পুঠিয়ায় আওয়ামী লীগ সমর্থকের বাড়িতে আগুন দেওয়ায় বিএনপির দুই নেতা আজীবন বহিষ্কৃত
Published: 11th, June 2025 GMT
রাজশাহীর পুঠিয়ায় গত সোমবার এক বিএনপি নেতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সমর্থক একজন ব্যবসায়ীর বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের জের ধরে স্থানীয় বিএনপির দুই নেতাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ বহিষ্কারাদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজশাহী জেলা বিএনপি। ওই দুই নেতার নাম আনোয়ারুল ইসলাম (জুম্মা) ও রফিকুল ইসলাম।
সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম এবং উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো.
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনার শিকার ব্যবসায়ীর নাম আবদুল হান্নান পুঠিয়ার হাতিনাদা গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় কাঠ ব্যবসায়ী। তিনি আওয়ামী লীগের সমর্থক। তবে সক্রিয় কর্মী নন। তাঁর ছেলে সেনাবাহিনীর সদস্য। আবদুল হান্নানের বাড়ি ভাঙচুরের সময় হামলা চালানো হয় পাশের আরেকটি বাড়িতে। ওই বাড়িও আরেক সেনা সদস্যের। ঘটনার সময় দুই সেনা সদস্যই ঈদের ছুটিতে বাড়িতে ছিলেন। হামলাকারীদের ভয়ে তাঁদের আত্মগোপন করতে হয়েছিল।
ঘটনার পর পুঠিয়া থানায় মামলা করেছেন আবদুল হান্নান। এ মামলায় রফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। প্রথম আলোকে আবদুল হান্নান জানান, বানেশ্বর ইউনিয়নের নন্দনপুর বাজারের চায়ের দোকানে তাঁর ছোট ছেলে তুষার আহমেদ মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে বসে চা পান করছিল । এ সময় তুষারের সঙ্গে বিএনপি নেতা ও ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের চোখাচোখি হয়। তখন রফিকুল তুষারকে মারধর করেন। এ সময় ছেলেকে সান্ত্বনা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন বলে জানান হান্নান।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মামলার বাদী আবদুল হান্নান আরও বলেন, তাঁর বড় ছেলে সেনাবাহিনীতে চাকরি করে। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে। ছোট ছেলেকে মারার কিছুক্ষণ পরেই রফিকুল ইসলাম তাঁর লোকজন নিয়ে এসে বাড়িতে হামলা চালান। বুঝতে পেরে হান্নান বড় ছেলেকে নিয়ে পাশের একটি বাড়ির চাতালে লুকিয়ে থাকেন। রফিকুল তাঁর লোকজনকে নিয়ে বাড়ির সব জিনিস ভাঙচুর করেন। চলে যাওয়ার সময় আগুন ধরিয়ে দেন। এতে বাড়ির রান্নাঘর, লাকড়িঘর ও একটি ছোট ঘর পুড়ে গেছে। দুটি ছাগল ও একটি গরু পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভান।
আবদুল হান্নানের দাবি, ৫ আগস্টের পর তাঁর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন ইউপি সদস্য রফিকুল। চাঁদা না দিলে মারধর ও বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি; কিন্তু হান্নানের জবাব দিয়েছিলেন, মেরে ফেললেও চাঁদা দেবেন না। কেন তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করা হয়েছিল, এমন প্রশ্নে আবদুল হান্নান বলেন, ইউপি সদস্য রফিকুল বিএনপির রাজনীতি করেন, আর তিনি (আবদুল হান্নান) আওয়ামী লীগের সমর্থক। এ জন্যই চাঁদা দাবি করা হয়েছিল।
যোগাযোগের চেষ্টা করলে রফিকুল ইসলামের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে আনোয়ারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই বহিষ্কারাদেশ আমি দেখেছি। হাতিনাদা গ্রামের আওয়ামী লীগ পরিবারে আগুন ভাঙচুরের ঘটনা নিন্দনীয়, ঠিক আছে। রফিক মেম্বারের এ কাজ করা ঠিক হয়নি। ঘটনার সঙ্গে আমি কোনোভাবেই জড়িত নই। অন্যায়ভাবে আমার বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাই।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আবদ ল হ ন ন ন সদস য র ব এনপ র ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
উড়োজাহাজে তীব্র ঝাঁকুনিতে মনে হচ্ছিল, আর বুঝি দেশে ফেরা হবে না
ছবি: লেখক