ছক্কার বৃষ্টিতে অ্যালেন ইতিহাস, গড়লেন দুই অনন্য বিশ্বরেকর্ড
Published: 13th, June 2025 GMT
বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট এখন কেবল বিনোদনের উৎস নয়, রেকর্ড গড়ার মঞ্চও বটে। আর এই মঞ্চে এবার ঝড় তুললেন নিউজিল্যান্ডের তরুণ ব্যাটার ফিন অ্যালেন। যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হওয়া মেজর লিগ ক্রিকেটের (এমএলসি) তৃতীয় আসরের উদ্বোধনী ম্যাচেই গড়লেন দুইটি বিশ্বরেকর্ড। তার একটি এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কা ও আরেকটি সবচেয়ে কম বলে দেড়’শ রান পূর্ণ করার কীর্তি।
ওকল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এই হাইভোল্টেজ ম্যাচে অ্যালেনের ব্যাট যেন পরিণত হয়েছিল ধ্বংসের তরবারিতে। ৫১ বলে অপরাজিত ১৫১ রান করে তিনি কেবল ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেননি, বদলে দিয়েছেন টি-টোয়েন্টির ইতিহাসের পাতাও।
অ্যালেনের এই ইনিংস ছিল ছক্কায় ভরপুর। ১৯টি ছক্কা হাঁকিয়ে ভেঙে দেন ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ক্রিস গেইল ও এস্তোনিয়ার সাহিল চৌহানের যৌথভাবে গড়া আগের রেকর্ড (১৮টি)। এই রেকর্ডটি দীর্ঘ ৭ বছর টিকে ছিল গেইলের নামে।
আরো পড়ুন:
সেঞ্চুরি ছাড়াই চারশো! ব্যাটে-বলে এক অন্যরকম দিন ইংল্যান্ডের
আইপিএলে ইতিহাস গড়া ছয় বলে ছয় ছক্কা
তবে শুধু ছক্কার রেকর্ডেই থেমে থাকেননি অ্যালেন। ২০ বলে ফিফটি, এরপর আরও মাত্র ১৪ বলে পৌঁছে যান শতকে। সব মিলিয়ে ৩৪ বলে সেঞ্চুরি করেন, যা এমএলসির ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম এবং বিশ্বের তৃতীয় দ্রুততম।
তবে সবচেয়ে বিস্ময়কর রেকর্ডটি হলো— ৪৯ বলে দেড়শ রান পূর্ণ করেন তিনি। যা টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সবচেয়ে কম বলে দেড়শ ছোঁয়ার নজির। এর আগে এই রেকর্ড ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ‘বেবি এবি’ খ্যাত ডেওয়াল্ড ব্রেভিসের দখলে, যিনি ৫২ বলে ১৫০ রান করেছিলেন।
এই ভয়ঙ্কর ইনিংসে অ্যালেন মাত্র ৫টি চার মারলেও বাকি ১৩৪ রানই করেন বাউন্ডারি থেকে, যা নিজেও একটি অনন্য কীর্তি।
ফিন অ্যালেনের এই ঝড়ো ইনিংসে ভর করে সান ফ্রান্সিসকো ইউনিকর্নস ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে এমএলসি’র ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ২৬৯ রান। দলের হয়ে সঞ্জয় কৃষ্ণমূর্তি ৩৬ ও হাসান খান ৩৮ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ওয়াশিংটন ফ্রিডম ছিল যেন দিশেহারা। মাত্র ১৪৬ রানেই অলআউট হয়ে তারা হেরে যায় বিশাল ১২৩ রানে। সান ফ্রান্সিসকোর পক্ষে হারিস রউফ ও হাসান খান ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। অন্যপ্রান্তে রাচিন রবীন্দ্র (৪২) ও মিচেল ওয়েন (৩৯) চেষ্টা করলেও হার এড়াতে পারেননি।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ক ট র কর ড র কর ড সবচ য়
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?