তিন পয়েন্টের আশায় নেমে এক পয়েন্টও জোটেনি বাংলাদেশের। তবে দুই গোল হজমের পর এক গোল শোধ করা আর শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করার মনোভাবে তৃপ্ত বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। তাঁর আক্ষেপের জায়গাটা ভালো খেলেও তিন পয়েন্ট না পাওয়া।

আজ এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের একমাত্র গোলটি করেন রাকিব হোসেন। এর মধ্যে শিষ্যদের বেশ কিছু ভুল নিয়ে কাবরেরাও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। ‎‎

বাংলাদেশের একটি পেনাল্টির আবেদন নাকচ করে দেওয়া এবং দ্বিতীয়ার্ধে মোরছালিন, আল-আমিনের বদলির সময় সময় নষ্ট হওয়ার বিষয় নিয়ে রেফারির বিরুদ্ধে অবশ্য সরাসরি কোনো অভিযোগ করেননি বাংলাদেশের কোচ, ‘আমি ঠিকঠাক দেখিনি, তাই বলতে পারছি না।’

বাংলাদেশ খারাপ খেলেছে, না সিঙ্গাপুর খুব ভালো খেলেছে—এমন প্রশ্নের উত্তরে কাবরেরা বলেন, ‘এমন ফল প্রত্যাশিত নয়। আমার মনে হয় সিঙ্গাপুরের শুরুটা ভালো ছিল। এক প্রাণশক্তিতে এবং দ্বিতীয়ত হাই প্রেসিংয়ে শুরু করে তারা। প্রথম ১৫-২০ মিনিটে আমরা কিছু ভুল করেছি। ওখানেই আমরা উদ্যম হারিয়ে ফেলেছি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে যা খেলেছি, তাতে আমাদের গর্ব করা উচিত।’

বাংলাদেশ ম্যাচে একমাত্র গোলটি করেছে দুই গোল হজমের পর। ফিনিশিং ভালো হলে চলে আসতে পারত দ্বিতীয় গোলও। কাবরেরা বলেন, ‘দ্বিতীয় অর্ধে ছেলেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। আমি মনে করি, অন্তত একটা পয়েন্ট আমাদের প্রাপ্য ছিল। প্রতিপক্ষ তাদের সুযোগগুলো কাজে লাগিয়েছে।’ ‎ 

‎বাংলাদেশের হয়ে এটি হামজা চৌধুরীর তৃতীয় ম্যাচ। ২৫ মার্চ শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে এবং ৪ জুন ঢাকায় ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে তাঁকে যতটা প্রাণবন্ত দেখা গেছে, এবার ততটা নয়।

বাংলাদেশ কোচের মতে, প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তাই এখানে বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে, ‘ভারত ওপরে খেলেছিল। তাই আমরা আক্রমণের জায়গা পেয়েছি। কিন্তু সিঙ্গাপুর আমাদের জায়গা দেয়নি। তাদের রক্ষণ জমাট ছিল।’ ‎ভুটান ম্যাচের সঙ্গে তুলনা টেনে বাংলাদেশ কোচ বলেছেন, ‘প্রতিপক্ষ ভুটানের চেয়ে শক্তিশালী। সে আগের ম্যাচে ভালো খেলেছে, আজও নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছে। কিছু ক্ষেত্রে খুব ভালো করেছে, কিছু ক্ষেত্রে হয়নি।’

বাংলাদেশ দলের হয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন রাকিব হোসেন। তার আগে মিসও করেছেন বেশ কয়েকটি। এই ফরোয়ার্ডকে স্ট্রাইকার হিসেবে না খেলিয়ে উইংয়ে খেলানো যায় কি না, এমন প্রশ্নে কাবরেরা বলেছেন, ‘সে অনেকটা রাইট উইং নিয়ে খেলেছে। আর আমার মতে সে–ই দলের সেরা স্ট্রাইকার। বক্সের মধ্যে আমাদের সেরা। কখনো কখনো সে রক্ষণে নেমে খেলেছে। অন্য কেউ স্ট্রাইকার হিসেবে খেললে কী করতে পারত, জানি না। বিশেষ করে কেউ যখন প্রতিপক্ষের বক্সে খুব একটা জায়গা না পায়।’

ম্যাচের শেষ দিকে গ্যালারি থেকে দর্শক মাঠে বোতল ছুড়ে মেরেছে। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ দলের কোচ বলেছেন, ‘আমি ঘটনাটি দেখিনি। হ্যাঁ, তারা হতাশ হতেই পারে। তবে আমাদের পারফরম্যান্স ভিন্ন দিক দিয়েও দেখুন। আমরা একটি ভালো দলের বিপক্ষে খেলেছি। কিছু সময় আমরাই ওদের চেয়ে ভালো খেলেছি। এটা ঠিক, আমরা আরও ভালো খেলতে পারতাম।’‎

ফাহিমকে বক্সের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন সিঙ্গাপুরের এক ডিফেন্ডার। বাংলাদেশ দল ফাউলের আবেদন করেছিল। কিন্তু সেটাতে ফাউল না দিয়ে রেফারি দেন কর্নারের নির্দেশ। বাংলাদেশ দল সেটাতে পেনাল্টি পেতে পারত কি না?

কাবরেরা বলেছেন, ‘আমি দেখিনি ঠিক কী ঘটেছে। আবার ভিডিও দেখতে হবে। আমরা ওই সময় চাপ তৈরি করে খেলেছি। অলআউট আক্রমণে ছিলাম। একটা গোল করার পর দ্বিতীয় গোলটিও পেতে পারতাম। কিন্তু সেটি হয়নি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল দ শ দল আম দ র বল ছ ন ক বর র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি

‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে ‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।

এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’

‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন

‎জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।

‎তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

‎কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।

‎পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”

‎গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”

‎অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, ‎যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ