মেটা এআই অ্যাপের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের সুবিধা কী গোপনীয়তা উদ্বেগ তৈরি করছে?
Published: 15th, June 2025 GMT
মেটার নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অ্যাপ মেটা এআইয়ে ব্যবহৃত ব্যক্তিগত কথোপকথন, অডিও ক্লিপ ও ছবি অনেক সময় ব্যবহারকারীদের অজান্তেই প্রকাশিত হচ্ছে। অ্যাপের ‘শেয়ার’–সুবিধা ঘিরে তৈরি হওয়া এই বিভ্রান্তি নিয়ে ব্যবহারকারীদের মধ্যে গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
অ্যাপটিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক চ্যাটবটকে প্রশ্ন করার পর ব্যবহারকারীদের সামনে একটি ‘শেয়ার’ বাটন দেখা যায়। সেই বাটন চাপলে কথোপকথনের একটি প্রিভিউ পর্দায় ভেসে ওঠে। যেখান থেকে তা অনলাইনে প্রকাশ করা যায়। অনেকেই এসব তথ্য শেয়ারও করছেন। তবে অনেক ব্যবহারকারী বুঝতেই পারেন না, তাঁরা যে তথ্য বা বার্তা শেয়ার করছেন, তা সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে পড়ছে। ফলে অ্যাপে প্রতিনিয়ত এমন অনেক তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে, যা সাধারণত ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকার কথা। সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষক র্যাচেল টোব্যাক এমনও তথ্য শনাক্ত করেছেন, যেখানে ব্যবহারকারীর বাসার ঠিকানা ও আদালতের স্পর্শকাতর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। শুধু লিখিত বার্তাই নয়, অ্যাপে শেয়ার হওয়া অডিও ক্লিপেও উঠে এসেছে বিব্রতকর প্রশ্ন।
গোপনীয়তার এ ধরনের ঘাটতির কারণে ব্যবহারকারীরা বুঝে উঠতে পারছেন না, কোন তথ্য কীভাবে শেয়ার হচ্ছে এবং তাঁদের প্রোফাইল যদি ইনস্টাগ্রামে পাবলিক থাকে, তাহলে সেই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লগইন করলে কথোপকথনগুলোও সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে প্রযুক্তি গণমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ মেটার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বিভ্রান্তির জন্য মূলত মেটার ফিচার ডিজাইন দায়ী। ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত কথোপকথন ‘স্যোশাল শেয়ার’ হিসেবে প্রকাশ করার মতো সুবিধা সংযুক্ত করার চিন্তা প্রযুক্তিগতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। বিশ্লেষকদের মতে, অ্যাপের বর্তমান কাঠামোতে গোপনীয়তা রক্ষার ন্যূনতম নিশ্চয়তা না থাকায় এটি ব্যবহারকারীদের জন্য একটি ডিজিটাল ঝুঁকিতে পরিণত হচ্ছে। মেটা যদি ব্যবহারকারীদের আস্থা অর্জন করতে চায়, তবে অ্যাপের ডিজাইন ও গোপনীয়তা নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা ছাড়া উপায় নেই।
অ্যাপ বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান অ্যাপফিগারসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ২৯ এপ্রিল বাজারে আসার পর এখন পর্যন্ত মেটা এআই অ্যাপটি ৬৫ লাখবার নামানো হয়েছে।
সূত্র: টেকক্রাঞ্চ
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পবিরোধী স্লোগান দিয়ে উড়োজাহাজে গ্রেপ্তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পতন চেয়ে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাজ্যে ৪১ বছর বয়সী এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত রোববার লন্ডনের লুটন বিমানবন্দর থেকে গ্লাসগোগামী একটি ফ্লাইটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি লন্ডনের কাছে বেডফোর্ডশায়ারের লুটন শহরের বাসিন্দা।
অভয় নায়েক ইজিজেট ফ্লাইটে হামলা ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার মতো আচরণ করেছেন। তিনি উড়োজাহাজে বোমা ফাটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি মাঝ আকাশে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্লোগান দিয়ে চিৎকার করেছিলেন, যা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
ওই ঘটনার একটি ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, অভয় নায়েক স্লোগান দিচ্ছেন, ‘আমেরিকার পতন হোক’, ‘ট্রাম্পের পতন হোক’। এরপরই তিনি ‘আল্লাহু আকবর’ (যার অর্থ ‘আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ’) বলে স্লোগান দেন। পরে দুজন ব্যক্তি তাঁকে কাবু করে উড়োজাহাজের মেঝেতে ফেলে দেন।
ওই ব্যক্তির নাম অভয় নায়েক। তিনি কোন ধর্মের অনুসারী, সে ব্যাপারে তাৎক্ষিণক কিছু জানা যায়নি।
ওই ব্যক্তির এমন আচরণের পর পাইলটরা বাধ্য হয়ে গ্লাসগোতে জরুরি অবতরণ করেন। সেখানেই স্কটিশ পুলিশ এসে অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করে।
স্কটল্যান্ডের পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘গত রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে গ্লাসগোতে পৌঁছানো ইজিজেটের একটি ফ্লাইটে এক ব্যক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন এমন খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, ঘটনাটি এককভাবে ওই ব্যক্তির, অন্য কেউ জড়িত নন। যেসব ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়েছে, সেগুলো সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন।’
উড়োজাহাজ অবতরণের পরই অভয় নায়েককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ ও যাত্রীদের নিরাপত্তাঝুঁকিতে ফেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।
ইজিজেট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বেপরোয়া আচরণের কারণে একজন যাত্রীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে তদন্তে সহযোগিতা করছি।’
পাইসলি শেরিফ আদালতে হাজিরার সময় অভয় নায়েক কোনো বক্তব্য দেননি। তাঁকে বিচারিক হেফাজতে পাঠানো হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহে তাঁকে আবার আদালতে হাজির করা হবে।