ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলা, এখন পর্যন্ত যা জানা গেল
Published: 15th, June 2025 GMT
ইরানের বিভিন্ন স্থানে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে হামলা চালায় ইসরায়েল। এর জবাবে শুক্রবার দিবাগত রাতে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালায় ইরান। তখন থেকে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। পাল্টাপাল্টি এসব হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত যা যা ঘটল:
ইরানি সংবাদমাধ্যমের বরাতে আল–জাজিরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে ইসরায়েলি হামলায় ইরানে কমপক্ষে ৮০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৮০০ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ জনই শিশু।
ইসরায়েলের প্রথম দিনের হামলায় ইরানে পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাকে নিশানা করা হয়। হামলায় দেশটির সেনাপ্রধান ও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধানসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার নিহত হন।
ইসরায়েলের হামলায় ইরানের ৬ জন পরমাণুবিজ্ঞানীও নিহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত থেকে ইরানের চালানো হামলায় ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত ১০ জন নিহত এবং কমপক্ষে ১৪০ জন আহত হওয়ার খবর দিয়েছে সিএনএন। কিছু ভবনও বিধ্বস্ত হয়েছে। এর আগে গতকাল শনিবার ভোরে ইসরায়েলে ইরানের হামলায় তিনজন নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছিল বার্তা সংস্থা এপি। সব মিলে গত দুই দিনে ইসরায়েলে নিহত মানুষের সংখ্যা কমপক্ষে ১৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
শনিবার রাতেও ইরানের বেশ কিছু জায়গাকে হামলার নিশানা করেছে ইসরায়েল। ইরানের তেল মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েল শারান তেলের ডিপো এবং তেহরানের একটি জ্বালানি ট্যাংক লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তবে দুই জায়গাতেই পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।
এ ছাড়া দেশটির দক্ষিণে বুশেহর প্রদেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ গ্যাসক্ষেত্রে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে বলেও জানিয়েছে তেল মন্ত্রণালয়।
ইরানি গণমাধ্যম ও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, তেহরানে ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং তাদের পারমাণবিক তৎপরতা–সংক্রান্ত একটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকায় এগুলোকে হামলার নিশানা করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাতে ইরানের পশ্চিমাঞ্চলে একটি ভূগর্ভস্থ ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানোরও দাবি করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণ ও উৎক্ষেপণের জন্য এ ঘাঁটিকে ব্যবহার করা হতো।
আজ রোববার ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে পূর্বনির্ধারিত আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। তবে মধ্যস্থতাকারী দেশ ওমান জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার পর ওই আলোচনা বাতিল করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র দ ব গত র ত ইসর য় ল ত হয় ছ
এছাড়াও পড়ুন:
বিশাল ব্ল্যাকহোলে বিস্ময়কর আলোকচ্ছটার খোঁজ
প্রায় ১০ লাখ কোটি সূর্যের আলোর সমান শক্তিশালী এক ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ার বা কৃষ্ণগহ্বর আলোকচ্ছটার সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ধারণা করা হচ্ছে, এটি সবচেয়ে বড় আলোকচ্ছটা। নতুন পর্যবেক্ষণ করা ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারকে এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে বৃহৎ ও সবচেয়ে দূরবর্তী বলা হচ্ছে। এর অবস্থান পৃথিবী থেকে এক হাজার কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। আলোকচ্ছটার শক্তি প্রায় ১০ লাখ কোটি সূর্যের সমান।
একটি অতিভারী ব্ল্যাকহোল বৃহৎ কোনো নক্ষত্রকে গিলে ফেলছে বলে এই আলোকচ্ছটা তৈরি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ম্যাথিউ গ্রাহাম বলেন, ‘এই ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারটি এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে দূরবর্তী। আমাদের সূর্যের ভরের চেয়ে কমপক্ষে ৩০ গুণ বেশি ভরের একটি বিশাল নক্ষত্র অতিভারী ব্ল্যাকহোলের খুব কাছাকাছি চলে আসছে বলে এমন ফ্লেয়ার তৈরি হয়েছে। ব্ল্যাকহোল নক্ষত্রকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে বলে বিশাল পরিমাণ শক্তি নির্গত হচ্ছে।’ বিজ্ঞানী গ্রাহামের মতে, সেখানে বিশাল বিস্ফোরণের তীব্রতা ও স্থায়িত্বের কারণে এত বিশাল ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ার তৈরি হয়েছে। ব্ল্যাকহোল নিয়মিতভাবে নিকটবর্তী পদার্থকে গ্রাস করে থাকলেও এমন বিশাল মাত্রার ঘটনা অত্যন্ত বিরল। এমন বিশাল ফ্লেয়ার আগে যা দেখা গেছে, তার তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। ফ্লেয়ারটি সর্বোচ্চ শিখরে থাকার সময় এখন পর্যন্ত দেখা যেকোনো ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি উজ্জ্বল। দুটি মহাজাগতিক বস্তুর বিশাল আকারের কারণে এমনটা হচ্ছে। সূর্য থেকে কমপক্ষে ৩০ গুণ বেশি ভরের নক্ষত্রকে অতিভারী ব্ল্যাকহোল গ্রাস করেছে। ব্ল্যাকহোলের ভর সূর্যের ভরের ৫০০ মিলিয়ন গুণ বেশি বলা যায়। সাত বছরের বেশি আগে শুরু হওয়া এই বিস্ফোরণ সম্ভবত এখনো চলমান।
প্রাথমিকভাবে ২০১৮ সালে তিনটি স্থলভিত্তিক টেলিস্কোপ ব্যবহার করে জরিপের সময় ফ্লেয়ারের খোঁজ মেলে। তখন এটিকে ব্যতিক্রমী উজ্জ্বল বস্তু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ২০২৩ সালে হাওয়াইয়ের ডব্লিউ এম কেক অবজারভেটরি পর্যবেক্ষণ শুরু করে। বিজ্ঞানী গ্রাহাম বলেন, ‘এই আবিষ্কার ব্ল্যাকহোলের আচরণ সম্পর্কে নতুন তথ্য দিচ্ছে। প্রচলিত ধারণা অনুসারে মহাবিশ্বের বেশির ভাগ গ্যালাক্সির মাঝখানে একটি অতিভারী ব্ল্যাকহোল রয়েছে। এখন আমরা আরও গতিশীল পরিবেশ দেখছি। সুপারম্যাসিভ ধরনের ব্ল্যাকহোলকে অ্যাকটিভ গ্যালাকটিক নিউক্লিয়াস বলা হচ্ছে। এটিকে জে২২৪৫+৩৭৪৩ নামে নামকরণ করা হয়েছে।’
সূত্র: এনডিটিভি