আক্ষেপের সঙ্গে তৃপ্তিও আছে কাবরেরার
Published: 10th, June 2025 GMT
তিন পয়েন্টের আশায় নেমে এক পয়েন্টও জোটেনি বাংলাদেশের। তবে দুই গোল হজমের পর এক গোল শোধ করা আর শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করার মনোভাবে তৃপ্ত বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। তাঁর আক্ষেপের জায়গাটা ভালো খেলেও তিন পয়েন্ট না পাওয়া।
আজ এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের একমাত্র গোলটি করেন রাকিব হোসেন। এর মধ্যে শিষ্যদের বেশ কিছু ভুল নিয়ে কাবরেরাও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি।
বাংলাদেশের একটি পেনাল্টির আবেদন নাকচ করে দেওয়া এবং দ্বিতীয়ার্ধে মোরছালিন, আল-আমিনের বদলির সময় সময় নষ্ট হওয়ার বিষয় নিয়ে রেফারির বিরুদ্ধে অবশ্য সরাসরি কোনো অভিযোগ করেননি বাংলাদেশের কোচ, ‘আমি ঠিকঠাক দেখিনি, তাই বলতে পারছি না।’
বাংলাদেশ খারাপ খেলেছে, না সিঙ্গাপুর খুব ভালো খেলেছে—এমন প্রশ্নের উত্তরে কাবরেরা বলেন, ‘এমন ফল প্রত্যাশিত নয়। আমার মনে হয় সিঙ্গাপুরের শুরুটা ভালো ছিল। এক প্রাণশক্তিতে এবং দ্বিতীয়ত হাই প্রেসিংয়ে শুরু করে তারা। প্রথম ১৫-২০ মিনিটে আমরা কিছু ভুল করেছি। ওখানেই আমরা উদ্যম হারিয়ে ফেলেছি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে যা খেলেছি, তাতে আমাদের গর্ব করা উচিত।’
বাংলাদেশ ম্যাচে একমাত্র গোলটি করেছে দুই গোল হজমের পর। ফিনিশিং ভালো হলে চলে আসতে পারত দ্বিতীয় গোলও। কাবরেরা বলেন, ‘দ্বিতীয় অর্ধে ছেলেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। আমি মনে করি, অন্তত একটা পয়েন্ট আমাদের প্রাপ্য ছিল। প্রতিপক্ষ তাদের সুযোগগুলো কাজে লাগিয়েছে।’
বাংলাদেশের হয়ে এটি হামজা চৌধুরীর তৃতীয় ম্যাচ। ২৫ মার্চ শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে এবং ৪ জুন ঢাকায় ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে তাঁকে যতটা প্রাণবন্ত দেখা গেছে, এবার ততটা নয়।
বাংলাদেশ কোচের মতে, প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তাই এখানে বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে, ‘ভারত ওপরে খেলেছিল। তাই আমরা আক্রমণের জায়গা পেয়েছি। কিন্তু সিঙ্গাপুর আমাদের জায়গা দেয়নি। তাদের রক্ষণ জমাট ছিল।’ ভুটান ম্যাচের সঙ্গে তুলনা টেনে বাংলাদেশ কোচ বলেছেন, ‘প্রতিপক্ষ ভুটানের চেয়ে শক্তিশালী। সে আগের ম্যাচে ভালো খেলেছে, আজও নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছে। কিছু ক্ষেত্রে খুব ভালো করেছে, কিছু ক্ষেত্রে হয়নি।’
বাংলাদেশ দলের হয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন রাকিব হোসেন। তার আগে মিসও করেছেন বেশ কয়েকটি। এই ফরোয়ার্ডকে স্ট্রাইকার হিসেবে না খেলিয়ে উইংয়ে খেলানো যায় কি না, এমন প্রশ্নে কাবরেরা বলেছেন, ‘সে অনেকটা রাইট উইং নিয়ে খেলেছে। আর আমার মতে সে–ই দলের সেরা স্ট্রাইকার। বক্সের মধ্যে আমাদের সেরা। কখনো কখনো সে রক্ষণে নেমে খেলেছে। অন্য কেউ স্ট্রাইকার হিসেবে খেললে কী করতে পারত, জানি না। বিশেষ করে কেউ যখন প্রতিপক্ষের বক্সে খুব একটা জায়গা না পায়।’
ম্যাচের শেষ দিকে গ্যালারি থেকে দর্শক মাঠে বোতল ছুড়ে মেরেছে। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ দলের কোচ বলেছেন, ‘আমি ঘটনাটি দেখিনি। হ্যাঁ, তারা হতাশ হতেই পারে। তবে আমাদের পারফরম্যান্স ভিন্ন দিক দিয়েও দেখুন। আমরা একটি ভালো দলের বিপক্ষে খেলেছি। কিছু সময় আমরাই ওদের চেয়ে ভালো খেলেছি। এটা ঠিক, আমরা আরও ভালো খেলতে পারতাম।’
ফাহিমকে বক্সের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন সিঙ্গাপুরের এক ডিফেন্ডার। বাংলাদেশ দল ফাউলের আবেদন করেছিল। কিন্তু সেটাতে ফাউল না দিয়ে রেফারি দেন কর্নারের নির্দেশ। বাংলাদেশ দল সেটাতে পেনাল্টি পেতে পারত কি না?
কাবরেরা বলেছেন, ‘আমি দেখিনি ঠিক কী ঘটেছে। আবার ভিডিও দেখতে হবে। আমরা ওই সময় চাপ তৈরি করে খেলেছি। অলআউট আক্রমণে ছিলাম। একটা গোল করার পর দ্বিতীয় গোলটিও পেতে পারতাম। কিন্তু সেটি হয়নি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল দ শ দল আম দ র বল ছ ন ক বর র
এছাড়াও পড়ুন:
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া প্রশ্নে রুল
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রুল দেন। একই সঙ্গে যেকোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব (নিযুক্ত) দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
আরও পড়ুননতুন ব্যবস্থাপনায় নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা শুরু০৭ জুলাই ২০২৫নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন রিটটি করেন। রিটে নৌসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।
‘নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামে গত ২৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এনসিটি পরিচালনায় ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।
আগের ধারাবাহিকতায় ৯ জুলাই রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত ২৩ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন। ধার্য তারিখে আদালত আদেশের জন্য ৩০ জুলাই দিন রাখেন। এ অনুসারে আজ বিষয়টি আদেশের জন্য আদালতের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আজ মধ্যাহ্নবিরতির পর আদালত আদেশ দেন। আদালত বলেন, শুধু রুল দেওয়া হলো।
আদেশের সময় রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আহসানুল করিম এবং আইনজীবী কায়সার কামাল ও আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার নতুন দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে এ দায়িত্ব নেয় জাহাজ মেরামতের এ প্রতিষ্ঠান। প্রথমবারের মতো বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হলো চিটাগং ড্রাইডক।
চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহৎ এই টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সিংহভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন হয়।