ট্রাম্পের সঙ্গে যেভাবে ইরানে হামলার গোপন পরিকল্পনা করেছিল ইসরায়েল
Published: 14th, June 2025 GMT
ইরানে আকস্মিক হামলার পর একে একে ফাঁস হচ্ছে এর পেছনে থাকা ইসরায়েলের গোপন পরিকল্পনার তথ্য। কীভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের হয়ে এই খেলায় খেলেছেন তাও ফাঁস হয়েছে। ট্রাম্প স্বীকারও করেছেন তিনি ইসরায়েলের হামলার বিষয়টি আগে থেকেই জানতেন। হামলা সফল হওয়ায় তিনি খুশি।
শুক্রবার খোদ ইসরায়েলই স্বীকার করেছিল ইরানে হামলার জন্য তারা বছরের পর বছর ধরে পরিকল্পনা করেছিল। গত দুদিন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ইসরায়েলের জন্য অনেক সহজ হয়ে গিয়েছিল। ইসরায়েলের দাবার ঘুঁটি হিসেবে কাজ করেছেন ট্রাম্প। গত এপ্রিল ইরানের সঙ্গে পরমাণু আলোচনার ঘোষণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বেশ ভালোভাবেই জানতেন তিনি যেসব শর্ত দিবেন সেগুলো ইরান মানবে না। এরপরেও সেই আলোচনা ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ফাঁকে ইসরায়েল তার হামলার প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে নিয়ে আসে। এর পাশাপাশি ইসরায়েল এমন ভান করেছিল, যেন তাদের পুরো মনোযোগ ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর রয়েছে। ট্রাম্পের নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তারা ইরানে হামলা চালাতেই পারে না!
৯ জুন সোমবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফোনে কথা বলেন। ওই সময় তারা দুজন ইরানে হামলার বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা করেন, ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে হামলার অনুমতি দিয়ে দেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, তাদের ফোনালাপ শেষ হওয়ার পরে ইসরায়েলি ও মার্কিন কর্মকর্তারা সংবাদমাধ্যমকে জানান, ইরান ইস্যুতে নেতানিয়াহুর ওপর চটেছেন ট্রাম্প। ইরানে কোনো ধরনের হামলা চালাতে নেতানিয়াহুকে নিষেধ করেছেন তিনি। এ ধরনের মিথ্যা খবর ছড়িয়ে দেওয়ার পরপর নেতানিয়াহু তার সামরিক বাহিনীকে ইরানে হামলার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে বলেন এবং বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা হামলার অনুমোদন দেয়।
ইরান অবশ্য ট্রাম্পের কথায় বিশ্বাস করে বসেছিল। সংবাদমাধ্যমে ছড়ানো মিথ্যা খবর দেখে ইরানিদের মধ্যে বেশ গাছাড়া ভাব চলে এসেছিল। ঠিক এই জিনিসটাই চেয়েছিল ইসরায়েল।
ইরানের সামরিক বাহিনীর প্রধান, বিপ্লবী বাহিনীর প্রধানসহ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা কোথায় থাকেন ইসরায়েল তার গোয়েন্দাদের বদৌলতে আগে থেকেই সেসব স্থান চিহ্নিত করে রেখেছিল। এছাড়া ওই দিন ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা ভূগর্ভস্থ কোন বাঙ্কারে অবস্থান করবেন সেটাও জানতো ইসরায়েল। তাই শুক্রবার রাতে প্রথম হামলাতেই ইরানের সামরিক নেতৃত্বকে খতম করে দেয় ইসরায়েল। এর ফলে ইসরায়েলি বাহিনী যখন ইরানের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল তখন পাল্টা হামলার নির্দেশ দেওয়ার মতো ইরানের কোনো শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাই জীবিত ছিল না। আগে থেকেই গোপনে পাঠিয়ে দেওয়া ড্রোন, অস্ত্র ও কমান্ডোদের মাধ্যমে ইরানের সম্পূর্ণ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয় ইসরায়েল। এর ফলে নির্বিবাদে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো ইরানের ভেতরে হামলা চালিয়ে সব তছনছ করে দেয়।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল র কর মকর ত কর ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার শপথ ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা যোদ্ধাদের
বিজয়ের মাস ঢাকায় এক হলেন একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর যোদ্ধারা; তাঁরা শপথ নিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার।
আজ শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেরিলা যোদ্ধাদের এই মিলনমেলায় এই বাহিনীর জীবিত সদস্যদের পাশাপাশি শহীদ পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। দিনভর এই আয়োজন করে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন বিশেষ গেরিলা বাহিনী সমন্বয় কমিটি।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে আলাদা গেরিলা বাহিনী গঠন করে অংশ নিয়েছিলেন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের সদস্যরা। কয়েক হাজার গেরিলা যোদ্ধার এই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদ। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বেতিয়ারার যুদ্ধে এই বাহিনীর সদস্যদের আত্মদান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আলোচিত ঘটনা।
স্বাধীনতার পর এই গেরিলা বাহিনীর সদস্যরা মোহাম্মদ ফরহাদের নেতৃত্বে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন। দেড় যুগ আগে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা করেছিল, তাতে এই বাহিনীর সদস্যদের রাখা হয়নি। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনীর সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
শহীদ মিনারে মিলনমেলার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি এই গেরিলা বাহিনীর সদস্য ছিলেন, স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে ভিপি হয়েছিলেন তিনি।
ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ শনিবার একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর মিলনমেলায় সিপিবির সাবেক সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম