মেটার নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অ্যাপ মেটা এআইয়ে ব্যবহৃত ব্যক্তিগত কথোপকথন, অডিও ক্লিপ ও ছবি অনেক সময় ব্যবহারকারীদের অজান্তেই প্রকাশিত হচ্ছে। অ্যাপের ‘শেয়ার’–সুবিধা ঘিরে তৈরি হওয়া এই বিভ্রান্তি নিয়ে ব্যবহারকারীদের মধ্যে গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

অ্যাপটিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক চ্যাটবটকে প্রশ্ন করার পর ব্যবহারকারীদের সামনে একটি ‘শেয়ার’ বাটন দেখা যায়। সেই বাটন চাপলে কথোপকথনের একটি প্রিভিউ পর্দায় ভেসে ওঠে। যেখান থেকে তা অনলাইনে প্রকাশ করা যায়। অনেকেই এসব তথ্য শেয়ারও করছেন। তবে অনেক ব্যবহারকারী বুঝতেই পারেন না, তাঁরা যে তথ্য বা বার্তা শেয়ার করছেন, তা সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে পড়ছে। ফলে অ্যাপে প্রতিনিয়ত এমন অনেক তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে, যা সাধারণত ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকার কথা। সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষক র‍্যাচেল টোব্যাক এমনও তথ্য শনাক্ত করেছেন, যেখানে ব্যবহারকারীর বাসার ঠিকানা ও আদালতের স্পর্শকাতর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। শুধু লিখিত বার্তাই নয়, অ্যাপে শেয়ার হওয়া অডিও ক্লিপেও উঠে এসেছে বিব্রতকর প্রশ্ন।

গোপনীয়তার এ ধরনের ঘাটতির কারণে ব্যবহারকারীরা বুঝে উঠতে পারছেন না, কোন তথ্য কীভাবে শেয়ার হচ্ছে এবং তাঁদের প্রোফাইল যদি ইনস্টাগ্রামে পাবলিক থাকে, তাহলে সেই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লগইন করলে কথোপকথনগুলোও সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে প্রযুক্তি গণমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ মেটার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।

বিশ্লেষকদের মতে, এই বিভ্রান্তির জন্য মূলত মেটার ফিচার ডিজাইন দায়ী। ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত কথোপকথন ‘স্যোশাল শেয়ার’ হিসেবে প্রকাশ করার মতো সুবিধা সংযুক্ত করার চিন্তা প্রযুক্তিগতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। বিশ্লেষকদের মতে, অ্যাপের বর্তমান কাঠামোতে গোপনীয়তা রক্ষার ন্যূনতম নিশ্চয়তা না থাকায় এটি ব্যবহারকারীদের জন্য একটি ডিজিটাল ঝুঁকিতে পরিণত হচ্ছে। মেটা যদি ব্যবহারকারীদের আস্থা অর্জন করতে চায়, তবে অ্যাপের ডিজাইন ও গোপনীয়তা নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা ছাড়া উপায় নেই।

অ্যাপ বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান অ্যাপফিগারসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ২৯ এপ্রিল বাজারে আসার পর এখন পর্যন্ত মেটা এআই অ্যাপটি ৬৫ লাখবার নামানো হয়েছে।

সূত্র: টেকক্রাঞ্চ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য প রক শ

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ