লর্ডসের ঐতিহাসিক ভেন্যুতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। আর সেখানেই টেস্ট ইতিহাসে প্রথমবার ঘটল ব্যতিক্রমী এক ঘটনা। ইংল্যান্ডে ১৪৫ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এমন কিছু এর আগে কখনও দেখা যায়নি, দুই দলের দুই ওপেনারই শূন্য রানে ফিরেছেন!

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওপেন করতে নেমেছিলেন উসমান খাজা, আর দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এইডেন মার্করাম। দুজনই ইনিংসের গোড়ায় থামলেন রানের খাতা না খুলেই। ইংল্যান্ডে এখন পর্যন্ত খেলা ৫৬১টি টেস্টেও এমন কাকতালীয় পরিণতি দেখা যায়নি, দুই ইনিংসেই এক নম্বর ব্যাটার ‘ডাক’।

অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে প্রোটিয়া পেসার কাগিসো রাবাদার নিখুঁত বোলিংয়ের সামনে ২০ বল খেলে ফেলেও রান পাননি খাজা। শেষ পর্যন্ত ফিরেছেন শূন্য রানে। পুরো ইনিংসে রাবাদা নেন পাঁচ উইকেট, সঙ্গে মার্কো জানসেনের তিনটি শিকার। ২১২ রানেই থেমে যায় অজিদের প্রথম ইনিংস।

কিন্তু পেস ঝড় থেমে থাকেনি সেখানেই। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসেও নামে একই দুর্যোগ। ৪৪ রান তুলতেই তারা হারায় চার উইকেট। মিচেল স্টার্ক নেন দুটি, একটি করে তুলে নেন প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজলউড। ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে আসা মার্করাম স্টার্কের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন খেলার ছয় বলের মাথায়ই, রান না করেই।

ফলে প্রথম দিনেই দুই দলের দুই ওপেনারকে শূন্য রানে বিদায় দিয়ে তৈরি হলো এক নতুন রেকর্ড। এমন ঘটনা টেস্ট ক্রিকেটে অবশ্য নতুন নয়, এর আগে আরও নয়বার দেখা গেছে দুই দলের দুই ওপেনার ‘ডাক’ মারতে। তবে ইংল্যান্ডে এই প্রথম।

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য তথ্য হলো, এই নয়বারের ঘটনাতেও অস্ট্রেলিয়ার ওপেনারদের নাম আছে ছয়বার! তবে এবার যে কীর্তির সাক্ষী হলো লর্ডস, তা সত্যিই বিরল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ