ঈদুল আজহা উদযাপন শেষে কর্মস্থলে ফিরছেন মানুষ। উত্তরের পথে যেতে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহালেও গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার যাত্রা হয়েছে স্বস্তির। দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলের যাত্রীরাও নির্বিঘ্নে রাজধানীতে পা রাখার কথা জানিয়েছেন।

টানা ছুটি থাকায় ফিরতি যাত্রা এমনই হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ হিসেবে বলছেন, ফেরার সময় সাধারণত ছুটির রকমফের অনুযায়ী বিভিন্ন দিনে ঢাকায় আসেন নানা পেশার মানুষ। আর দুর্ভোগের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে এবার অনেকে ছুটি থাকা সত্ত্বেও ঈদের এক দিন পর থেকেই ঢাকামুখী হয়েছেন।

ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে গতকাল দেখা যায়নি ঈদের আগের সেই যানজট ও ধীরগতি। ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামে পৌঁছাতে সাধারণ সময়ে গড়ে ৮ ঘণ্টা লাগে। অথচ এবার ঈদযাত্রায় তা লেগেছে ৩৩ ঘণ্টার বেশি।

টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শরিফ উদ্দিন বলেন, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে যানজট হয়েছিল। সিরাজগঞ্জের দিকে গাড়ির গতি না থাকায় সেতুর ওপর যানবাহন দাঁড়িয়ে ছিল। টোল প্লাজা দিয়ে গাড়ি ছাড়া সম্ভব হয়নি। ফিরতি পথে গাড়ির চাপ থাকলেও কোনো যানজট হবে না, আশা করছি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেনের সুবিধা থাকায় যানবাহন দ্রুতগতিতে আসে। এলেঙ্গায় আসার পর দুই লেনে চলতে গিয়ে গতি কমে যায়। শুরু হয় যানজট। এবার ঈদযাত্রায় এই যানজট ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এ ছাড়া ওভারটেকিং, ছোট ছোট দুর্ঘটনা, গাড়ি বিকল হওয়ার কারণেও যানজট হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পথে বাসে অগ্রিম টিকিট না দেওয়ায় ঈদযাত্রায় দুর্ভোগ পোহান যাত্রীরা। এ ভোগান্তির শিকার জসিম উদ্দিন গতকাল লক্ষ্মীপুর থেকে নির্বিঘ্নে ঢাকায় ফেরার কথা জানিয়েছেন। একই স্বস্তির কথা জানান বরিশাল থেকে আমিনুল ইসলাম, নেত্রকোনা থেকে সাইফুল হক ও কুষ্টিয়া থেকে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী নাফিজা ইসলাম।

রেলপথ অবরোধের ডাক, ভোগান্তির শঙ্কা

‘চারঘাটের সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে আজ বুধবার রাজশাহীর চারঘাটে নন্দনগাছী রেলস্টেশন অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এতে ঈদের ফিরতি যাত্রায় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়সহ যাত্রীদের তীব্র ভোগান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ১০ বছর ধরে বন্ধ নন্দনগাছী স্টেশন চালু, সংস্কার ও এখানে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে গত ১ মে সেখানে রেলপথ অবরোধ করা হয়।

অব্যবস্থাপনায় বাসযাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ

পূর্বাশা পরিবহনের এসি বাস সার্ভিসের অব্যবস্থাপনায় ওমেদুল ইসলাম মাসুদ (৬০) নামে এক যাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, ঢাকা থেকে ঝিনাইদহে যাওয়ার পথে বাসে এসি না চলায় ‘হিট স্ট্রোকে’ তাঁর মৃত্যু হয়। ঈদের পরদিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঝিনাইদহ-কালীগঞ্জ সড়কে এ ঘটনা ঘটে। তিনি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের রাঙ্গিয়ারপোতার বাসিন্দা ছিলেন।
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন বগুড়া ব্যুরো, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, চারঘাট (রাজশাহী) ও ঝিনাইদহ প্রতিনিধি)


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদয ত র ঝ ন ইদহ এল ঙ গ য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

‘যেন ভূমিকম্প হল’ বিমান দুর্ঘটনার বর্ণনায় প্রত্যক্ষদর্শী

ভারতের আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, যখন বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল তখন তার মনে হয়েছিল, ‘যেন ভূমিকম্প হল’। খবর বিবিসি বাংলার

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ১৭ মিনিটে ভারতের আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিধ্বস্ত হয় উড়োজাহাজটি। এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি যুক্তরাজ্যের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল।

সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি ঘরেই বসে ছিলাম, হঠাৎ প্রচন্ড একটা শব্দ হল। মনে হল যেন ভূমিকম্প হচ্ছে। আমি তখনও জানতাম না বিমান ভেঙে পড়েছে। পরে এখানে এসে জানতে পারি।’ 

‘এখানে এসে দেখি, বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে আর ওখানে অনেকগুলো মৃতদেহ পড়ে আছে, বলেছেন ওই প্রত্যক্ষদর্শী।

বিজেপি বিধায়ক দর্শনা বাঘেলা সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, তিনি ঘটনাস্থলের কাছেই নিজের দপ্তরে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে আমার অফিসে বসেছিলাম। সেখানেই বিস্ফোরণ ঘটে। সেখানে গিয়ে দেখি, বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রচুর ধোঁয়া বেরোচ্ছে। ডাক্তারের হোস্টেলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় শ্রমিকদের সহায়তায় আমরা অনেককে উদ্ধার করতে পেরেছি।

এদিকে ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (ডিজিসিএ) জানিয়েছে, বিধ্বস্ত বিমানটিতে ২৪২ জন আরোহী ছিলেন। এর মধ্যে ২৩০ জন যাত্রী, ২ জন পাইলট ও ১০ জন কেবিন ক্রু। বিমানটি চালাচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত সাবারওয়াল। তার সঙ্গে ছিলেন ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দার। তবে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ এখনও জানা যায়নি।

পুলিশের বরাতে বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, বিধ্বস্ত বিমানে থাকা ২৪২ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ