বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অবৈধ অর্থ জব্দ করে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী তিনটি সংস্থা– ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), স্পটলাইট অন করাপশন ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-ইউকে। সংগঠনগুলো যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে দেশটিতে অবস্থানরত সন্দেহভাজন অর্থ পাচারকারী বাংলাদেশি অলিগার্কদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার দাবি জানিয়েছে। এছাড়া পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারে দেশটির আইনপ্রয়োগকারী সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রচেষ্টা অধিকতর জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড.

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও জবাবদিহিমূলক সুশাসনের পথে অগ্রযাত্রার অভূতপূর্ব সম্ভাবনার বর্তমান সুযোগের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে এগিয়ে আসতে হবে। রাষ্ট্রসংস্কারের চলমান উদ্যোগ, বিশেষ করে দুর্নীতির কার্যকর নিয়ন্ত্রণের অন্যতম ক্ষেত্র হিসেবে পাচার হওয়া সম্পদ বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দিতে যুক্তরাজ্যকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। এর মাধ্যমে এমন জোরালো বার্তা দিতে হবে যে, চূড়ান্ত বিবেচনায় অর্থপাচারকারীদেরকে শুধু উৎস হিসেবে বাংলাদেশই নয়, গন্তব্য দেশ যুক্তরাজ্যেও কার্যকরভাবে জবাবদিহি করতে হয়।’

স্পটলাইট অন করাপশনের নির্বাহী পরিচালক সুসান হাওলি বলেন, ‘সময়ের অপচয় না করে তাৎক্ষণিকভাবে যুক্তরাজ্য সরকারের উচিত বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ জব্দের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও অর্থ পুনরুদ্ধারে সংশ্লিষ্ট আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।’

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউকের পলিসি ডিরেক্টর ডানকান হেমস বলেন, ‘অর্থপাচারের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য সরকার যে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, তার প্রতিফলন ঘটাতে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চৌর্যবৃত্তির মাধ্যমে অর্জিত (বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত) যুক্তরাজ্যে ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড সম্পদের যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, যথাযথভাবে অনুসন্ধান করে যুক্তরাজ্য সরকারকে তা জব্দ করতে হবে। ইউকে সরকারের প্রতিশ্রুতি যেন শুধু কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পুনর্যাত্রার প্রচেষ্টায় কার্যকরভাবে সহযোগীর ভূমিকা পালন করতে হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট আইব য ক তর জ য প চ র হওয় সরক র র প চ রক

এছাড়াও পড়ুন:

তারেক রহমানের জন্য গুলশানে বাড়ি প্রস্তুত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরে রাজধানীর গুলশানে এভিনিউর ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন। তিন বেড, ড্রয়িং, ডাইনিং, লিভিং রুম, সুইমিং পুলসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে ওই বাড়িতে।

বিচারপতি আবদুস সাত্তার সরকারের সময় দেড় বিঘা জমির ওপর নির্মিত বাড়িটি খালেদা জিয়ার নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এত বছর বাড়িটি তাঁর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও নামজারি করা ছিল না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ৪ জুন বাড়িটির নামজারির কাগজ খালেদা জিয়ার হাতে তুলে দেন। 

আগে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর সিইও (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) এ বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ছয় মাস আগে তিনি বাড়িটি ছেড়ে দেন। এরপরই তারেক রহমান থাকার উপযোগী করতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাড়িটি এখন পুরোপুরি  প্রস্তুত বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

দলের বিভিন্ন পর্যায়ের সূত্রগুলো জানিয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হলে দেশে ফিরবেন ১৭ বছর ধরে লন্ডনে থাকা বিএনপির এই শীর্ষ নেতা। 

গুলশান–২ গোলচক্কর পেরিয়ে এভিনিউর শেষ মাথায় ১৯৬ নম্বর বাড়ি। মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায়, সাদা রঙের দোতলা বাড়িটির বহিরাঙ্গন ও ভেতরটাও বেশ পরিপাটি করে সাজানো।  তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানও লন্ডনে যাওয়ার আগে বাড়িটি পরিদর্শন করে গেছেন। বাড়িতে মূল ভবন, সুইমিং পুল ছাড়াও সামনে অনেক খোলা জায়গা রয়েছে। ‘ফিরোজা' নামে যে বাসায় খালেদা জিয়া ভাড়া থাকেন, এটি তার সঙ্গে লাগোয়া।

গুলশানের এ বাড়ি ছাড়াও ১৯৮১ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সেনানিবাসে প্রায় ৯ বিঘা (২ দশমিক ৭২ একর) জমির ওপর নির্মিত আরেকটি বাড়ি খালেদা জিয়ার নামে বরাদ্দ দেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার জন্য প্রথমে নোটিশ, পরে আদালতের মাধ্যমে উচ্ছেদ করা হয়। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে শহীদ মঈনুল হোসেন রোডের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পর খালেদা জিয়া কিছুদিন ভাই শামীম এস্কান্দারের বাড়িতে ছিলেন। ২০১২ সালে ২১ এপ্রিল ‘ফিরোজা’য় উঠেন তিনি। 

ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়ে ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য সপরিবারে লন্ডন যান তিনি। তখন থেকেই সেখানেই অবস্থান করছেন তারেক রহমান। লন্ডনে থাকাকালে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান তারেক রহমান। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ