ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী ইসরায়েলের এই হামলার জবাব দেওয়ার ‘আইনি ও বৈধ’ অধিকার তেহরানের রয়েছে।

আজ শুক্রবার মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ইরানের বিরুদ্ধে জায়নবাদী শাসনের আগ্রাসনের বিপজ্জনক এবং সুদূরপ্রসারী প্রভাব ও পরিণতির জন্য এই শাসন এবং এর সমর্থকেরা দায়ী থাকবে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ইরানের বিরুদ্ধে জায়নবাদী শাসনের আগ্রাসী পদক্ষেপগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয় ও অনুমোদন ছাড়া চালানো সম্ভব নয়। অতএব, এই শাসনের প্রধান সমর্থক হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারও জায়নবাদী শাসনের এই দুঃসাহসিকতার বিপজ্জনক প্রভাব ও পরিণতির জন্য দায়ী থাকবে।’

ইসরায়েলের এই হামলাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখছে না ইরান, বরং এর পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন রয়েছে বলে মনে করছে তেহরান। এটি মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, আজ শুক্রবার ভোরে স্থানীয় সময়ে দেশটির বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করে ইসরায়েল। এই হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর প্রধান, রেভল্যুশনারি গার্ডের কমান্ডার ইন চিফ, পরমাণু বিজ্ঞানীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। 

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অপারেশন রাইসিং লায়ন’ নামে ইরানে হামলা করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের দাবি, ইরানের পারমানবিক কর্মসূচিকে ব্যর্থ করে দিতে এই হামলা করা হয়। 

আজ শুক্রবার ভোরে ইরানে পাঁচ ধাপে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। অজ্ঞাত এক সামরিক কমকর্তা টাইমস অব ইসরায়েলকে জানিয়েছেন, ইরানে শত শত হামলা চালানো হয়েছে এবং অন্তত আটটি স্থানে (শহরে) লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে পাওয়া বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ইরানের ছয়টি স্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে।

আর ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, গত কয়েক ঘণ্টায় অন্তত দুটি ধাপে হামলা চালানো হয়। তবে নিশ্চিত না হলেও এখন তৃতীয় দফার হামলা চলমান থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যেসব স্থানে হামলার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে- রাজধানী তেহরান ও এর আশপাশের সামরিক স্থাপনা; তেহরানের দক্ষিণে নাতানজ শহর, যেখানে ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র অবস্থিত; তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে তাবরিজ শহর, যেখানে একটি পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র ও দুটি সামরিক ঘাঁটির কাছে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে; তেহরানের দক্ষিণে ইস্পাহান শহর; তেহরানের দক্ষিণ-পশ্চিমে আরাক শহর ও পশ্চিমে কেরমানশাহ শহর।

ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, তেহরানজুড়ে ৬ থেকে ৯টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। হামলা হয়েছে আবাসিক ভবনেও।

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাসহ দেশটির বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলের প্রাণঘাতী এসব হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে তেহরান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি

‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে ‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।

এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’

‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন

‎জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।

‎তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

‎কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।

‎পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”

‎গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”

‎অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, ‎যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ