কটিয়াদী থানা হেফাজতে এক নারীর মৃত্যু, পরিবার বলছে ‘স্বাভাবিক’
Published: 14th, June 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী থানা হেফাজতে ফিরোজা বেগম (৫০) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। আজ শনিবার সকালে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ফিরোজার মেয়ে সোমা বেগম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।
ফিরোজা কটিয়াদী পৌরসভার দড়িচড়িয়াকোনা মহল্লার বাসিন্দা। তাঁর স্বামী স্বপন মিয়া (৫৫)। এলাকাবাসী ও পুলিশের ভাষ্য, স্বপন ও ফিরোজা দম্পতি স্থানীয়ভাবে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত।
পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে যৌথ বাহিনী এই দম্পতির বাড়িতে মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। স্বপন পালিয়ে গেলেও ফিরোজাকে আটক করা হয়। এ সময় ঘর থেকে ১১টি ইয়াবা, ২২ পুরিয়া গাঁজা ও ৩২ হাজার ৬৬৪ টাকা উদ্ধার করা হয়। দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ফিরোজাকে থানায় নেওয়া হয়।
পুলিশ বলছে, ফিরোজাকে থানা ভবনের নারী ও শিশু সেলে রাখা হয়। সকালে ঘুম থেকে না ওঠায় তাঁকে ডাকাডাকি করা হয়। সাড়া না পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে হাসপাতালেই সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাবনী আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হোসেনপুর সার্কেল) মো.
এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে পরিবার থেকে কেউ অভিযোগ করেনি। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
আজ সকালে প্রথম আলোর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তোফাজ্জল হোসেনের। তিনি বলেন, স্বপন-ফিরোজা দম্পতি এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। স্বপনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা আছে, একটি মাদকের। তবে ফিরোজার বিরুদ্ধে কোনো মামলা পাওয়া যায়নি। গভীর রাতে ফিরোজাকে থানায় আনা হলে তিনি স্বাভাবিক ছিলেন। কিছুক্ষণ পর ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল ৯টা পর্যন্ত ঘুম ভাঙছিল না। ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, রাতে ঘুমের মধ্যে তাঁর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। হাসপাতাল থেকেও লিখিতভাবে তা জানানো হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে মারধরের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যরাও মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলে লিখিত দিয়েছেন।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করে বলা যাবে না বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
ফিরোজার মেয়ে সোমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ধরে আনার সময় মাকে কেউ মারেনি। থানায় এনে নির্যাতন করেছে কি না, সেটি তিনি জানেন না। তাই মায়ের মৃত্যু স্বাভাবিক বলেই মনে হচ্ছে তাঁর।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হামফ্রে ফেলোশিপ–ডাড স্কলারশিপ–আইডিবির প্রশিক্ষণ, আবেদন শেষ ৩১ জুলাই
আমেরিকা হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ, জার্মান সরকারের ডাড হেলমুট-শ্মিট মাস্টার্স স্কলারশিপ এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-বাংলাদেশ ইসলামিক সলিডারিটি এডুকেশন ওয়াক্ফ আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ে আবেদন চলছে। তিনটির আবেদনের সুযোগ আছে আর দুদিন। আগামীকাল ৩১ জুলাই শেষ হবে হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ, ডাড হেলমুট-শ্মিট মাস্টার্স স্কলারশিপ এবং আইডিবি-বিআইএসইডব্লিউ ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের। আবেদনের পদ্ধতিসহ জেনে নিন এসব বৃত্তি ও ফেলোশিপের বিস্তারিত তথ্য।
১. হামফ্রে ফেলোশিপ: মাসিক ভাতাসহ ১০ মাস আমেরিকায় পড়াশোনার সুযোগ
১০ মাসের হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপে বেসরকারি সংস্থাসহ সরকারি ও বেসরকারি খাতে পেশাজীবীরা আবেদন করতে পারবেন।
ফেলোশিপের সুযোগ-সুবিধা—নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ টিউশন ফি দেওয়া হবে;
প্রয়োজন হলে প্রাক্-একাডেমিক ইংরেজি ভাষা প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে;
জীবনযাত্রার ব্যয় ভাতা;
এককালীন সেটলিং ভাতা;
দুর্ঘটনা ও অসুস্থতাজনিত ব্যয় ভাতা;
বই কেনার খরচ;
কম্পিউটার কেনার জন্য এককালীন ভাতা;
বিমান ভ্রমণ ভাতা (প্রোগ্রামের জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ এবং প্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম ইভেন্টে অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ;
ফেলোশিপের জন্য প্রয়োজনীয় পেশাদার উন্নয়ন ভাতা যেমন ফিল্ড ট্রিপ, পেশাদার পরিদর্শন ও সম্মেলন।
আরও পড়ুনএসএসসি উত্তীর্ণদের শিক্ষাবৃত্তি দিচ্ছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, মাসে আড়াই হাজার টাকা, মিলবে ২ বছর১৩ জুলাই ২০২৫আবেদনকারীর যোগ্যতা—আবেদনকারীকে অবশ্যই তরুণ ও মধ্য পর্যায়ের নেতৃত্বশীল পদে থাকা পেশাজীবী হতে হবে, যার জনসেবায় দৃষ্টান্তমূলক কাজ ও পেশাগত জীবনে অগ্রগতির সম্ভাবনা রয়েছে
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন, এমন কেউ আবেদন করতে পারবেন না
পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমপক্ষে চার বছরের শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করার সনদ থাকতে হবে
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জনের পর সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ন্যূনতম পাঁচ বছর পূর্ণকালীন কাজ করার পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে (২০২৫ সালের আগস্টের আগে) এবং তাঁদের শিক্ষা ও কাজসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের নীতিগত দিকগুলোয় আগ্রহ থাকতে হবে
শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা একাডেমিক গবেষক এই ফেলোশিপের জন্য বিবেচিত হবেন না। তাঁদের অবশ্যই ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে (ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচিত হবেন যদি কেউ বিদেশি ভাষা হিসেবে ইংরেজি শেখানোর দায়িত্ব পালন করেন)।
২০২৬ সালের আগস্টের আগে সাত বছরের মধ্যে আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্নাতক স্কুলে এক শিক্ষাবর্ষ বা তার বেশি সময়ের জন্য লেখাপড়ায় অংশ নিয়ে থাকলে তিনি এই ফেলোশিপের জন্য অযোগ্য হবেন।
২০২৬ সালের আগস্টের আগে পাঁচ বছরের মধ্যে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করার অভিজ্ঞতা থাকলে তিনি এই ফেলোশিপের জন্য যোগ্য হবেন না।
ইংরেজি লেখা ও কথা বলা উভয় ক্ষেত্রে দক্ষ হতে হবে এবং টোয়েফল স্কোর (ইন্টারনেটভিত্তিক) হতে হবে। প্রার্থীদের যাঁদের টোয়েফল স্কোরের বৈধ মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাঁদের নির্বাচনপ্রক্রিয়া শেষে টোয়েফল পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। (আমেরিকান সেন্টার কেবল নির্বাচিত প্রার্থীদের জন্য টোয়েফল পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে।)
আবেদনকারীকে অবশ্যই ফেলোশিপের জন্য নির্ধারিত প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও প্রতিশ্রুতি দেখানোর পাশাপাশি এ কথাও জানাতে হবে যে তিনি কীভাবে এই ফেলোশিপ থেকে উপকৃত হবেন, যা তিনি আগে কখনো হননি এবং হামফ্রে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাড়া এমন অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ তাঁর নেই।
ফেলোশিপ শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরে আসতে হবে।
ফাইল ছবি প্রথম আলো