কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী থানা হেফাজতে ফিরোজা বেগম (৫০) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। আজ শনিবার সকালে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ফিরোজার মেয়ে সোমা বেগম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।

ফিরোজা কটিয়াদী পৌরসভার দড়িচড়িয়াকোনা মহল্লার বাসিন্দা। তাঁর স্বামী স্বপন মিয়া (৫৫)। এলাকাবাসী ও পুলিশের ভাষ্য, স্বপন ও ফিরোজা দম্পতি স্থানীয়ভাবে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত।

পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে যৌথ বাহিনী এই দম্পতির বাড়িতে মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। স্বপন পালিয়ে গেলেও ফিরোজাকে আটক করা হয়। এ সময় ঘর থেকে ১১টি ইয়াবা, ২২ পুরিয়া গাঁজা ও ৩২ হাজার ৬৬৪ টাকা উদ্ধার করা হয়। দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ফিরোজাকে থানায় নেওয়া হয়।

পুলিশ বলছে, ফিরোজাকে থানা ভবনের নারী ও শিশু সেলে রাখা হয়। সকালে ঘুম থেকে না ওঠায় তাঁকে ডাকাডাকি করা হয়। সাড়া না পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরে হাসপাতালেই সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাবনী আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হোসেনপুর সার্কেল) মো.

তোফাজ্জল হোসেন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. ঈশা খানের উপস্থিতিতে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ঈশা খান জানান, তাঁরা ফিরোজাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছেন।

এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে পরিবার থেকে কেউ অভিযোগ করেনি। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দাফন করা হয়েছে।

আজ সকালে প্রথম আলোর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তোফাজ্জল হোসেনের। তিনি বলেন, স্বপন-ফিরোজা দম্পতি এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। স্বপনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা আছে, একটি মাদকের। তবে ফিরোজার বিরুদ্ধে কোনো মামলা পাওয়া যায়নি। গভীর রাতে ফিরোজাকে থানায় আনা হলে তিনি স্বাভাবিক ছিলেন। কিছুক্ষণ পর ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল ৯টা পর্যন্ত ঘুম ভাঙছিল না। ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, রাতে ঘুমের মধ্যে তাঁর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। হাসপাতাল থেকেও লিখিতভাবে তা জানানো হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে মারধরের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যরাও মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলে লিখিত দিয়েছেন।

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করে বলা যাবে না বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

ফিরোজার মেয়ে সোমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ধরে আনার সময় মাকে কেউ মারেনি। থানায় এনে নির্যাতন করেছে কি না, সেটি তিনি জানেন না। তাই মায়ের মৃত্যু স্বাভাবিক বলেই মনে হচ্ছে তাঁর।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র স বপন

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ