাংশ বই থ্রিলার) লিখেছেন তিনি, যা বিশ্বজুড়ে ৭৫ মিলিয়নেরও বেশি বিক্রি হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

আসছে অরুন্ধতী রায়ের নতুন বই ‘মাদার মেরি কামস টু মি’

নোবেলজয়ী লেখক হান ক্যাং এর সাহিত্য নিয়ে কালির বৈঠক

ফ্রেডেরিক ফোরসাইথ সর্বাধিক বিক্রিত ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক। ফোরসাইথ একসময় সংবাদ প্রতিবেদক এবং যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই সিক্সের তথ্যদাতা হিসেবে কাজ করেছেন। পরে তিনি ‘দ্য ডে অব দ্য জ্যাকেল’-এর মতো বিশ্ববিখ্যাত উপন্যাস রচনা করেন।

ফ্রেডেরিক ফোরসাইথের প্রকাশক বিল স্কট-কের বলেন, “লক্ষাধিক পাঠকের হৃদয়ে আজো অমলিন ফ্রেডির থ্রিলারগুলো। এই ধারাকে তিনি নতুন সংজ্ঞা দিয়েছেন, যা সমকালীন লেখকদের জন্য অনুপ্রেরণা।”

কেন তিনি লিখতেন
ঋণমুক্ত হওয়ার জন্য উপন্যাস লেখা শুরু করেছিলেন ফোরসাইথ। তখন তার বয়স ছিল ত্রিশের কোঠায়। পরে তার লেখা বইয়ের ৭ কোটি ৫০ লাখের বেশি কপি বিক্রি হয়।

২০১৫ সালে প্রকাশিত আত্মজীবনীতে ফোরসাইথ লিখেছিলেন, ‘দ্রুত অর্থ উপার্জনের অনেক উপায় আছে। কিন্তু সাধারণ তালিকায় উপন্যাস লেখার অবস্থান ব্যাংক ডাকাতির চেয়েও নিচে।’

প্রথম উপন্যাস লিখেই খ্যাতি
তার প্রথম উপন্যাস ‘দ্য ডে অব দ্য জ্যাকাল’ (১৯৭১) লিখেই খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি বলেছিলেন, “আমি অর্থাভাবে, ঋণে ডুবে, বাসহীন, গাড়িহীন-কিছুই ছিল না। ভেবেছিলাম, এই সংকট থেকে কীভাবে বের হবো? তখনই সবচেয়ে পাগলাটে সমাধান মাথায় এলো-একটি উপন্যাস লিখব।”

এই উপন্যাসটি ১৯৬৩ সালের পটভূমিতে লেখা। যেখানে একজন ইংরেজকে ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট চার্লস দ্য গলকে হত্যার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। এটি একটি কাল্পনিক গল্প। ফোরসাইথ মাত্র ৩৫ দিনে দ্য ডে অব দ্য জ্যাকাল’ উপন্যাসটি লিখেছেন।

১৯৭১ সালে উপন্যাসটি প্রকাশের পরপরই ব্যাপক সাফল্য পান তিনি। পরবর্তী সময়ে এ গল্প অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। এর মধ্য দিয়েই ভেনেজুয়েলার বিপ্লবী ইলিচ রামিরেজ সানচেজ ‘কার্লোস দ্য জ্যাকাল’ উপাধি পান।

তার প্রথম উপন্যাস ‘দ্য ডে অব দ্য জ্যাকাল’ (১৯৭১) লিখেই খ্যাতি অর্জন করেন

এরপর ফোরসাইথ একের পর এক সর্বাধিক বিত্রিত উপন্যাস লিখেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘দ্য ওডেসা ফাইল’, ‘দ্য ডগস অব ওয়ার’। ২০১৮ সালে তার ১৮তম উপন্যাস ‘দ্য ফক্স’ প্রকাশিত হয়।

জন্ম ও কর্মজীবন 
১৯৩৮ সালে কেন্টে জন্মগ্রহণ করেন। ফোরসাইথ বিমানবাহিনীর পাইলট হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। বিভিন্ন ভাষায় তার অসাধারণ পারদর্শিতা ছিল। তিনি ফরাসি, জার্মান, স্প্যানিশ ও রুশ ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। ভাষার ওপর দক্ষতা থাকার কারণে ১৯৬১ সালে তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সে যোগ দেন। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে তিনি রয়টার্সের হয়ে প্যারিস ও বার্লিনে নিয়োজিত ছিলেন।

ফোরসাইথ রয়টার্স ছেড়ে বিবিসিতে যোগ দেন। তবে প্রতিষ্ঠানটির আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই হতাশ হয়ে পড়েন। তার দাবি, নাইজেরিয়া নিয়ে সঠিকভাবে সংবাদ পরিবেশন করতে ব্যর্থ হয়েছে বিবিসি। তার মতে, বিবিসির প্রতিবেদনে আফ্রিকা সম্পর্কে ব্রিটিশ সরকারের উপনিবেশ–পরবর্তী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন দেখা গেছে।

জীবনের পরবর্তী পর্যায়ে ফ্রেডেরিক ফোরসাইথ রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেছিলেন। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নবিরোধী সংবাদপত্র ডেইলি এক্সপ্রেসে কলাম লিখতেন।

১৯৮৮ সালে ক্যারোল কানিংহ্যামের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর ফ্রেডেরিক ফোরসাইথ ১৯৯৪ সালে স্যান্ডি মলয়কে বিয়ে করেন। 

সূত্র: আল জাজিরা, গার্ডিয়ান

ঢাকা/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ