বাংলাদেশে শিশু গৃহকর্মী সুরক্ষায় আইন নেই
Published: 12th, June 2025 GMT
শিশুশ্রম নিয়ে আইন আছে। কিন্তু গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের সুরক্ষায় আইন নেই। অথচ দেশে প্রতিনিয়ত ৪০ শতাংশ শিশু, আর রাজধানীতে প্রায় ৫০ শতাংশ শিশু নানা ধরনের সহিংসতার শিকার হয়। তারা মারধরসহ নানা নিপীড়ন সহ্য করছে। তাই সুনির্দিষ্ট আইন ও এর যথাযথ প্রয়োগ এসব শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবে বলে মনে করেন শিশু সুরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
তারা মনে করেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) আলোকে সরকার চলতি বছরের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে অঙ্গীকারবদ্ধ। সরকারের এ প্রতিশ্রুতি ও ঘোষণা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুর অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন এবং তার সফল বাস্তবায়ন। বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতায় আইন কমিশনের জন্য এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবেও বিবেচিত হবে বলে মনে করছেন তারা।
এ অবস্থায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ পালন করা হবে বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। তবে ঈদুল আজহার ছুটির কারণে আগামী ১৯ জুন সরকারিভাবে দিবসটি উদযাপন করা হবে। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে– ‘স্বপ্নের ডানায় ভর করি, শিশুশ্রমের শৃঙ্খল ছিঁড়ি; এগিয়ে চলি দৃপ্ত পায়ে, আশার আগুন বুকে জ্বালি।’
বাংলাদেশের জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশই শিশু। এসব শিশুর একটি বড় অংশ শ্রমজীবী। তাদের মধ্যে অনেকে গৃহকাজে নিয়োজিত। শ্রমজীবী শিশুদের প্রকৃত সংখ্যার হালনাগাদ কোনো তথ্য নেই। কারণ, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জাতীয় শিশুশ্রম জরিপে গৃহকর্মী শিশুর তথ্য অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে ২০০৭ সালে আইএলও-ইউনিসেফ পরিচালিত একটি জরিপ সূত্রে জানা যায়, তখন বাংলাদেশে গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা ছিল প্রায় চার লাখ ২০ হাজার। দেশের সামগ্রিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার বিবেচনায় ২০২৫ সালে এসে সংখ্যাটি বেড়েছে বলে মনে করছেন শিশু সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা সংস্থার প্রতিনিধিরা।
শিশু সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ শরফুদ্দিন খান জানান, বাংলাদেশের বিদ্যমান কোনো আইনে গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুর অধিকার ও সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। এ জন্য তারা আইনি সুরক্ষা থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত। শ্রম আইন, ২০০৬ অনুসারে গৃহকর্মীদের অধিকারের বিষয়টি স্পষ্টতই শ্রম আইনের বিধিবিধান বহির্ভূত। শ্রম আইনের ১ (৪) ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, এ আইন গৃহকর্মীদের বেলায় প্রযোজ্য হবে না। শিশু আইন, ২০১৩ অনুযায়ী শিশু আইনের বিধিবিধানগুলো মূলত সেসব শিশুদের সুরক্ষার জন্য কাজ করে, যেসব শিশু কোনো অপরাধের কারণে আইনের সংস্পর্শে বা বিচার ব্যবস্থার সংস্পর্শে আসে।
তিনি জানান, শিশু আইনের ৪৪ নম্বর ধারাতে কারখানায় কর্মরত শিশু শ্রমিকের অধিকার বিষয়ে বলা হয়েছে। এ ধারা অনুসারে, কোনে ব্যক্তি যদি কোনো শিশুকে কারখানায় বিপজ্জনক কাজ করান এবং অর্থনৈতিকভাবে বা অন্য কোনোভাবে শোষণ করেন, তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সুতরাং এ আইনেও গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুর অধিকার সুরক্ষিত হয়নি। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০- এর বিধিবিধান নারী-শিশুর ওপর নির্যাতন দমনে প্রণীত। এ আইনের বিভিন্ন ধারায় হত্যা, নারী ও শিশু পাচার, পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা, নারী ও শিশু অপহরণ, ধর্ষণ ইত্যাদি অপরাধের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। অনেক গৃহকর্মীর ক্ষেত্রে এগুলো প্রযোজ্য হলেও বিশেষ কোনো দৃষ্টি দেওয়া হয়নি।
শরফুদ্দিন খান জানান, শুধু গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি, ২০১৫-তে ১৪ বছরের নিচে কোনো শিশুকে গৃহকর্মে নিয়োগ করা যাবে না উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে ১২ বছর বয়সী শিশুদেরও গৃহকাজে নিয়োগ দেওয়া যাবে, যদি কাজটি তার জন্য ক্ষতিকারক না হয়, অথবা এর ফলে তার শিক্ষা গ্রহণকে বাধাগ্রস্ত না করে।
এডুকো বাংলাদেশের ম্যানেজার চাইল্ড লেবার ইলিমিনেশন আফজাল কবির খান সমকালকে বলেন, গৃহকর্মী শিশুদের সুরক্ষায় বাংলাদেশে আসলে কোনো আইন নেই। শুধু গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫ রয়েছে। কিন্তু সেই নীতিমালার অনুকরণেও কোনো আইন নেই। এতদিনেও নীতিমালা অনুযায়ী গৃহকর্মী শিশুদের সুরক্ষায় কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ শ দ র স রক ষ স রক ষ য় গ হকর ম আইন ন ই র জন য গ হক জ আইন র
এছাড়াও পড়ুন:
সনাহাদির উপরে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে শহরে যুবদলের মিছিল
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি ও চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি’র মনোনয়নপ্রাপ্ত এরশাদ উল্লাহর উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল ও সদস্য সচিব সাহেদ আহমদের নেতৃত্বে শহরে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল করেছে মহানগর যুবদল।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল তিনটায় শহরের খানপুর হাসপাতাল রোড় থেকে শহরে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল বের করে মহানগর যুবদল। মিছিলটি খানপুর থেকে শুরু করে মেট্রোহলের মোড় হয়ে মিশন পাড়া হোসিয়ারি সমিতির সামনে এসে মহানগর বিএনপির মূল মিছিলের সাথে অংশগ্রহণ করেন।
এময়ে মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি ও চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি’র মনোনয়নপ্রাপ্ত এরশাদ উল্লাহর উপরে হত্যাচেষ্টার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং জড়িত দুষ্কৃতিকারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শ্লোগান দেয়।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল ও সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদের নেতৃত্বে এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরে এলাহী সোহাগ, যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন কমল, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ অপু, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক শাকিল মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান খলিল শ্যামল, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল আলম সজিব, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাফি উদ্দিন রিয়াদ, শহিদুল ইসলাম, ওয়াদুদ ভূইয়া সাগর, পারভেজ খান, আরমান হোসেন, কামরুল ইসলাম রনি, মিনহাজ মিঠু, আশিকুর রহমান অনি, জুয়েল রানা, কামরুল হাসান মাসুদ, ফয়েজ উল্লাহ সজল,আলী ইমরান শামীম, তরিকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম আপন, শাহীন শরীফ, মাগফুর ইসলাম পাপন, জুনায়েদ আলম ঝলক, ফয়সাল আহমেদ, সাইদুর হাসান রিপন, আরিফ খান, কায়সার আহমেদ, এড. শাহিন খান, কাজী নাইসুল ইসলাম সাদ্দাম, আলী হোসেন সৌরভ, বাদশা মিয়া, মাসুদ রানা, মাকসুদুর রহমান শাকিল, রুবেল সরদার, রিয়াজুল আলম ইমন, জুনায়েদ মোল্লা জনি, হাবিবুর রহমান মাসুদ, আঃ কাদির, আশরাফুল হক তান্না, জাহিদুল হাসান শুভ, মাহফুজুর রহমান ফয়সাল প্রমুখ ।