গাজীপুরের কাপাসিয়া যেন আনারস চাষের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় হওয়ায় দেশজুড়ে ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে এই এলাকার আনারস। গ্রীষ্মকালীন অন্যান্য মৌসুমি ফলকে টেক্কা দিয়ে বাজারে আধিপত্য বিস্তার করেছে কাপাসিয়ার আনারস।

উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের জলপাইতলা বাজার বর্তমানে কাপাসিয়ার আনারস বাজারে পরিণত হয়েছে। ভোরের আলো ফোটার আগেই আশেপাশের গ্রামের চাষিরা ভ্যানগাড়ি, অটোরিকশা, সাইকেল এবং মাথায় করেও আনারস নিয়ে ছোটেন এই বাজারে।

প্রতিদিন লোহাদি, বারাব, বীর উজলী, কেন্দুয়াব, বেলাশী, গিয়াসপুর, ডুমদিয়া, বড়দিয়া ও নরসিংহপুর অঞ্চল থেকে বিপুল পরিমাণ আনারস এই বাজারে আসে। স্থানীয় আড়ৎদারদের পাশাপাশি রাজধানীসহ দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাইকাররাও এখানে ভিড় করেন।

বাজারজুড়ে প্রতিদিন বিক্রি হয় প্রায় ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার পিস আনারস। দাম নির্ভর করে আনারসের আকারের ওপর। বড় আনারস প্রতিপিস ৩৫–৪০ টাকা, মাঝারি ১৫–২০ টাকা ও ছোট আকারের আনারস ৭–১০ টাকা করে বিক্রি হয়। ৪০ থেকে ৪৫ জন আড়ৎদার প্রতিদিন এই বাজারে সক্রিয়ভাবে বেচাবিক্রিতে অংশ নেন।

কালীগঞ্জের আড়তদার মো.

তৈয়বুর রহমান বলেন, “এই বছর আনারসের ফলন ভালো হয়েছে। আমরা দুই মাস ধরে প্রতিদিন আনারস বিক্রি করছি। কাপাসিয়ার আনারসের স্বাদ-গন্ধ এতটাই ভালো যে ক্রেতারা খুব সন্তুষ্ট।”

ঢাকা থেকে আসা ক্রেতা হৃদয় বলেন, “জলপাইতলা বাজারে দাম সহনীয়, আনারসের মানও অসাধারণ। প্রতিদিন খুব সকালে চলে আসি এখান থেকে কিনতে।”

তবে চাষিদের মতে, একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে আনারস সংরক্ষণের অভাব। পাকা আনারস বাগানে বেশিদিন রাখা যায় না। বিশেষ করে বর্ষার সময় সংরক্ষণের অভাবে বহু আনারস পচে যায়।

বিক্রেতা ফরিদ মিয়া বলেন, “সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় বাজারে আনার আগেই আনারস নষ্ট হয়ে যায়। কোল্ড স্টোরেজ থাকলে বড় ক্ষতি থেকে বাঁচা যেত।”

স্থানীয়রা বলেন, কাপাসিয়ার আনারস হতে পারে দেশের শীর্ষ কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক সম্পদ। তবে তা বাস্তবায়নে প্রয়োজন কোল্ড স্টোরেজ, আনারস প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র ও চাষিদের ঋণ ও সহায়তা কর্মসূচি দরকার।

কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমন কুমার বসাক বলেন, “চাষিদের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। বর্তমানে ৪৫০ হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হচ্ছে। এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন।”

ঢাকা/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধে কী খাবেন 

খাবারের সঙ্গে দাঁতের সুস্বাস্থ্যের বিষয়টি নিবিড়ভাবে জড়িত। কিছু খাবার দাঁতের জন্য ভালো, আবার কিছু খাবার খারাপ। দাঁত সুস্থ রাখার জন্য শুধু প্রতিদিন ব্রাশ বা ফ্লসিং করাই যথেষ্ট নয়, পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাসও দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

দাঁতের ক্ষয় বা ক্যারিজ প্রতিরোধে, বিশেষ করে কিছু সবজি খুব কার্যকর ভূমিকা রাখে। নিচে এমন কয়েকটি সবজি ও দাঁতের সুস্বাস্থ্যের জন্য এসব খাবারের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হলো।

গাজর

প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি ও ফাইবারসমৃদ্ধ একটি সবজি হলো গাজর। এটি চিবানোর সময় লালারসের নিঃসরণ বাড়ায়, যা মুখের ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এ ছাড়া গাজরে থাকা ভিটামিন এ দাঁতের এনামেল (দাঁতের বাইরের সবচেয়ে শক্ত স্তর) মজবুত করতে সহায়ক।

ব্রকলি

ব্রকলি দাঁতের প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। ব্রকলি দাঁতের ওপর একটি সুরক্ষামূলক স্তর তৈরি করতে পারে, যা এনামেল ক্ষয়ের হাত থেকে দাঁতকে রক্ষা করে। চিবানোর সময় দাঁত পরিষ্কার করতেও সাহায্য করে ব্রকলি।

সেলারিপাতা

সেলারিপাতা দাঁত পরিষ্কার রাখার একটি চমৎকার উপাদান হিসেবে কাজ করে। এটি চিবানোর সময় দাঁত থেকে ‘প্লাক’ দূর করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি লালা উৎপাদন বাড়িয়ে মুখের ‘পিএইচ’ ভারসাম্য বজায় রাখে।

পালংশাক

পালংশাকে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস, যা দাঁতের মজবুত গঠনে সহায়ক। এটি এনামেল রক্ষায় কার্যকর ও দাঁতের ক্ষয় রোধ করে।

কাঁচা শসা

কাঁচা শসা দাঁতের মাড়ি মজবুত করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি দাঁতের ওপর জমে থাকা দাগ ও প্লাক দূর করতে সহায়তা করে। এতে থাকা জল দাঁতের আর্দ্রতা বজায় রাখে।

দাঁতের ক্ষয় রোধে নিয়মিত এসব সবজি খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান ও দাঁতের সঠিক যত্ন নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করুন। দাঁতের সুস্থতা আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যকেও ভালো রাখতে সাহায্য করবে।

ডা. জেবিন জান্নাত, দন্তরোগবিশেষজ্ঞ, ডেন্টাল ইউনিট, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

সম্পর্কিত নিবন্ধ