ক্রিকেটের তীর্থভূমি লর্ডসে জমে উঠেছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৮২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় তৃতীয় দিন শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ২১৩ রান তুলে জয়ের একেবারে দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। হাতে আছে আরও ৮ উইকেট, আজ চতুর্থ দিনে প্রয়োজন মাত্র ৬৯ রান।

প্রোটিয়াদের এই জয়ের সম্ভাবনার মূল স্থপতি ওপেনার এইডেন মার্করাম, যিনি অনবদ্য এক সেঞ্চুরি করে অপরাজিত আছেন। দৃঢ়তা, সংযম আর শৈল্পিক স্ট্রোকপ্লের মিশেলে গড়া এই ইনিংস প্রোটিয়াদের ব্যাটিং মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করছে। অন্যদিকে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার ব্যাট থেকে এসেছে নৈপুণ্যে ভরপুর একটি ফিফটি। যার প্রতিটি বলেই ছিল দায়িত্বশীলতা ও চাপ মোকাবেলার দৃষ্টান্ত।

অস্ট্রেলিয়ার জন্য চতুর্থ দিন হতে যাচ্ছে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। ৬৯ রান প্রতিরোধ করতে হলে প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, নাথান লায়ন ও জশ হ্যাজলউডদের বের করে আনতে হবে অসাধারণ কিছু। তবে তৃতীয় দিনের শেষ ভাগে লর্ডসের পিচে খানিকটা অসম বাউন্স দেখা গেলেও এখনও ব্যাটিংয়ের জন্য তেমন ভয়ঙ্কর কিছু হয়নি। ফলে অস্ট্রেলিয়ার ভরসা এখন কেবল দ্রুত উইকেট তুলে নেওয়া কিংবা প্রতিপক্ষকে মানসিকভাবে ভেঙে ফেলা।

আরো পড়ুন:

২৮২ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে দ.

আফ্রিকা

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে একদিনেই ১৪ উইকেটের পতন

এই ম্যাচ জিততে পারলে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমবারের মতো বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয় করবে। টেস্ট ইতিহাসে শক্তিশালী দল হিসেবেই পরিচিত তারা। কিন্তু আইসিসির বড় মঞ্চে বারবার ধাক্কা খেয়েছে। এবার যদি তারা জয় তুলে নিতে পারে তবে সেটি হবে বহু বছরের অপেক্ষার গৌরবময় অবসান। এই জয় শুধু একটি শিরোপা জয়ের গল্প হবে না, বরং এটি হবে প্রতিকূলতা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো একটি দলের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ।

চতুর্থ দিন সকালেই নির্ধারিত হয়ে যাবে ম্যাচের ভাগ্য। মার্করাম কি শতরানকে রূপ দেবেন অপরাজিত ইনিংসে? বাভুমা কি শেষ পর্যন্ত দলকে নেতৃত্ব দিয়ে নিয়ে যাবেন জয়ের বন্দরে? নাকি অস্ট্রেলিয়া করবে এক অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন?

তবে, এই টেস্ট আবারও প্রমাণ করে দিয়েছে লাল বলের ক্রিকেটে নাটকীয়তা, মানসিক দৃঢ়তা আর কৌশলের যে সৌন্দর্য, তা অতুলনীয়।

তৃতীয় দিনের খেলার শেষ অবস্থা:
লক্ষ্য: ২৮২ রান
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২১৩/২
অপরাজিত: মার্করাম ১০৪ ও বাভুমা ৫৭।
অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের সেরা: স্টার্ক ১/৫৪, লায়ন ১/৪৮।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন: ৬৯ রান
অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন: ৮ উইকেট।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট স ট চ য ম প য়নশ প উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ