মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, আটক ২
Published: 14th, June 2025 GMT
বগুড়ায় মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ায় বাবাকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জিতু ইসলামের বিরুদ্ধে। শনিবার বিকেলে বগুড়া শহরের ফুলবাড়ী এলাকায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ জিতু ইসলামসহ দুইজনকে আটক করেছে।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মুঞ্জু এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের নাম শাকিল আহমেদ (৩২)। তিনি শিববাটি শাহি মসজিদ এলাকার হানিফ প্রামাণিকের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাকিল শিববাটি এলাকায় বাস করেন। তার এক কিশোরী কন্যাকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জিতু ইসলাম বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু জিতুর সঙ্গে শাকিল তার মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি ছিলেন না। আজ দুপুরের দিকে ১০-১৫ জন যুবক শাকিলকে বাড়ি থেকে ফুলবাড়ী এলাকায় করতোয়া নদীর ঘাটে নিয়ে যায়। সেখানে শাকিলকে বেদম মারধর করা হয়। পরে তাকে নদীর ঘাটে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা। স্থানীয় লোকজন শাকিলকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দিলে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তিনি মারা যান।
নিহত শাকিলের বড় বোন আশা বলেন, আমার ভাতিজি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। তাকে বিয়ের জন্য জিতু কিছুদিন পর পর আমার বড় ভাইয়ের কাছে প্রস্তাব দিত। আমার ভাই ১৪ বছরের মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় জিতু বাহিনীর লোকজন তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
শাকিলের খালাতো বোন জেসি বলেন, আমার খালাতো ভাই শাকিলের সাথে জিতু বাহিনীর দুপুরে এক দফা হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে শাকিল বাড়িতে এসে বলে আমাকে তোরা বাঁচা। জিতুরা আমাকে মেরে ফেলবে। এর কিছুক্ষণ পরেই ১৫/২০টি মোটর সাইকেলযোগে লোকজন এসে শাকিলকে তুলে নিয়ে যায়। আমরা প্রায় ৩ ঘণ্টা খোঁজের এক পর্যায়ে জানতে পারি শাকিলের মরদেহ শহীদ জিয়াউর রহমান মেজিকেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মুঞ্জু বলেন, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় শাকিল হোসেনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জিতু ইসলামসহ দুইজনকে আমরা আটক করেছি। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কেউ জড়িত আছে কিনা খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বান্দরবানে যুবককে পাথর দিয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার ২
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় উথোয়াইশৈ মারমা (১৮) নামে এক যুবককে পাথর দিয়ে হত্যার পর নদীতে লাশ ফেলে দেওয়ার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (২৭ জুলাই) রাত ৮টার দিকে বান্দরবান জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নিহত উথোয়াইশৈ মারমা রোয়াংছড়ি উপজেলার ৪ নম্বর নোয়াপতং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের খক্ষ্যং পাড়ার বাসিন্দা শৈচনু মারমার ছেলে।
আরো পড়ুন:
নির্দোষ মানুষকে আসামি করায় তদন্তে সময় লাগছে : উপদেষ্টা
দয়াগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে একজনকে কুপিয়ে হত্যা
গ্রেপ্তার দুইজন হলেন, ৩ নম্বর আলেক্ষ্যং ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড শীলবান্ধা পাড়ার সাবেক ইউপি সদস্য সিংনুমং মারমার ছেলে উনুসিং মারমা (২৬) এবং একই পাড়ার লোওয়াইসামং মারমার ছেলে হ্লাথোয়াইহ্রী মারমা (২৮)।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৫ জুলাই নিহত উথোয়াইশৈ এবং গ্রেপ্তার উনুসিং মারমা ও হ্লাথোয়াইহ্রী মারমা মিলে শিলবান্ধা পাড়া এলাকার তারাছা খালের তীরের টং ঘরে আড্ডা দিতে যায়। সেখানে তারা মদ পান করেন। মদ্যপ্য অবস্থায় নিহত উথোয়াইশৈ সঙ্গে অন্য দুইজনের কথা কাটাকাটি এবং ধস্তা-ধস্তি হয়। এক পর্যায়ে উনুসিং মারমা ও হ্লাথোয়াইহ্রী মারমা বাঁশ দিয়ে উথোয়াইশৈ মসরমাকে মারধর করে থাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে দেন।
এরপর তারা দুইজন পুনরায় নদীতে নেমে পানি থেকে টেনে নদীর মাঝখানে থাকা পাথর খণ্ডের উপর তুলে বুকের উপর চেপে ধরে এবং অপরজন একটা পাথর নিয়ে নিহতের মাথায় ও মুখে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ নদীর স্রোতের মধ্যে ভাসিয়ে দেন।
উথোয়াইশৈ মারমা নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে অবগত হওয়ার পর বান্দরবান পার্বত্য জেলার পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল ও রোয়াংছড়ি থানার একটি আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। আসামিদের প্রাথমিক স্বীকারোক্তি এবং দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত ও নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকা/মং/মেহেদী