করিডোর এবং চট্টগ্রাম বন্দর ইস্যুতে কঠোর আন্দোলনে যাচ্ছে বামপন্থি দল ও জোটগুলো। এরই অংশ হিসেবে ২৭ ও ২৮ জুন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চ করবে তারা।

রাখাইনে মানবিক করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে অন্তর্বর্তী সরকার সরে 
না এলে পর্যায়ক্রমে ঘেরাও, অবরোধ ও হরতালের পরিকল্পনা রয়েছে বামপন্থিদের। পাশাপাশি ইপিজেডে সমরাস্ত্রের যন্ত্রাংশ তৈরির উদ্যোগ ও স্টারলিংকের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের জন্য আগেই দাবি এবং রাজপথে পৃথক বিক্ষোভ করেছে তারা।

সরকার উদ্যোগ না নেওয়ায় বামপন্থি দলগুলোর অন্যতম প্রধান বাম গণতান্ত্রিক জোট সমন্বিতভাবে বৃহৎ পরিসরে আন্দোলন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়। পরে তারা বামপন্থিদের অন্য দুই জোট– ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা ও গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সঙ্গে আলোচনা করে ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করে।

বাম গণতান্ত্রিক জোটে ছয় এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা ও গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের শরিক হিসেবে আরও চারটি দল সক্রিয়। এ ছাড়া উদ্যোক্তারা বাংলাদেশ জাসদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে। ১৩ জুন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দল ও সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা শেষে বৃহৎ আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করবে।

বামপন্থি নেতারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর লিজ ও রাখাইনে মানবিক করিডোর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি দেওয়া হলে সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হবে। যদিও সব মহলের বিরোধিতার মুখে করিডোর বিষয়ে সরকার সুর পাল্টেছে। তারা পুরো বিষয়কে রাখাইনে ‘ত্রাণ চ্যানেল বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল মাত্র’ দাবি করেছে। সর্বশেষ ঈদুল আজহার আগের রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার বিরোধিতাকারীদের ‘প্রতিরোধ করার হুমকি’ দিয়েছেন। এ অবস্থায় বাম নেতারা বলছেন, এমন আত্মঘাতী সরকারের বিরুদ্ধে সচেতন জনগণকে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই।

রোডমার্চ সফল করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাম দলগুলো। কেন্দ্রীয় নেতারা মঙ্গলবার চট্টগ্রাম এবং গতকাল বুধবার ফেনী ও কুমিল্লা সফর করেছেন। সফরে ওই অঞ্চলের বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতা এবং ব্যক্তির সঙ্গে সভা ও মতবিনিময় করেন।

বাম নেতারা বলছেন, ২৭ ও ২৮ জুনের ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চ হবে সর্বস্তরের দেশপ্রেমিক জনগণের রোডমার্চ। এ সময় জেলা-উপজেলায় একই দাবিতে সংহতি সমাবেশ ও পদযাত্রা হবে।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স সমকালকে বলেন, ‘দেশের নীতিনির্ধারণী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার নেই অন্তর্বর্তী সরকারের। কথাটি সরকারকে মনে রাখতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দর লিজ এবং মানবিক করিডোরের নামে সাম্রাজ্যবাদীদের সঙ্গে আঁতাত এবং অন্যান্য আঞ্চলিক শক্তির সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর চক্রান্ত দেশবাসীকে নিয়ে রুখে দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চের ঘোষণা দিয়েছি। সরকার দেশের স্বার্থবিরোধী এ পথ থেকে সরে না এলে দেশবাসীকে নিয়ে প্রয়োজনে ঘেরাও, অবরোধ ও হরতাল দেওয়া হবে।’

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘সরকার মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থরক্ষায় দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বার্থবিরোধী নানা পরিকল্পনা নিচ্ছে। বিশেষত চট্টগ্রাম বন্দর লিজ প্রদান ও করিডোর দেওয়ার মতো আত্মঘাতী পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে কঠোর গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর ড র ব ম গণত ন ত র ক ব মপন থ কর ড র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইউরোপে পাইলটদের বেতন কোন দেশে কত

ইউরোপে সবচেয়ে বেশি বেতনের পেশার মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে পাইলট। ফ্রান্সে এটি পঞ্চম সর্বোচ্চ মাসিক বেতনের পেশা। জার্মানিতে জটিল ভূমিকার পাইলটেরা মাসে ২৮ হাজার ৯৬ ইউরো উপার্জন করেন। যুক্তরাজ্যে পূর্ণকালীন পাইলট ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা মধ্যম আয়ে পঞ্চম স্থানে। ডেনমার্কে ২০২৩ সালে মাসিক বেতন ১৩ হাজার ৫২৩ ইউরো, দেশটির হিসাবে সপ্তম সর্বোচ্চ বেতন।

অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বেতনের বৈচিত্র্য

পাইলটদের বেতন দেশ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়। যুক্তরাজ্যে বেতন শুরু হয় বছরে ৫৪ হাজার ২৮৩ ইউরো (৪৭,০০০ পাউন্ড) থেকে, অভিজ্ঞ পাইলটদের জন্য এটি প্রায় ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৪৩ ইউরো (১ ইউরো সমান ১৪১ টাকা ৭৭ পয়সা, ২২ অক্টোবর ২০২৫ হিসাবে) পর্যন্ত হতে পারে, জানিয়েছে ব্রিটিশ ন্যাশনাল ক্যারিয়ার্স সার্ভিস।

ইআরআই অর্থনৈতিক গবেষণা ইনস্টিটিউট জানায়, আট বছরের বেশি অভিজ্ঞতার পাইলটরা এক থেকে তিন বছরের অভিজ্ঞ পাইলটের চেয়ে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ বেশি আয় করেন। অর্থাৎ অভিজ্ঞ পাইলটরা প্রায় তিন গুণ বেশি উপার্জন করেন।

আরও পড়ুনফ্রিল্যান্সিংয়ে নামার আগে এ পাঁচটি বিষয় ভাবুন১৯ অক্টোবর ২০২৫দেশভিত্তিক তথ্য

যুক্তরাজ্য

২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত এএনএসের তথ্যানুসারে, পূর্ণকালীন ‘এয়ারক্রাফট পাইলট ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার’-এর বার্ষিক আয় প্রায় ৯৫ হাজার ২৪০ ইউরো (৮০,৪১৪)। ইআরআইয়ের মতে, গড় বার্ষিক বেতন ৯০ হাজার ২৫৩ ইউরো (৭৮,১৪৬ পাউন্ড), লন্ডনের জন্য ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৬২ ইউরো (১০০,০৬০ পাউন্ড)।

জার্মানি

জার্মানির ফেডারেল স্ট্যাটিস্টিক্যাল অফিসের তথ্যমতে, গড় মাসিক বেতন ১২ হাজার ৫৬৬ ইউরো (বার্ষিক ১,৫০,৭৯২ ইউরো)। মধ্যম আয় ১০ হাজার ২০৭ ইউরো (বার্ষিক ১,২২,৪৮৪ ইউরো), অভিজ্ঞ ও বিশেষায়িত পাইলটদের ক্ষেত্রে তা ৩ লাখ ৪২ হাজার ৭২ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। ইআরআইয়ের তথ্য অনুসারে, এক থেকে তিন বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন পাইলটের গড় বেতন ৭৩,৭৮৫ ইউরো, আট বছরের বেশি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন পাইলটদের জন্য ১ লাখ ৩২ হাজার ১১৭ ইউরো।

ফ্রান্স

INSEE জানায়, ‘সিভিল এভিয়েশন টেকনিক্যাল ও কমার্শিয়াল ফ্লাইট অফিসার’দের গড় মাসিক বেতন ৯ হাজার ৩০০ ইউরো (বার্ষিক ১,১১,৬০০ ইউরো)। ERI অনুসারে, অভিজ্ঞ পাইলটদের জন্য গড় বেতন ১ লাখ ৯ হাজার ২৯২ ইউরো।

ছবি: এমিরেটসের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ