ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টি, গভীর রাতে প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে নিয়ে বাংকারে নেতানিয়াহু
Published: 14th, June 2025 GMT
ইসরায়েলের হামলার জবাবে নতুন করে ইরানের চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর জেরুজালেম ও তেল আবিবে বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এতে একজন নিহত এবং প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। পাশাপাশি অন্তত নয়টি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
এদিকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টির মধ্যে গভীর রাতে পালিয়ে বাংকারে অবস্থান নেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এ সময় তার সঙ্গে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ ছিলেন। ইসরায়েলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বরাতে এ খবর দিয়েছে সিএনএন।
ওই কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, ইরানের প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরুর পরপর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু একটি বাংকারে ঢুকে যান। তখন তার সঙ্গী হন প্রতিরক্ষামন্ত্রীও। তারা সেখানে বসে সামগ্রিক পরিস্থিতির জরুরি মূল্যায়ন করেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি মন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জরুরি আলোচনায় অংশ নেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
অন্যদিকে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে একটি অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে খবর ইরনা নিউজের। ইসরাইলি গণমাধ্যমের বরাতে এ তথ্য প্রকাশ করেছে ইরনা। ইরনা বলেছে, ধারণা করা হচ্ছে- তাকে গ্রিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ইরনা আরও জানায়, ইসরাইলের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম নেতানিয়াহুর বিমানের একটি ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যায়, দুটি যুদ্ধবিমান তার বিমানের সঙ্গে ছায়াসঙ্গীর মতো রয়েছে এবং সেটি ইসরাইল অধিকৃত অঞ্চল ছেড়ে অজ্ঞাত গন্তব্যে যাচ্ছে।
ইরনার তথ্যমতে, চ্যানেল ১২ জানিয়েছে- সেই বিমানটি গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে অবতরণ করেছে।
এদিকে ইরানের রাজধানী তেহরানের পশ্চিমে মেহরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নতুন করে বোমা হামলা হয়েছে। ইরানের বিপ্লবী গার্ড কর্পস পরিচালিত ফার্স নিউজ এজেন্সি নিশ্চিত করেছে যে বিমানবন্দর এলাকায় কমপক্ষে দুটি বোমা হামলা হয়েছে।
ইরানি মিডিয়াও জানিয়েছে যে বিমানবন্দরের পশ্চিমে ভার্দাভার্ড এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। বিমানবন্দরটিতে এখন আগুন জ্বলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বিমানবন্দরটির অভ্যন্তরে আগুন জ্বলতে ও ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে।
আল–জাজিরা জানিয়েছে, ইরানের তাসনিম নিউজ এজেন্সি এই ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে।
স্থানীয় মেহের নিউজ এজেন্সির বরাতে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বিমানবন্দর এলাকায় একটি ‘বিস্ফোরণ’ হয়েছে। এরপর বিমানবন্দরটি থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার ভোররাতে ইরানে হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। নৃশংস এই হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, বিজ্ঞানীসহ অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছে। দখলদার বাহিনীর হামলায় আহত হয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ। এই হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল কর মকর ত ইসর য় ল মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।