নরসিংদীতে ২ গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নিহত ১
Published: 12th, June 2025 GMT
ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে নরসিংদীর বেলাবোতে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে সাইফুল ইসলাম (২৬) নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫০ জন। তাদের মধ্যে ১০ জন পুলিশ সদস্য।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে বেলাবো গাল স্কুল মাঠে চরবেলাব ও মাটিয়ালপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, “পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। পুলিশ দ্রুত হস্তক্ষেপ না করলে হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারত। আমরা কয়েকজনকে শনাক্ত করেছি। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।”
আরো পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪ ঘণ্টার সংঘর্ষে আহত ৯০
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টিস্যু চাওয়া নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ১৫
নিহত সাইফুল চরবেলাব গ্রামের জীবন মিয়ার ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বুধবার ফুটবল ম্যাচ চলাকালে গ্যালারিতে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। খেলার ফলাফলের বিরোধ নিয়ে শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। আজ চরবেলাব ও মাটিয়ালপাড়া গ্রামের লোকজন বাকবিতাণ্ডায় জড়ায়। মুহূর্তেই তা রূপ নেয় সংঘর্ষে। এ সময় সাইফুল নিহত হন। আহত হন ৫০ জন। তাদের মধ্যে ১০ জন পুলিশ সদস্য। পরে পুলিশ রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঢাকা/হৃদয়/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ন হত আহত স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।