ঈদে নতুন দুই সিনেমা নিয়ে হাজির হয়েছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। একটি রায়হান রাফীর ‘তাণ্ডব’, অন্যটি তানিম নূরের ‘উৎসব’। দুই সিনেমার প্রচারে ঈদের দিন থেকে বিভিন্ন হলে দর্শকের কাছে ছুটছেন এই অভিনেত্রী।

‘তাণ্ডব’ সিনেমার প্রচারে গিয়ে জয়া আহসান বলেন, ‘ঈদের সময় যখন সিনেমা রিলিজ হয়, তখন ঈদটা সিনেমাকে ঘিরেই হয়ে যায়। ঈদের দিন সকাল থেকেই সবাই খোঁজ নিই সিনেমাটি কেমন চলছে। ‘তাণ্ডব’ সিনেমার খবর নিয়ে জানতে পারলাম সকাল থেকেই সিনেমা হলে দর্শকের ভিড়। সিনেমাটি দেখার জন্য মানুষ একেবারে ক্রেজি হয়ে গেছে। এটা তো আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির জন্য অনেক ভালো বিষয়।’

‘তাণ্ডব’ দিয়ে এক দশকের বেশি সময় পর শাকিব খানের সঙ্গে কাজ করেছেন জয়া আহসান। অ্যাকশন ঘরানার এই সিনেমায় জয়া অভিনয় করেছেন সাংবাদিক চরিত্রে। আরও আছেন আফজাল হোসেন, শহীদুজ্জামান সেলিম, রোজী সিদ্দিকী, এজাজুল ইসলাম, সুমন আনোয়ার, মুকিত জাকারিয়া প্রমুখ।

দর্শকদের সঙ্গে সিনেমাটি দেখে জয়া আহসান বলেন, ‘আমি নিজে দর্শকের সঙ্গে সিনেমাটি দেখেছি। দর্শক হিসেবে আমার তো মনে হয়েছে টু হান্ড্রেড পার্সেন্ট পয়সা উশুল। সিনেপ্লেক্সের ভেতরেও দর্শক যেভাবে শিস বাজাচ্ছে, হাততালি দিচ্ছে, সেটাতেই বলে দেয় ‘তাণ্ডব’ মানুষের কতটা ভালোবাসা পাচ্ছে।’

জয়া বলেন, ‘‘তাণ্ডব’ সিনেমার মূল হলো গল্প। আমাদের টিমটাও দুর্দান্ত ছিল। পর্দার সামনে ও পেছনে সবাই অনেক অ্যাফোর্ট দিয়েছে। আমার মনে হয় সিনেমাটি সবাই ভালোবাসবে। আমরা নিজেরাও অনেক আনন্দ নিয়ে কাজটি করেছি। এরইমধ্যে অনেক ফিডব্যাক পাচ্ছি।”

অন্যদিকে ‘উৎসব’ সিনেমার প্রচারেও প্রেক্ষাগৃহে যাচ্ছেন জয়া। গতকাল সিনেমা হলে গিয়ে দর্শকের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন জয়া আহসান।

এসময় তিনি বলেন, ‘দর্শকরাই বলছেন, ‘উৎসব’ সিনেমাটি অনেকদিন মানুষে মাঝে থেকে যাবে। এই সিনেমায় যতগুলো শিল্পী কাজ করেছেন সবাইকে একসঙ্গে করা সবচেয়ে কঠিন কাজ। আমি দেশ ও দেশের বাইরে বিক্ষিপ্তভাবে কাজ করে, চঞ্চল ভীষণ রকম ব্যস্ত শিল্পী, অপি পছন্দসই কাজ না হলে কাজ করেন না। এটা সম্ভব হয়েছে শুধু পরিচালকের কারণে। আমার মনে হয় সিনেমাটির যাত্রা অনেক লম্বা হবে। আর সিনেমা দেখতে গিয়ে আমি টিকিট পাইনি। এটা মনে হলে লজ্জা লাগছে। আশা করি নির্মাতা সবাইকে সিনেমাটি দেখার ব্যবস্থা করে দেবেন।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জয় আহস ন ক জ কর আহস ন

এছাড়াও পড়ুন:

টাঙ্গাইলে ‘তাণ্ডব’ প্রদর্শনীতে স্থানীয় 'আলেম সমাজের’ বাধা

দেশে ঈদের মত বড় দুই উৎসবে  মানুষের বিনোদনের অনত্যতম অনুসঙ্গ হয়ে উঠেছে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখা। বিগত কয়েক বছর ধরে ঈদে সিনেমা দেখার বিষয়টি যেনো আরও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। মাল্টিপ্লেক্স ও সিঙ্গেল স্ক্রিনে উপচে পড়ছে দর্শক। তবে দেশের সব জেলায় হল না থাকায় বিকল্প পদ্ধতিতে সিনেমা প্রদর্শনীতে এগিয়ে আসেন অনেক উদ্যোক্তা।

স্থানীয় অডিটোরিয়াম ভাড়া করে তারা উৎসবে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো নির্ধারিত ফি নিয়ে তা প্রদর্শনা করান। এই প্রক্রিয়াতে  টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আউলিয়াবাদ অডিটোরিয়ামে  'তাণ্ডব' সিনেমা প্রদর্শনীর আয়োজক জাজ মাল্টিমিডিয়ার হেড অব মার্কেটিং কামরুজ্জামান সাইফুল। কিন্তু স্থানীয় 'আলেম সমাজে'র আপত্তির মুখে তা বন্ধ হয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে সেখানে সিনেমা প্রদর্শনীর এক মাসের অনুমতি থাকলেও আয়োজকরা বৃহস্পতিবারের মধ্যেই শো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

কামরুজ্জামান সাইফুল জানান, সব জায়গা থেকে সিনেমা প্রদর্শনের অনুমতি নেয়া ছিল। সার্টিফিকেশন বোর্ডের ইউিনভার্সেল রেটেড সার্টিফিকেট সবই ছিল। তাও সিনেমা প্রদর্শনীতে বাধা। 

আমি হাত জোড় করে মাফ চেয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময়ের আর্জি জানালাম। আলেম সমাজ অনড়। আমাকে কালই চলে যেতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমি না চলে যাবো ততক্ষণ পর্যন্ত তারা গোনাহগার হতে থাকবে, এলাকায় গজব পড়তে থাকবে। এতবড় পাপের বোঝা নিয়ে তারা হাসরের ময়দানে দাঁড়াতে পারবেনা। 

গতকাল কামরুজ্জামান সাইফুল   টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ থেকে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় এবং পাঁচ দিনের ভাড়া অগ্রিম দিয়ে ঈদের দিন থেকে এক মাসের জন্য সিনেমাটি প্রদর্শনের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল।  বাধার কারণে আজকের মধ্যেই প্রদর্শনী গুটিয়ে নিতে হচ্ছে।  ঈদের আগের দিন থেকেই স্থানীয় মসজিদ ও মাদ্রাসা থেকে মাইকে 'তাণ্ডব' প্রদর্শনী বন্ধ করতে বলা হয় এবং পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়। এরপর একটি মিছিলও বের করা হয়, যা স্থানীয়ভাবে ভাইরাল হলে জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়। ঈদের দিন দর্শক না আসায় মাত্র ২০-২৫ জন দর্শক নিয়েই সন্ধ্যার শো চালু রাখেন তিনি।

সাইফুল বলেন, 'পরদিন সিনেমা হল বন্ধে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করা হয়। ঈদের আগেই থানায় পুলিশি সহায়তা চেয়ে আবেদন করেছিলাম। তবে থানা থেকে কোনো ধরনের সহায়তা করা হয়নি। ঈদের ছুটিতে টাঙ্গাইল ডিএসবি এবং এসপি অফিসে যোগাযোগ করেও সাহায্য না পেয়ে ব্যর্থ হতে হয়। শত বাধা সত্ত্বেও একক ইচ্ছেতে ঈদের পরের দিন অডিটোরিয়াম চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিই। সেদিন মিছিল না হলেও তাদের সমাবেশ ঘটে।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় (ইউনিয়ন শাখা) ইমাম পরিষদের সহ-সভাপতি মাদ্রাসা শিক্ষক হযরত আলী গণমাধ্যমকে বলেন, 'এলাকায় বেশ কয়েকটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অশ্লীলতা ছড়াতে পারে এমন আশঙ্কায় আলেম সমাজসহ স্থানীয়রা এই সিনেমা প্রদর্শনের বিপক্ষে।'

তিনি বলেন, 'আয়োজক যিনি তিনি আমাদের কাছে এসেছিলেন, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিনেমা চালানোর কথা বলেছিলেন। কিন্তু আমরা তো তাকে এটা চালাতে বলতে পারি না।'

এদিকে আলেম সমাজের বাধা প্রধানের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিষয়টি সামনে আসার পরই সোস্যাল মাধ্যমে প্রতিবাদ করছেন সিনেমাপ্রেমীরা। তবে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ দেখা যায়নি কোথাও। 

এ ঘটনায়  কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম  ঈদের ছুটিতে আছেন জানিয়ে বলেন, 'দেশে চলচ্চিত্র প্রদর্শন নিষিদ্ধ নয়। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির একটি শান্তিপূর্ণ সুরাহা করা হবে।' 


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘উৎসব’ নিয়ে আগ্রহ দর্শকের, শো বাড়ল দ্বিতীয় সপ্তাহে
  • ‘উৎসব’ কেন দেখতেই হবে
  • ‘উৎসব’–এর শো বাড়ল
  • ‘উৎসব’-এ আমরা কয়েকজন শুধু যোদ্ধা হিসেবে ছিলাম: অপি করিম
  • আমরা কয়েকজন শুধু যোদ্ধা হিসেবে ছিলাম: অপি করিম
  • হঠাৎ তুমুল আলোচনায় জয়া 
  • ঈদে উৎসবে দাঁতের সমস্যায়
  • টাঙ্গাইলে ‘তাণ্ডব’ প্রদর্শনীতে বাধা
  • টাঙ্গাইলে ‘তাণ্ডব’ প্রদর্শনীতে স্থানীয় 'আলেম সমাজের’ বাধা